সুমন খানের করা আগের দুই বলে একইভাবে আউট হয়েছেন সানজামুল ইসলাম ও মোহর শেখ। ঢাকা বিভাগের পেসারের করা বল দুবারই ব্যাটসম্যানদের ব্যাট ছুঁয়ে আশ্রয় নেয় উইকেটকিপার আশিকুর রহমানের গ্লাভসে। এ রকম দেখেই হয়তো রাজশাহীর ১১ নম্বর ব্যাটসম্যান আসাদুজ্জামান পায়েল সিদ্ধান্ত নেন আর যাই হোক ব্যাটে বল লাগাবেন না। যেই ভাবা সেই কাজ, সুমনের পরের বলে ব্যাক লিফট স্ট্যান্স নিয়ে ব্যাটটাকে আর নামালেনই না। বলটা প্যাডে আঘাত করতেই সুমনসহ ঢাকার ফিল্ডারদের তাড় স্বরে আবেদন। আম্পায়ার সেই আবেদনে সারা দিতে দেরি করেননি। তাতে আজ একসঙ্গে অনেক কিছুই হয়ে গেল বগুড়ার শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামে।
সুমন খান হ্যাটট্রিক পেলেন। রাজশাহী অলআউট ৪২ রানে। তাতে ভেঙে গেল বাংলাদেশের মাটিতে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে সর্বনিম্ন রানের রেকর্ডও। আগের রেকর্ডটা ছিল ৪৬। গত মৌসুমেই জাতীয় ক্রিকেট লিগে খুলনায় খুলনার বিপক্ষে যা করেছিল বরিশাল।
বাংলাদেশের মাটিতে রেকর্ড হলেও বাংলাদেশের কোনো দলের রেকর্ডটা এখনো অক্ষতই আছে। ২০০৩-০৪ মৌসুমে পাকিস্তান সফরে করাচিতে পাকিস্তান কাস্টমসের বিপক্ষে ৩০ রানে অলআউট হয়েছিল বাংলাদেশ ‘এ’ দল। রাজশাহীর ৪২ আছে এরপরই।
জাতীয় লিগে সর্বনিম্ন দলীয় ইনিংস
হ্যাটট্রিক করে রাজশাহীর ইনিংসের সমাপ্তি টানা সুমন দিনটা শুরুই করেছেন প্রথম ওভারে ২ উইকেট নিয়ে। পরে আরও ২ উইকেট নিয়ে রাজশাহীকে ১৭/৪ বানিয়ে দিয়েছিলেন। সব মিলিয়ে ৭.৫ ওভারে ১৮ রানে ৭ উইকেট নিয়েছেন ২৪ বছর বয়সী পেসার। জাতীয় লিগে ঢাকা বিভাগের কোনো বোলারের এটিই সেরা বোলিং। মানিকগঞ্জের ছেলে সুমন পেছনে ফেলেছেন শুভাগত হোমকে। ২০২১-২২ মৌসুমে বিকেএসপিতে খুলনার বিপক্ষে ৪৮ রানে ৭ উইকেট নিয়েছিলেন স্পিনিং অলরাউন্ডার শুভাগত।
বগুড়ার বোলারদের দিনে খুব ব্যাট হাতে খুব বেশি ভালো করতে পারেনি ঢাকাও। জিশান আলম ও রনি তালুকদারের উদ্বোধনী জুটি ৮৫ রান তুললেও ঢাকা প্রথম ইনিংসে অলআউট ১৮১ রানে। সুমনের হ্যাটট্রিকের শিকার পায়েল নিয়েছেন সর্বোচ্চ ৪ উইকেট। রাজশাহী আবার ব্যাট করতে নেমে প্রথম দিনটা শেষ করেছে ১ উইকেট ১৮ রান তুলে। দলটি এখনো পিছিয়ে ১২১ রানে।
মোহাম্মদ নাঈমের সর্বোচ্চ ইনিংস
দিনে ব্যাটসম্যানদের রাজত্ব ছিল শুধু কক্সবাজারে। একাডেমি মাঠে রংপুরের বিপক্ষে ২ উইকেটে ২৭৬ রান তুলে দিন শেষ করেছে ঢাকা মহানগর। দলটির ওপেনার মোহাম্মদ নাঈম ১৫৩ রান করে অপরাজিত থেকে শেষ করেছেন দিন। ২২২ বলে ১৬ চার ও ১ ছক্কায় প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে নিজের সর্বোচ্চ ইনিংসটাকে সাজিয়েছেন জাতীয় দলের বাইরে থাকা নাঈম। উইকেটকিপার তাহজিবুল ইসলামকে নিয়ে দ্বিতীয় উইকেটে ১৯৮ রান যোগ করেন নাঈম। তাহজিবুল ফিরেছেন ৭৩ রান করে।
সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে সিলেটের বিপক্ষে ৭ উইকেটে ২৫৮ রান তুলেছে বরিশাল। ওপেনার আবদুল মজিদ করেছেন সর্বোচ্চ ৭৮ রান। সিলেটের পেসার রেজাউর রহমান নিয়েছেন ৩ উইকেট।
পাশের একাডেমি মাঠে চট্টগ্রামের বিপক্ষে ২০৪ রানে অলআউট হয়েছে খুলনা। ওপেনার অমিত মজুমদার করেছেন সর্বোচ্চ ৭৫ রান। চট্টগ্রামের অফ স্পিনার নাঈম হাসান পেয়েছেন ৫ উইকেট। চট্টগ্রাম বিনা উইকেটে ৩১ রান তুলে শেষ করেছে দিন।