সূচি
দল পরিচিতি
নিউজিল্যান্ড: এবার হবে তো
লর্ডসের সেই দিনটা মনে আছে তো? ২০১৯ ওয়ানডে বিশ্বকাপের ইংল্যান্ড-নিউজিল্যান্ডের সেই অবিশ্বাস্য ফাইনাল, যেদিন সুপার ওভারে যাওয়া ম্যাচটা ইংল্যান্ড শেষ পর্যন্ত জিতেছে বাউন্ডারির হিসাবে। বিশ্বকাপের সেরা ফাইনাল তো বটেই, তর্কযোগ্যভাবে ওয়ানডে ক্রিকেট ইতিহাসেরই সেরা ম্যাচ।
সেদিন ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচ ‘টাই’, সুপার ওভার ‘টাই’—তারপরও হতাশা নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছিল নিউজিল্যান্ডকে। বিশ্বকাপ ফাইনালে হেরে যাওয়াই যথেষ্ট বেদনার আর হার যদি এমন হয়, তাহলে তো সেটি মাত্রা ছাড়িয়ে যেতে চায়। চার বছর আগে আরও একটি ওয়ানডে বিশ্বকাপের ফাইনালে পরাজয় যোগ হওয়ায় নিউজিল্যান্ডের জন্য বিশ্বকাপের অন্য নাম হয়ে যায় দুঃখ। আরও একটি ওয়ানডে বিশ্বকাপের আগে নিউজিল্যান্ড দলকে নিয়ে ঘুরেফিরে তাই একটাই প্রশ্ন, এবার হবে তো?
এবারের ওয়ানডে বিশ্বকাপে ফেবারিটের তালিকায় নিউজিল্যান্ডের নামটা নিশ্চয়ই শুরুর দিকে থাকবে না। কিউইদের সোনালি প্রজন্মের ক্রিকেটাররা এখন ক্যারিয়ারের সায়াহ্নে, কয়েকজন তো এর মধ্যেই অবসর নিয়েছেন। ব্রেন্ডন ম্যাককালাম ২০১৫ বিশ্বকাপের পরই খেলা ছাড়েন। অবসর নিয়েছেন রস টেলরও। ফর্ম হারিয়ে দলে জায়গা হারিয়েছেন মার্টিন গাপটিল। তবে নতুন গল্প লেখার প্রতিজ্ঞা নিয়ে এবারও আছেন কেইন উইলিয়ামসন, টিম সাউদি, ট্রেন্ট বোল্ট, টম ল্যাথাম, জিমি নিশামরা।
গত কয়েক বছরে নতুন কয়েকজন ক্রিকেটারকেও খুঁজে পেয়েছে নিউজিল্যান্ড। যাঁদের ওপর অনেকটাই নির্ভর করবে এবারের বিশ্বকাপে কিউইদের পারফরম্যান্স। ডেভন কনওয়ে তাঁদেরই একজন। ২৯ বছর বয়সে এসে দক্ষিণ আফ্রিকান বংশোদ্ভূত এই ক্রিকেটারের নিউজিল্যান্ডের হয়ে অভিষেক। অভিষেকের পর থেকেই তিন সংস্করণের ক্রিকেটে নিউজিল্যান্ডের অন্যতম ভরসা হয়ে উঠেছেন এই বাঁহাতি ওপেনার। একই রকম দেরিতে অভিষেক হওয়া ড্যারিল মিচেলের কথাও বলতে হচ্ছে। মিডল অর্ডারে নিউজিল্যান্ডের ব্যাটিং শক্তি বাড়ছে তাঁর উপস্থিতিতে। আর দ্রুত রান তোলার জন্য গ্লেন ফিলিপস তো আছেনই।
তবে নিউজিল্যান্ডের ব্যাটিং মানেই উইলিয়ামসন, এটা ভুলে গেলে চলবে না। হাঁটুর চোট থেকে ফিরে এসে তিনি কেমন করেন, সেটা বড় প্রশ্ন। কিন্তু উইলিয়ামসনে ভরসা করাই যায়। সে কারণেই গত চার মাস খেলার বাইরে থাকার পরও বিশ্বকাপে অধিনায়ক করা হয়েছে তাঁকেই। মাঝখানে অধিনায়কত্ব করা টম ল্যাথামকেও ভুলে গেলে চলবে না। ভারতের কন্ডিশনে তাঁর রেকর্ডও ভালো।
খেলা যেহেতু ভারতে, স্পিনাররা কেমন করেন, সেটা গুরুত্বপূর্ণ। লেগ স্পিনার ইশ সোধি তো আছেনই, দলে রাখা হয়েছে দুই বাঁহাতি স্পিনার মিচেল স্যান্টনার ও নতুন মুখ রাচিন রবীন্দ্রকে। তবে নিউজিল্যান্ড মাইকেল ব্রেসওয়েলের অভাব অনুভব করবে। অফ স্পিনের পাশাপাশি লোয়ার অর্ডারে তাঁর দ্রুত রান তোলার দক্ষতার বিকল্প নেই নিউজিল্যান্ড দলে। অফ স্পিনার প্রয়োজন হলে ফিলিপসকে ব্যবহার করা যেতে পারে, তবে তিনি অনিয়মিত বোলার।
দলটা যেহেতু নিউজিল্যান্ড, মূল শক্তির জায়গা স্বাভাবিকভাবেই পেস বোলিং। এ ক্ষেত্রে সাউদি–বোল্ট জুটির দিকেই তাকিয়ে থাকবে নিউজিল্যান্ড। ম্যাট হেনরি থাকবেন বিকল্প হিসেবে। আছেন লকি ফার্গুসনও। এই ফাস্ট বোলারের গতি ও বাউন্স মাঝের ওভারে বেশ কার্যকর। কন্ডিশন পক্ষে থাকলে নিশাম ও মিচেলও কিছু ওভার করতে পারেন।
সব মিলিয়ে নিউজিল্যান্ড দলটাকে ভারসাম্যপূর্ণই বলতে হবে। কিন্তু টানা তৃতীয় ফাইনাল? একটু কঠিন বলেই মনে হচ্ছে।...আরও