২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

টেন্ডুলকারের কাছে যা ছিল ‘ফিকশন’, সেটাই করে দেখালেন অ্যান্ডারসন

৭০০ উইকেট পাওয়ার পর জেমস অ্যান্ডারসনএএফপি

আজ থেকে প্রায় ২১ বছর আগের কথা। অস্ট্রেলিয়াতে জেমস অ্যান্ডারসনকে প্রথম দেখেছিলেন শচীন টেন্ডুলকার। মেলবোর্নে সে বছরের ডিসেম্বরে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ওয়ানডে ম্যাচ দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আবির্ভাব অ্যান্ডারসন নামের তরুণ এক ফাস্ট বোলারের। ২০ বছর বয়সী তরুণ সেই ফাস্ট বোলারকে দেখে মুগ্ধ হয়েছিলেন কিংবদন্তি টেন্ডুলকার। ২১ বছর পরে এসে আজ টেন্ডুলকারের কাছে মনে হচ্ছে, কল্পকথাকে হার মানানো এক কীর্তিই গড়েছেন অ্যান্ডারসন!

ইংল্যান্ডের তরুণ সেই ফাস্ট বোলারের টেস্ট অভিষেক হয় ২০০৩ সালে, লর্ডসে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। অ্যান্ডারসনের অভিষেকের ৩ বছর পর টেস্ট ক্রিকেটে ৭০০ উইকেটের মাইলফলক স্পর্শ করেন কিংবদন্তি লেগ স্পিনার শেন ওয়ার্ন। পরের বছর একই কীর্তি গড়েন আরেক কিংবদন্তি, অফ স্পিনার মুত্তিয়া মুরালিধরন। দুজনের কীর্তিই দেখেছেন অ্যান্ডারসন ও টেন্ডুলকার। এরপর তো ২০১০ সালে ক্যারিয়ারের শেষ টেস্টে মুরালিধরন স্পর্শ করেন ৮০০ উইকেটের মাইলফলকও।

মুরালিধরন যখন ৮০০ উইকেটের মাইলফলক স্পর্শ করেন, পেসারদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি টেস্ট উইকেট পাওয়ার রেকর্ডটি ছিল গ্লেন ম্যাকগ্রার অধিকারে। তারও বছর তিনেক আগে টেস্ট ক্রিকেটকে বিদায় বলে দেওয়া ম্যাকগ্রার উইকেট ৫৬৩টি। সেই সময় কি অ্যান্ডারসন বা টেন্ডুলকারের কেউ ভাবতে পেরেছিলেন যে একজন পেসার টেস্টে ৭০০ উইকেট পেতে পারেন!

আরও পড়ুন
ভারতীয় কিংবদন্তি শচীন টেন্ডুলকার
এএফপি

টেন্ডুলকার যে ভাবতে পারেননি, সেটা আজ ধর্মশালায় অ্যান্ডারসন ৭০০ উইকেটের মাইলফলক ছোঁয়ার পর ভারতের সাবেক ব্যাটসম্যান তাঁর প্রতিক্রিয়াতেই বলেছেন। কোনো পেসার এমনটা করবেন, প্রায় ২২ বছর ধরে টানা শীর্ষ পর্যায়ের পারফর্ম করে যাবেন—অ্যান্ডারসন এটা করে দেখানোর আগে টেন্ডুলকারের কাছে এটা কল্পকাহিনি বলেই মনে হতো।

অ্যান্ডারসনের এই কীর্তিতে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে টেন্ডুলকার এক্সে লিখেছেন, ‘অ্যান্ডারসনকে আমি প্রথম খেলতে দেখি ২০০২ সালে অস্ট্রেলিয়ায়। বলের ওপর তার নিয়ন্ত্রণটা বিশেষই মনে হয়েছিল। নাসের হুসেইন সেই সময় তাকে নিয়ে অনেক উঁচু ধারণাই করেছিল। আর আজ আমি নিশ্চিত যে সে বলবে, “আমি তো আগেই বলেছিলাম।”’

টেন্ডুলকার এরপর যোগ করেন, ‘৭০০ টেস্ট উইকেট চোখধাঁধানো এক অর্জন। একজন ফাস্ট বোলার ২২ বছর ধরে খেলছে এবং ধারাবাহিকভাবে পারফর্ম করে ৭০০ উইকেট নিতে পেরেছে; অ্যান্ডারসন করে দেখানোর আগে আমার কাছে এটাকে কল্পকথাই মনে হতো। এককথায় অসাধারণ।’

আরও পড়ুন
৭০০ উইকেটের মাইলফলকে পৌঁছানোর পর সতীর্থদের অভিনন্দনে সিক্ত অ্যান্ডারসন
এএফপি

৪১ বছর বয়সী অ্যান্ডারসন যেমনটা বলে আসছেন যে টেস্ট ক্রিকেটটা এখনো তিনি উপভোগ করছেন, এটা আর দু-তিন বছর করে যেতে পারলে একটা রেকর্ড থেকে হয়তো শচীন টেন্ডুলকারকেও মুছে দিতে পারবেন! এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি টেস্ট (২০০) খেলা ক্রিকেটার টেন্ডুলকার। দুই দশকের ক্যারিয়ারে অ্যান্ডারসন খেলেছেন ১৮৭ টেস্ট। আর তো মাত্র ১৩ টেস্টই বাকি!

টেন্ডুলকারের রেকর্ড ছাড়ালেও মুরালিধরনের ৮০০ টেস্ট উইকেটের রেকর্ড কি ভাঙতে পারবেন অ্যান্ডারসন? আরও ১০১টি উইকেট লাগবে তাঁর। এই চিন্তাকে একটু বাড়াবাড়িই মনে হতে পারে অনেকের। কিন্তু ম্যাচপ্রতি অ্যান্ডারসনের উইকেট ৩.৭৪টি। এই হিসেবে ১০১টি উইকেট পেতে তাঁকে ২৭-২৮টির মতো টেস্ট খেলতে হবে। সে ক্ষেত্রে এই ফিটনেস এবং ধারাবাহিকতা ধরে রেখে অ্যান্ডারসনকে হয়তো আরও বছর আড়াই-তিনেক খেলতে হবে।

এটা কি সম্ভব? অ্যান্ডারসনের ৪৯ টেস্টের অধিনায়ক অ্যালিস্টার কুকের কথা শুনলে মনে হবে হলেও হতে পারে, ‘তার আরও ভালো করা এবং ইংল্যান্ডকে জয় এনে দেওয়ার ক্ষুধাটা অবিশ্বাস্য। সে শারীরিক যে চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করে প্রায় ১৯০ টেস্ট খেলে ফেলেছে, এটা দারুণ ব্যাপার। ফাস্ট বোলার হিসেবে কেউ ৭০০ উইকেটের বেশি পায়নি। সে মনে রাখার মতো একজন এবং এখনো খেলছে।’

আরও পড়ুন