স্টোকসের জার্সি বেয়ারস্টোর গায়ে, ব্রডের গায়ে অ্যান্ডারসনের—ভুলে নয়, তবে কেন?
ওভালে অ্যাশেজের শেষ টেস্টের তৃতীয় দিনের খেলা দেখতে কাল যাঁরা আগেভাগে মাঠে গিয়েছিলেন, মাঠের ভেতর ইংল্যান্ড দলকে দেখে তাঁরা ধাঁধায় পড়ে গিয়েছিলেন। মুখ একজনের, কিন্তু জার্সির পেছনে লেখা আরেকজনের নাম।
যেমন স্টুয়ার্ট ব্রডের জার্সিতে লেখা অ্যান্ডারসনের নাম। আবার জার্সি দেখে যাঁকে বেন স্টোকস মনে হলো, ঘুরতেই দেখা গেল তিনি জনি বেয়ারস্টো। এমন জার্সিবিভ্রাট দু-একজনের ক্ষেত্রে হলে ভুল বলা যায়। হয়তো অসতর্কতায় একজন আরেকজনের জার্সি পরে মাঠে নেমে পড়েছেন। কিন্তু না!
দু-একজন নয়, ইংল্যান্ডের সব খেলোয়াড়ের জার্সিই উল্টাপাল্টা। মঈন আলীর গায়ে ক্রিস ওকসের জার্সি, স্টোকসের গায়ে বেয়ারস্টোর আর অ্যান্ডারসনের গায়ে ব্রডের। যাঁরা এই খেলোয়াড়দের চেনেন, তাঁদের চোখে সহজেই ধরা পড়েছে ব্যাপারটা।
কিন্তু একধরনের ব্যক্তিদের কাছে স্টোকস আর বেয়ারস্টো এবং ব্রড আর অ্যান্ডারসনের মধ্যে পার্থক্য করতে কষ্ট হওয়ার কথা।
তাঁরা স্মৃতিশক্তির দুর্বলতায় আক্রান্ত ব্যক্তি। চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় যা স্মৃতিভ্রংশ (ডিমেনশিয়া)। এটি এমন রোগ, যার ফলে আক্রান্ত ব্যক্তি কিছু মনে রাখতে পারেন না, একটু আগে চেনাও হঠাৎ অচেনা হয়ে যায়।
কাল ওভাল টেস্টের তৃতীয় দিনের খেলা শুরুর আগে ইংল্যান্ডের ক্রিকেটাররা জার্সি অদল-বদল করে মাঠে নেমেছিলেনই এই স্মৃতিভ্রংশ রোগে আক্রান্তদের কথা স্মরণ করিয়ে দিতে।
ইংল্যান্ড দলের সহকারী কোচ মার্কাস ট্রেসকোথিক জানান, আলঝেইমারস সোসাইটির সঙ্গে ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ডের (ইসিবি) যৌথ উদ্যোগ ছিল এটি, ‘আমরা এখানে স্মৃতিভ্রংশ নিয়ে মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরি ও তহবিল সংগ্রহের চেষ্টায় এই কার্যক্রমে অংশ নিয়েছি। যত বেশি অর্থ জোগাড় ও সচেতনতা তৈরি হবে, তত বেশি স্মৃতিভ্রংশ নিয়ে গবেষণা হবে।’
যুক্তরাজ্যে স্মৃতিভ্রংশ রোগে আক্রান্তদের একজন ট্রেসকোথিকের বাবা মার্টিন। ইংল্যান্ডের সাবেক এই ওপেনার রোগটির বিষয়ে প্রচার-প্রচারণায় জোর দিয়েছেন, ‘আমরা দেখেছি নতুন চিকিৎসা এবং বাজারে নতুন ওষুধ এসেছে। এই রোগের ক্ষেত্রে যা বড় ভূমিকা রাখতে পারবে। আশা করি, আমাদের আজকের এই উদ্যোগ মানুষকে স্মৃতিভ্রংশ নিয়ে বুঝতে সাহায্য করবে।’