অস্ট্রেলিয়া–ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ‘অচেনা’ বার্টলেটে আটকা ক্যারিবীয়রা
আর একটা ওভার বোলিং করার সুযোগ পেলে হয়তো সুখবর জানানো ব্যক্তির রেকর্ডটাই ভেঙে ফেলতেন জাভিয়ের বার্টলেট।
দিন দশেক আগে বার্টলেটকে অস্ট্রেলিয়া জাতীয় দলে ডাক পাওয়ার খবরটা দিয়েছিলেন নির্বাচক টনি ডডমেইড। তিন দশকের বেশি সময় আগে সর্বশেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলা ডডমেইডের একটি রেকর্ড এখনো অক্ষত। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ওয়ানডে অভিষেকে সেরা বোলিং (৫/২১) তাঁর। আজ ওয়ানডে অভিষেকে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে রেকর্ডটা হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছিলেন বার্টলেট। ৯ ওভার বল করে ১৭ রানে নিয়েছেন ৪ উইকেট।
রেকর্ড গড়া না হলেও অভিষিক্ত বার্টলেটের এই বোলিংই অস্ট্রেলিয়াকে ম্যাচ জয়ের পথ করে দিয়েছে। মেলবোর্নে তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে অস্ট্রেলিয়া জিতেছে ৮ উইকেটের বড় ব্যবধানে।
টসে হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে ৪৮.৪ ওভারে ২৩১ রান করে অলআউট হয়ে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তাড়া করতে নেমে প্রথম ওভারে অস্ট্রেলিয়ান ওপেনার ট্রাভিস হেড ফিরে গেলেও পরের তিন ব্যাটসম্যানই খেলেছেন বড় ইনিংস। এর মধ্যে ৪৩ বলে ৬৫ রানের ইনিংস খেলে রানের গতি বাড়িয়ে দিয়ে যান জশ ইংলিস। আর তৃতীয় উইকেটে ১৪৯ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়ে জয় নিশ্চিত করেন স্টিভ স্মিথ ও ক্যামেরন গ্রিন। প্যাট কামিন্সের অবর্তমানে অধিনায়কত্ব করা স্মিথ অপরাজিত থাকেন ৭৯ বলে ৭৯ রানে। আর গ্রিন মাঠ ছাড়েন ১০৪ বলে ৭৭ রান নিয়ে। অস্ট্রেলিয়া ম্যাচ জিতে নেয় ৬৯ বল হাতে রেখে দিয়েই।
এর আগে অস্ট্রেলিয়ার বোলাররাই মূল কাজটি করে দিয়ে যান। টসে জিতে স্মিথ বেছে নেন বোলিং, শুরুতেই বল তুলে দেন দুই অভিষিক্ত ল্যান্স মরিস ও বার্টলেটের হাতে। ১৯৯৭ সালে গ্যাবায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে অ্যান্ডি বিকেল ও অ্যান্থনি স্টুয়ার্টের পর ঘরের মাঠে দুই অভিষিক্ত দিয়ে বোলিং শুরু এই প্রথম।
২৫ বছর বয়সী মরিস অবশ্য অভিষেক রাঙাতে পারেননি। ১০ ওভার বল করে ২টি মেডেন নিলেও ৫৯ রান দিয়ে উইকেটশূন্য। তবে অন্য প্রান্তে বার্টলেট ছিলেন দারুণ ছন্দে। নিজের তৃতীয় বলেই বোল্ড করেন জাস্টিন গ্রিভসকে। পরের ওভারে ফেরান আরেক ওপেনার অ্যালিক অ্যাথানেজকেও। নিজের পঞ্চম ওভারের শেষ বলে ক্যারিবীয় অধিনায়ক শেই হোপকেও তুলে নেওয়ার পর বার্টলেটের বোলিং ফিগার দাঁড়ায় ৫-১-৮-৩।
‘অচেনা’ বার্টলেটের তোপে ৩৭ রানে ৩ উইকেট হারানো ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৫৯ রানে হারায় চতুর্থ উইকেট। এরপর রোস্টন চেজকে নিয়ে কিসি কার্টি দলকে টেনে তোলেন। দুজনের ১১০ রানের পঞ্চম উইকেট জুটি থামে অ্যাডাম জাম্পার বলে চেজ বোল্ড হলে (৬৭ বলে ৫৯)। শতকের সম্ভাবনা জাগানো কার্টির আউট অবশ্য দুর্ভাগ্যজনক।
হেইডেন ওয়ালশের রানের ডাকে সাড়া দিতে গিয়ে শন অ্যাবোটের সরাসরি থ্রোয়ে রানআউট হন এই ডানহাতি। ৬ চার ২ ছয়ে গড়া ১০৮ বলের ইনিংসটি থামে ৮৮ রানে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ শেষ দিকে ৩৮ রানে ৫ উইকেট হারালে ৪৯তম ওভারেই ২৩১-এ আটকে যায় দলটি। বার্টলেট ইনিংস শেষ করেন ৯ ওভারে ৪ উইকেট নিয়ে।
অস্ট্রেলিয়ার ওয়ানডে অভিষেকে দ্বিতীয় সেরা বোলিং এটি। ১৯৮৮ সালে পার্থে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ডডমেইডের ২১ রানে ৫ উইকেট এখনো সেরা।
তবে ওয়ার্ল্ড সিরিজ কাপের সেই ম্যাচে ডডমেইড ম্যাচসেরা হতে না পারলেও বার্টলেট ঠিকই পেয়েছেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ৪৮.৪ ওভারে ২৩১ (অ্যাথানেজ ৫, গ্রিভস ১, কার্টি ৮৮, হোপ ১২, হজ ১১, চেজ ৫৯, ওয়ালশ ২০, শেফার্ড ০, ফোর্ড ১৯, মোতি ৩, থমাস ২*; মরিস ০/৫৯, বার্টলেট ৪/১৭, অ্যাবোট ২/৪২, গ্রিন ২/৪০, জাম্পা ১/৫৬, শর্ট ০/১২)।
অস্ট্রেলিয়া: ৩৮.৩ ওভারে ২৩২/২ (হেড ৪, ইংলিস ৬৫, গ্রিন ৭৭*, স্মিথ ৭৯*; ফোর্ড ১/৩৭, থমাস ০/৪০, মোতি ১/৫৮, শেফার্ড ০/১৪, ওয়ালশ ০/৪১, চেজ ০/৩১, হজ ০/১০)।
ফল: অস্ট্রেলিয়া ৮ উইকেটে জয়ী।
ম্যাচসেরা: জাভিয়ের বার্টলেট।