তাজ বেঙ্গলের হোটেলের লবিতে হোটেল কর্মীদের মধ্যে ফিসফাস, সাকিব আল হাসান আসছেন। এমনিতে এত আগ্রহ থাকত কি না, কে জানে! এখানে না থেকে উপায় নেই। কারণ সাকিবকে তো বরণ করে নিতে হবে। গত পরশু বাংলাদেশ ক্রিকেট দল মুম্বাই থেকে কলকাতায় এসে উঠেছে এই হোটেলে। সাকিব মুম্বাই থেকেই চলে গেছেন ঢাকায়। সাকিবকে তাই আলাদা করে বরণ করে নেওয়ার ব্যাপার ছিলই।
সাকিব হোটেলে ঢুকলেন হাসি মুখে। এখানে গলায় মালা পরিয়ে বরণ করিয়ে নেওয়ায় যে রীতি, কলকাতা নাইট রাইডার্সে দীর্ঘদিন খেলার কারণে সেটি তাঁর ভালোই জানা। মালাটা গলায় পরাতেও দিলেন। একটু এগোতেই তাঁর সঙ্গে দেখা মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের মসজিদের ইমামের। বাংলাদেশের খেলা দেখতে কলকাতায় এসেছেন। তাঁকে দেখেই সাকিব হাসি মুখে বললেন, 'কী হুজুর, কী খবর?' টুকটাক কথাবার্তার পর তাঁর সঙ্গে ছবিও তুললেন। ছবি তোলার আগে মজা করে নিজের গলার মালাটা খুলে সেটি পরিয়ে দিলেন হুজুরের গলায়।
লিফটের দিকে যাওয়ার পথে প্রধান কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহের সঙ্গেও দেখা হয়ে যায় সাকিবের। হাথুরুসিংহে কলকাতায় এসে দেখা দিয়েছেন নতুন রূপে। দাড়ি-টাড়ি কামিয়ে একদম ঝকঝকে মুখ। তা দেখে সাকিব একটু বিস্মিত। সেই বিস্ময় প্রকাশ করতেই হাথুরুসিংহে মুখে বোলাতে বোলাতে বললেন, ঝামেলাটা ফেলে দিয়েছি।
লিফটের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন মোস্তাফিজুর রহমানের স্ত্রী। সাকিবের সঙ্গে তাঁর কুশল বিনিময় হলো। মজা করে একটা কথাও বললেন সাকিব। যা এখানে না লেখাই ভালো বলে মনে হচ্ছে। লিফটে উঠে নিজের রুমে চলে যাওয়ার সময়ও সাকিবের মুখে হাসি লেগে ছিল।
মাঝখানে দুই দিনের ঢাকা সফর নিয়ে এত কথাবার্তার কোনো কিছুই যে তাঁকে স্পর্শ করেনি, সেটি সাকিবকে দেখেই পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছিল। সাকিব ঢাকায় গিয়েছিলেন নিজের বিকেএসপি-জীবনের কোচ নাজমূল আবেদীনের সঙ্গে নিজের ব্যাটিং নিয়ে একটু কাজ করতে।
মুম্বাই থেকে বাংলাদেশ দল কলকাতায় পৌঁছেছে গতকাল সন্ধ্যায়। সেদিন তাই অনুশীলন করার প্রশ্নই নেই। আজও ছিল ঐচ্ছিক অনুশীলন। সাত-আটজন ক্রিকেটার গিয়েছিলেন সেটিতে। আগামীকাল দুপুরে বাংলাদেশের পুরো দলের অনুশীলনে অধিনায়কও থাকছেন।
সাকিব ঢাকায় যাওয়ার পর শোনা গিয়েছিল, ঢাকায় তিন দিন অনুশীলন করে কলকাতায় আসবেন আগামীকাল সন্ধ্যায়। কিন্তু সেই পরিকল্পনা বদলে অথবা বদলাতে বাধ্য হযে সাকিব আজ সন্ধ্যায়ই ধরেছেন কলকাতার ফ্লাইট।