কোচিং আর অনেক গলফ—ক্রিকেট ছাড়ার পর যা করতে চান স্টোকস
এক সংস্করণ থেকে অবসরে গিয়েছিলেন আগেই। তবে বিশ্বকাপ সামনে রেখে বেন স্টোকস ওয়ানডেতে ফিরে এসেছেন আবার। এর বাইরে টেস্ট অধিনায়কত্ব আছে, আইপিএলের মতো ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ আছে। আর আছে চোট। এ সময়ে বিশ্বের অন্যতম প্রভাববিস্তারকারী ক্রিকেটারকেও তাই ভাবতে হয় ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে। ক্রিকেট ছাড়ার পর কী করতে চান, স্টোকস বলেছেন সেটিই।
আঙুলের চোট আপাতত আর সমস্যা করছে না, তবে বেশ কিছুদিন ধরেই স্টোকসকে ভোগাচ্ছে হাঁটুর চোট। সর্বশেষ অ্যাশেজেও সেভাবে বোলিং করতে পারেননি। বিশ্বকাপে তো খেলবেন বিশেষজ্ঞ ব্যাটসম্যান হিসেবেই। এ টুর্নামেন্টে না খেললে এ সময়ে হাঁটুর পরিচর্যা নিয়ে ব্যস্ত থাকার কথা ছিল তাঁর। আপাতত সেটি হচ্ছে না। তবে সামনে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে হবে, স্টোকস সেটি জানেন। এ ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট কোনো পরিকল্পনা করেননি এখনো। ব্রিটিশ পত্রিকা দ্য টাইমসের সঙ্গে কথা বলার সময় এ নিয়ে ইংল্যান্ডের ইতিহাসের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার বলেছেন, ‘বয়স হচ্ছে আসলে। তবে ঠিক হয়ে যাবে।’
৩২ বছর বয়সী স্টোকসের অবশ্য নিজের জীবন নিয়ে পরিকল্পনা আছে। তাঁর ভাষায়, ‘আমি ক্যারিয়ারের পরের দিকের ধাপে আছি, ফলে কিছু ব্যাপারে অবশ্যই ভাবতে হবে। সব বন্ধ করে দিতে পারব না, কারণ, কিছু না কিছু করতেই হবে আমার।’ এরপর যোগ করেছেন, ‘যখন খেলা শেষ করব, নিজেকে ক্রিকেটের সঙ্গে কোনো না কোনোভাবে সম্পৃক্ত থাকছি না, এমনটা দেখি না আমি। কোচিংয়ে ঢুকতে পারলে ভালো লাগবে। আর যতটা পারি গলফ খেলব।’
ব্রেন্ডন ম্যাককালামের কোচিংয়ে ও স্টোকসের অধিনায়কত্বে ইতিবাচক, আক্রমণাত্মক ঘরানার টেস্ট ক্রিকেট খেলছে ইংল্যান্ড। স্টোকসের মতো একজনের ভবিষ্যতে কোচিংয়ে আসার পরিকল্পনা স্বাভাবিকভাবেই ক্রিকেট-অনুসারীদের রোমাঞ্চিত করার কথা।
স্টোকস অবশ্য এ ক্ষেত্রে ভাবছেন আর দশজন অ্যাথলেটের মতো করেই, ‘যখন আপনি খেলার সময়ের মতো করে আয় করতে পারবেন না, তখন আপনার খেয়াল রাখতে হবে যে আপনি টাকাপয়সার যত্ন নিচ্ছেন। সেটি আপনাকে টিকিয়ে রাখছে। স্ত্রী-সন্তান আছে। যখন সন্তানেরা বড় হবে, তাদেরও সন্তান হবে…শুধুই ছাপ রেখে যাওয়ার ব্যাপার তো নয়। এটি নিয়ে আপনাকে চিন্তা করতেই হবে। যতক্ষণ প্রাসঙ্গিক থাকছি, ততক্ষণ যাতে যতটা পারি করে যাই। যাতে ৬৫ বছর বয়সে যখন হুইলচেয়ারে থাকব, আমার ও আমার পরিবারের সহায়তা করে।’
এরই মধ্যে কয়েকজন সতীর্থ ও সমসাময়িক ফুটবলারদের নিয়ে ‘ফোরকাস্ট (৪কাস্ট)’ নামে একটা ব্যবসায় উদ্যোগও শুরু করেছেন স্টোকস। তবে শুধু ভবিষ্যৎ নয়, স্টোকসের বর্তমান ঘিরেও ভাবনা যে সুস্পষ্ট, সেটি আলাদা করে না বললেও চলে। অনেক চাপের মুহূর্তে, মাঠের বাইরের বেশ কয়েকটি ঘটনার বেশ বড় প্রভাব থাকার পরও স্টোকস নিয়মিত পারফর্ম করে যাচ্ছেন। এ ক্ষেত্রে তাঁকে সহায়তা করে তাঁর একটি নীতি, ‘বন্ধু ও পরিবারের মতো যারা আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ, আমি শুধু তাদের মতকেই গুরুত্ব দিই। তাদের কথাতেই কিছু যায় আসে। অনেকেরই আমার ব্যাপারে মত থাকতেই পারে, কিন্তু আপনার কাছে যদি আমার ফোন নম্বর না থাকে, তাহলে আমি আপনার কথা শুনব না।’