চোটের কারণে গত বছরের অনেকটা সময়ই মাঠের বাইরে থাকতে হয়েছে শাহিন শাহ আফ্রিদিকে। গত জুলাইয়ের পর থেকে পাকিস্তানের হয়ে ম্যাচ খেলতে পেরেছেন মাত্র ১৬টি, যা এ সময়ে পাকিস্তানের খেলা মোট ম্যাচের তিন ভাগের এক ভাগের কম।
হাঁটুর লিগামেন্টের চোট কাটিয়ে গত বছরে হওয়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে মাঠে ফিরেছিলেন এই বাঁহাতি ফাস্ট বোলার। তবে বিশ্বকাপ ফাইনালে আবার চোট পেয়ে ছিটকে পড়েন লম্বা সময়ের জন্য। অনেকেই মনে করেন, ফাইনালে আফ্রিদি চোট না পেলে ম্যাচের ফল ভিন্ন হতে পারত। আফ্রিদি নিজেও মনে করেন এমনটাই, গুরুত্বপূর্ণ ওই সময়ে চোট না পেলে জিততে পারত পাকিস্তান।
মেলবোর্নে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সেই ফাইনালে ইনিংসের ১৩তম ওভারে লং অফ থেকে ছুটে এসে হ্যারি ব্রুকের ক্যাচ নেওয়ার সময় চোট পান আফ্রিদি। মাঠে ফিরে ১৬তম ওভারে আবার বল করতে এলেও ওভারটা আর শেষ করতে পারেননি। আবারও উঠে যেতে হয়, আফ্রিদি সব মিলিয়ে করতে পারেন ২.১ ওভার।
সে সময় ইংল্যান্ডকে বেশ চাপে রাখলেও বোলিংয়ে তেমন বিকল্প ছিল না বাবর আজমের হাতে। আফ্রিদির ওভার শেষ করতে আসা স্পিনার ইফতিখার আহমেদের ওপর চড়াও হন বেন স্টোকস ও মঈন আলী। এতে বদলে যায় ম্যাচের ভাগ্য।
২০২১ বিশ্বকাপেও পাকিস্তানের আক্ষেপের গল্পের সঙ্গে মিশে আছে আফ্রিদির নাম। সেবার সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে শেষ ২ ওভারে ২২ রান ডিফেন্ড করতে হতো পাকিস্তানকে। আফ্রিদির করা ১৯তম ওভারের তৃতীয় বলে বড় এক সুযোগ আসে পাকিস্তানের সামনে। ডিপ মিড উইকেটে তুলে মারতে গিয়ে ক্যাচ দেন ম্যাথু ওয়েড। কিন্তু সেই ক্যাচ ফেলে দেন হাসান আলী। নতুন জীবন পেয়ে ওয়েড আর কোনো সুযোগই দেননি পাকিস্তানকে, আফ্রিদির পরের তিন বলে টানা তিন ছক্কায় বাবরদের স্বপ্ন শেষ করে দেন।
টানা দুই বিশ্বকাপে কাছে গিয়েও শিরোপা জিততে না পারা নিয়ে আক্ষেপ আছে আফ্রিদির। তবে এসব নিয়ে বেশি ভাবতে চান না তিনি। ইএসপিএনক্রিকইনফোকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, ‘দেশের হয়ে বিশ্বকাপ জেতা প্রতিটা ক্রিকেটারের স্বপ্ন। ২০২১ সালের বিশ্বকাপটা কীভাবে শেষ হয়েছিল, এখনো মনে আছে। ২০২২ বিশ্বকাপেও যদি অত গুরুত্বপূর্ণ সময়ে চোট না পড়তাম, আমরা জিততেও পারতাম।’
তবে সেসব নিয়ে বেশি ভাবার সুযোগ নেই পেশাদার ক্রিকেটারের, আফ্রিদি মনে করিয়ে দিয়েছেন সে সত্যটাও, ‘ চোট যেকোনো সময়ই আসতে পারে। তবে এসব নিয়ে বেশি ভাবলে সামনে এগোতে পারব না।’
সাম্প্রতিক সময়ে ব্যাট হাতে ধারাবাহিক জ্বলে উঠছেন এই পেসার। পিএসএলের ফাইনালে এই পেসার খেলেছিলেন ১৫ বলে ৪৪ রানের ইনিংস। তাঁর এই ইনিংসেই বড় সংগ্রহ পায় তাঁর দল লাহোর কালান্দার্স। আফ্রিদির অধিনায়কত্বে লাহোর জেতে টানা দ্বিতীয় শিরোপা।
পেসার থেকে কীভাবে একজন অলরাউন্ডার হয়ে উঠছেন, সেই রহস্যও জানিয়েছেন তিনি, ‘হ্যাঁ, শহীদ আফ্রিদির সঙ্গে কাজ করার প্রভাব তো আছেই। আমি ও লালা (শহীদ আফ্রিদি) শট অনুশীলন করেছি অনেক, কীভাবে শেষের ওভারগুলোয় বড় শট খেলতে হয়। ব্যাট সুইং নিয়েও কিছুটা কাজ করেছি। টি-টোয়েন্টিতে তাঁর মতো অভিজ্ঞ কেউ নেই। তাঁর সঙ্গে কাজ করতে পারার অভিজ্ঞতা ছিল দারুণ। অনেক কিছু শিখেছি আমি।’
নটিংহামশায়ারের হয়ে টি-টোয়েন্টি ব্লাস্টে খেলতে এখন ইংল্যান্ডে আছেন আফ্রিদি।