আইপিএলের হাজারতম ম্যাচটি স্মরণীয় করে রাখল মুম্বাই ইন্ডিয়ানস। ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে রোহিত শর্মার দল রাজস্থান রয়্যালয়ের ২১২ রানের বিরাট সংগ্রহ মুম্বাই পেরিয়ে গেছে ৬ উইকেট হাতে রেখেই। শেষ ওভারে টিম ডেভিডের টানা তিন ছক্কাতেই জয় নিশ্চিত তাদের। ১৪ বলে ৪৫ রান তাঁর। মেরেছেন ২টি চার আর ৫টি ছক্কা। ডেভিডের পাশাপাশি ক্যামেরন গ্রিনের ২৬ বলে ৪৪ আর সূর্য কুমার যাদবের ২৯ বলে ৫৫। বিকেলে চেন্নাই সুপারকিংস আর পাঞ্জাব কিংসের সেই শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচের পর ক্রিকেটপ্রেমীদের আইপিএল উপহার দিল আরও একটি রোমাঞ্চ।
টস জিতে প্রথমে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন রাজস্থানের অধিনায়ক সঞ্জু স্যামসন। ভাগ্যিস যশস্বী জয়সওয়াল নামের একজন ছিলেন রাজস্থান দলে। নয়তো অধিনায়কের শুরুতে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্তটাই ভেস্তে যেত। এবারের আইপিএলে তৃতীয় সেঞ্চুরিটি পেলেন রাজস্থানের যশস্বী জয়সওয়াল। মুম্বাইয়েরই খেলোয়াড় তিনি। ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়াম তাঁর ঘরের মাঠই। সেই মাঠেই কী দুর্দান্ত ইনিংসটিই না খেললেন এই তরুণ। এবারের আইপিএলে প্রথম দুই সেঞ্চুরি হ্যারি ব্রুক ও ভেঙ্কটেশ আইয়ারের। ৬২ বলে ১২৪ রান জয়সওয়ালের। দুর্দান্ত এই ইনিংসে চার-ছক্কার মেলা বসিয়েছিলেন তিনি। মেরেছেন ১৬টি চার ও ৮টি ছক্কা।
রাজস্থানের ২১২ রানের ইনিংসটি জয়সওয়ালের ব্যাটেই দাঁড়িয়ে। দলের দুই শীর্ষ ব্যাটসম্যান জস বাটলার আর অধিনায়ক সঞ্জু স্যামসনের ব্যাট আজ সেভাবে কথা বলেনি। রাজস্থানের ইনিংসেই আর কোনো ব্যাটসম্যানের বড় সংগ্রহ নেই। জয়সওয়াল যেন একাই ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে দাঁড়িয়ে লড়েছেন রোহিত শর্মার বোলারদের বিপক্ষে।
আজ মুম্বাইকে হারাতে পারলেই আইপিএলের পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে জায়গা করে নিতে পারত রাজস্থান। ভিতটা গড়াই ছিল। কিন্তু মুম্বাই ব্যাটসম্যানদের সামনে রাজস্থানের বোলারদের আগাগোড়াই এলোমেলো মনে হলো। যদিও মুম্বাইয়ের রান তাড়ার শুরুটা একেবারেই ভালো হয়নি। ৩ রান করে আউট হন অধিনায়ক রোহিত শর্মা। তবে ঈশান কিষান ক্যামেরন গ্রিনের সঙ্গে জুটি বেঁধে পাওয়ার প্লে কাজে লাগান। রান তাড়া করতে থাকেন আত্মবিশ্বাস নিয়েই। তবে রবিচন্দ্রন অশ্বিনের বলে দুজনই ফেরেন। ঈশান ফেরেন ২৩ বলে ২৮ রানে (৪টি চার) আর ২৬ বলে ৪৪ (৪টি চার ও ২টি ছক্কা) করে ফেরেন গ্রিন। দ্রুত ২ সেট ব্যাটসম্যানকে আউট করে রাজস্থান খেলায় ফেরার ইঙ্গিত দিয়েছিল। কিন্তু সূর্যকুমার যাদব জ্বলে ওঠেন ঠিক এই সময়ই।
৮ বাউন্ডারি আর ২ ছক্কায় ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়াম উন্মাতাল করে দেন ৩৬০ ডিগ্রি ব্যাটসম্যান। খেলেন তাঁর কয়েকটি ট্রেডমার্ক শট। ২৯ বলে ৫৫ রান করে সূর্য ফেরেন ট্রেন্ট বোল্টের বলে সন্দীপ শর্মার হাতে ক্যাচ হয়ে। ক্যাচটি ছিল দুর্দান্ত। মাত্র ২৪ বলে ফিফটি পূরণ করেছিলেন তিনি।
শেষ ৬ ওভারে মুম্বাইয়ের জয়ের জন্য দরকার ছিল ৭২ রান। কিন্তু সূর্য ফেরার পর আশার বাতি প্রায় নিভে যেতে বসেছিল মুম্বাইয়ের। তবে রানের চাকা ধীর হতে দেননি টিম ডেভিড ও তিলক ভার্মা। অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটার ডেভিড শট খেলছিলেন ইনিংসের শুরু থেকেই। মাত্র ১৪ বলে তিনি করেছেন ৪৫ রান। শেষ ওভারে জয়ের জন্য মুম্বাইয়ের প্রয়োজন ছিল ১৭ রান। হোল্ডারের প্রথম তিন বলেই তিন ছক্কায় খেলা শেষ করে দেন ডেভিড। তাঁর স্ট্রাইক রেট ৩২১.৪২!