সাকিব-মাহমুদউল্লাহকে যে ‘উপহার’ দিতে চান নাজমুল
এক পাশে সাকিব আল হাসান, অন্য পাশে মাহমুদউল্লাহ। মাঝখানে নাজমুল হোসেন। মিরপুরে আজ বিশ্বকাপের অফিশিয়াল ফটোসেশনের আসনবিন্যাসের এই খণ্ডাংশে অধিনায়কের দুই পাশে যাঁরা বসলেন, বসার কথা আসলে তাঁদেরই।
যুক্তরাষ্ট্র ও ওয়েস্ট ইন্ডিজে হতে যাওয়া এবারের বিশ্বকাপে সাকিব ও মাহমুদউল্লাহর পরিচয় অনেক। প্রথমত, তাঁরা দুজন বাংলাদেশ দলের সবচেয়ে অভিজ্ঞ ক্রিকেটার। তাঁদের ওপর অনেক নির্ভরতা থাকবে দলের। দুজনই আবার বাংলাদেশ দলের সাবেক টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক।
সাকিব তো অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিত ২০২২ সালের সর্বশেষ বিশ্বকাপেই বাংলাদেশ দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তার আগে ২০২১ সালে ওমান ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে অধিনায়ক ছিলেন মাহমুদউল্লাহ। এ দুজনের মধ্যে আরেকটা সম্ভাব্য মিল, হয়তো এটাই হতে যাচ্ছে তাঁদের শেষ বিশ্বকাপ।
নাজমুল অধিনায়ক হিসেবে নতুন; সাকিব, মাহমুদউল্লাহ, তাসকিন আহমেদদের বাদ দিলে তাঁর নেতৃত্বে এবারের বিশ্বকাপ দলটাও বেশ তরুণ। এমন একটা দলে নাজমুলের সবচেয়ে বড় ভরসার নাম হবেন সাকিব আর মাহমুদউল্লাহ; সেটি মুখে না বললেও চলে।
আজ রাতে বিশ্বকাপের বিমান ধরার আগে শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে দুপুরের ওই ফটোসেশন এবং এরপরই হওয়া সংবাদ সম্মেলনেও নাজমুল তাঁর দুই অভিজ্ঞতম সতীর্থ নিয়ে খুব বেশি মুখর হলেন না। সেটার প্রয়োজনও পড়েনি আসলে। শব্দচয়নে যত্নবান নাজমুল বেশ অল্প কথাতেই বুঝিয়ে দিয়েছেন, সাকিব আর মাহমুদউল্লাহর কতটা প্রভাব তিনি আশা করেন বিশ্বকাপের দলে।
এ দুজনের কাছে বিশ্বকাপে বিশেষ কোনো প্রত্যাশা আছে কি না, সংবাদ সম্মেলনে এমন প্রশ্নে নাজমুল বললেন, ‘সাকিব ভাই, রিয়াদ ভাইয়ের (মাহমুদউল্লাহ) কাছে বাড়তি কিছু চাই না। ওনারা যেভাবে পারফর্ম করছেন, তাঁদের যাঁর যে ভূমিকাটা আছে, সেটা যদি ওনারা করতে পারেন, তাহলেই দল অনেক উপকৃত হবে।’
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এই দুজনের কাছে অধিনায়কের বিশেষ চাওয়া বলতে গেলে একটাই—সাকিব, মাহমুদউল্লাহ তাঁদের দীর্ঘ অভিজ্ঞতা দিয়ে দলটাকে সমৃদ্ধ করুন। ‘আমি চাইব ওনাদের যে অভিজ্ঞতা আছে, সেটা তাঁরা দলের প্রত্যেক খেলোয়াড়ের মধ্যে ছড়িয়ে দিন। আমাদের দলের যে ছোট ছোট জায়গাগুলোতে উন্নতির দরকার আছে, তাহলেই সেগুলোতে আমরা খুব ভালো করতে পারব’—বলেছেন নাজমুল
ভবিষ্যৎ যদিও কেউই বলতে পারে না, তবে আপাতদৃষ্টে মনে হচ্ছে, এটাই হতে পারে সাকিব ও মাহমুদউল্লাহর শেষ বিশ্বকাপ। ২০২৫ সালে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির পর আর না–ও খেলতে পারেন বলে সাকিব তো সে ইঙ্গিত দিয়েও রেখেছেন।
তো সম্ভাব্য শেষ বিশ্বকাপে দুই অগ্রজকেই–বা কী দিতে চাইবে বাংলাদেশ দল? নাজমুল যদিও শুরুতে বললেন, ‘জানি না এটাই তাঁদের শেষ বিশ্বকাপ কি না। এটা একটা ধারণা।’ সঙ্গে কিন্তু যোগ করেছেন, সাকিব-মাহমুদউল্লাহর জন্য হলেও তাঁরা চাইবেন বিশ্বকাপটাকে রাঙাতে, ‘আমরা যারা আছি, অপেক্ষাকৃত তরুণ, আমরা অবশ্যই চাইব, ওনারা এত লম্বা সময় ধরে খেলছেন, তাঁদের একটা ভালো স্মৃতি দিতে। ভালো একটা বিশ্বকাপ তাঁদের আমরা উপহার দিলাম, এটা অবশ্যই আমাদের দায়িত্ব।’