পাকিস্তানকে হারিয়ে থাইল্যান্ডের ইতিহাস
দৌড় দেওয়ার প্রস্তুতিটা আগেই নিয়ে রেখেছিলেন থাইল্যান্ড নারী দলের ক্রিকেটাররা। পাকিস্তান নারী দলের পেসার ডায়না বেগের বলটি নাট্টায়া বোচান্থাম মিড উইকেটে ঠেলে দিতেই বাউন্ডারি লাইন থেকে একঝাঁক থাই মেয়ের বিজয়মিছিল শুরু হয়ে যায়।
সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামের ১ নম্বর মাঠের বড় পর্দায় তখন লেখাটা ওঠে, ‘থাই মেয়েরা ৪ উইকেটে জয়ী।’ সেটাও ইনিংসের ১ বল বাকি থাকতে।
নারী এশিয়া কাপে থাই মেয়েদের রোমাঞ্চকর এ জয়ের পর পাকিস্তান দলের অধিনায়ক বিসমাহ মারুফ সবার আগে থাই মেয়েদের জটলায় এসে অভিনন্দন জানান।
পেশাদারত্বের ওই ছোট্ট মুহূর্তটার পরই পরাজয়ের হতাশায় অন্ধকার নেমে আসে বিসমাহর চেহারায়।
হতাশ হওয়াই স্বাভাবিক। থাইল্যান্ডের বিপক্ষে কাগুজে সম্ভাবনায় পাকিস্তানেরই এগিয়ে থাকার কথা। কিন্তু আজ ব্যাটিং-বোলিংয়ে নিজেদের সেরা ছন্দে ছিল না বিসমাহর দল।
আগে ব্যাট করে থাইল্যান্ডের বিপক্ষে ৫ উইকেটে ১১৬ রান করেছে পাকিস্তান। ওপেনার সিদরা আমিন ছাড়া বাকি ব্যাটাররা বড় রান নিতে পারেননি থাই বোলারদের বিপক্ষে।
এরপর থাই নারী দলের সেরা ব্যাটার নাত্তাখান চান্থামের ব্যাট জ্বলে ওঠে। উদ্বোধনে নেমে ৫১ বলে ৬১ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলেছেন তিনি। একাই পাকিস্তানি বোলিংয়ের বিপক্ষে রান তাড়ার চাপ সামলেছেন।
বাকি ব্যাটারদের ব্যর্থতার পরও ইনিংসের ১৯তম ওভার পর্যন্ত টিকে ছিলেন। দলকে ১০৫ রান পর্যন্ত পৌঁছে দিয়ে নিদা দারের বলে ছক্কা মারতে গিয়ে মিড উইকেটে ক্যাচ আউট হন চান্থাম।
শেষ ৮ বলে দরকার ছিল ১২ রান। ক্রিজে ছিলেন এই এশিয়া কাপের আগেই বোলিং অ্যাকশন নিষিদ্ধ হওয়া অফ স্পিনিং অলরাউন্ডার রোসেনান কোনাহ ও বোচান্থাম।
দুজনই থাইল্যান্ডকে পৌঁছে দেন ঐতিহাসিক জয়ের খুব কাছে। শেষ ওভারের দ্বিতীয় বলে কোনাহর ব্যাট থেকে আসা একটি চার সিলেটকে থাই উৎসবের মঞ্চ বানিয়ে দেয়। পরের ৩ বলে দৌড়ে আরও ৪ রান নিয়েই শুরু হয় সে উৎসব।
ইনিংসের ১ বল বাকি থাকতেই পাকিস্তানের বিপক্ষে থাইল্যান্ডের ৪ উইকেটের জয়ে উন্মুক্ত হয়ে গেছে এশিয়া কাপের সেমিফাইনালের দুয়ার। আর সারা বিশ্বে পৌঁছে গেছে থাই মেয়েদের উত্থানের বার্তা। ২০২০ সালে অস্ট্রেলিয়ায় বিশ্বকাপে জায়গা করে নেওয়া, সর্বশেষ ওয়ানডে বিশ্বকাপের বাছাইপর্বে বাংলাদেশকে হারানোর পর থাই মেয়েরা পেয়ে গেল গর্ব করার আরও একটি জয়।