উড়ন্ত আফগানিস্তানের সামনে সাকিবের বাংলাদেশ
শ্রীলঙ্কাকে উড়িয়ে এশিয়া কাপ শুরু করেছে আফগানিস্তান, দুর্দান্ত রান রেটের কারণে সুপার ফোরে এক পা দিয়েও রেখেছে তারা। বাংলাদেশের টুর্নামেন্ট আজ শুরু হচ্ছে তাদের বিপক্ষেই। এবারের এশিয়া কাপে শারজায় এই প্রথম ম্যাচ। নতুন অধিনায়ক, টেকনিক্যাল কনসালট্যান্টের আদলে নতুন প্রধান কোচ—এশিয়া কাপের আগে আরেকবার নতুনের গান শুনিয়েছে বাংলাদেশ। সে নতুনের শুরুটা দেখা যাবে আজ?
গ্রুপ ‘বি’-তে বাংলাদেশ-আফগানিস্তান ম্যাচে প্রথম আলোর সরাসরি আয়োজনে আপনাকে স্বাগত।
আলোচনায় শারজা
অন্য দলগুলোর মতো বাংলাদেশও এত দিন অনুশীলন করেছে দুবাইয়ে। তবে প্রথম ম্যাচ খেলতে হচ্ছে শারজায়। ক্রিকেটের বিখ্যাত এ ভেন্যুর স্পিন সহায়ক উইকেট ও ছোট বাউন্ডারি আলোচনায় আছে আগে থেকেই। গতকাল ঝটিকা সফরে শারজার কন্ডিশন দেখতে গিয়েছিলেন টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ ও টেকনিক্যাল কনসালট্যান্ট শ্রীধরন শ্রীরাম।
শারজা থেকে প্রথম আলোর প্রতিনিধি মোহাম্মদ জুবাইর লিখেছেন, ‘এই মাঠের প্রেসবক্সটাও অদ্ভুত। ডানহাতি ব্যাটসম্যানের জন্য লং অফ বাউন্ডারিটা পার হলেই সাংবাদিকদের বসার ব্যবস্থা। সামনে কোনো কাচের দেয়াল নেই। সেখানে বসে খুব একটা নিরাপদ বোধ করার কথা না কারোরই। মোটামুটি টাইমিং হলেই ক্রিকেট বলটা লং অফ বাউন্ডারি ছাড়া করে বল আসতে পারে প্রেসবক্সের দিকে।’
টস
হেড কল করেছিলেন আফগান অধিনায়ক মোহাম্মদ নবী। টসে জিতে ব্যাটিং নিয়েছেন সাকিব আল হাসান। স্কোর বোর্ডের চাপে আফগানিস্তানকে রাখতে চান বলে এমন সিদ্ধান্ত তাঁর।
সাকিবের ১০০
২০০৬ সালের ২৮ নভেম্বর আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে অভিষেক বাংলাদেশের। খুলনায় জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সেই ম্যাচেই অভিষেক সাকিব আল হাসানেরও। সেই সাকিব আজ খেলতে যাচ্ছেন ১০০তম আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি। মাহমুদউল্লাহ ও মুশফিকুর রহিমের পর বাংলাদেশের তৃতীয় খেলোয়াড় হিসেবে শততম আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি খেলতে যাচ্ছেন সাকিব।
একাদশে মুশফিক, নাঈম, সাইফউদ্দিন
বাংলাদেশ দলে সাকিবের সঙ্গে ফিরেছেন মুশফিকুর রহিম ও মোহাম্মদ নাঈম। সর্বশেষ জিম্বাবুয়ে সফরে বিশ্রামে ছিলেন মুশফিক। নাঈম প্রাথমিকভাবে এশিয়া কাপের দলে না থাকলেও সুযোগ পান নুরুল হাসান ছিটকে যাওয়াতে। এনামুল হকের সঙ্গে ওপেনার হিসেবে আজ একাদশে আছেন তিনি।
চোট কাটিয়ে ফেরা অলরাউন্ডার মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনও আছেন দলে।
বাংলাদেশ একাদশ
সাকিব আল হাসান (অধিনায়ক), এনামুল হক, মুশফিকুর রহিম, আফিফ হোসেন, মোসাদ্দেক হোসেন, মাহমুদউল্লাহ, মেহেদী হাসান, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, মোহাম্মদ নাঈম, মোস্তাফিজুর রহমান, তাসকিন আহমেদ।
অপরিবর্তিত আফগানিস্তান
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচের উইনিং কম্বিনেশন ভাঙেনি আফগানিস্তান, অপরিবর্তিত দল নিয়েই নামছে তারা।
আফগানিস্তান একাদশ
রহমানউল্লাহ গুরবাজ, ইব্রাহীম জাদরান, হজরতউল্লাহ জাজাই, নাজিবুল্লাহ জাদরান, মোহাম্মদ নবী (অধিনায়ক), করিম জানাত, আজমতউল্লাহ ওমরজাই, রশিদ খান, ফজলহক ফারুকি, নভিন উল হক, মুজিব উর রহমান।
সাকিবের টসের সিদ্ধান্তের সঙ্গে একমত?
কত নম্বরে আসবেন আফিফ?
এশিয়া কাপের দল ঘোষণার পর ওপেনিং পজিশন নিয়ে আলোচনা হয়েছে, বলা হয়েছিল ‘মেকশিফট ওপেনার’-এর কথাও। এনামুলের সঙ্গে অবশ্য ওপেন করতে এসেছেন স্বীকৃত ওপেনার নাঈমই। তবে এতদিন ‘ফিনিশার’ ভূমিকায় খেলা আফিফের ব্যাটিং অর্ডার কি পরিবর্তন হবে?
ফারুকির প্রথম ওভারে ৫
প্রথম দুটি বল গুডলেংথ ও ব্যাক অব আ লেংথে করার পর ফুললেংথে যেতে চেয়েছিলেন ফজলহক ফারুকি, তবে সেটি হয় লো ফুলটস। মিড অনকে বিট করে সেটিতে চার মেরেছেন নাঈম। পরে অবশ্য লেংথ আবার ঠিকঠাক করেছেন ফারুকি, নাঈম দুটি ডট খেলার পর শেষ বলে নিয়েছেন সিঙ্গেল।
বাংলাদেশ ১ ওভারে ৫/০।
নতুন বলে মুজিবের আঘাত
দ্বিতীয় ওভারে এসেছিলেন মুজিব উর রহমান। প্রথম বলে সিঙ্গেল নিয়ে দিয়েছিলেন নাঈম, স্ট্রাইক ফিরে পান শেষ বলে। সেটিতেই ফিরতে হলো তাঁকে। মুজিবের বল থেমে থেমে আসছিল, ভেতরের দিকে ঢোকা ক্যারম বলটিতে ব্যাট চালিয়ে নাগাল পাননি তিনি। ব্যাট ও প্যাডের মাঝে বি-শা-ল ফাঁক রেখে খেলতে গিয়ে মিস করে হয়েছেন বোল্ড। দ্বিতীয় ওভারেই প্রথম উইকেট হারিয়েছে বাংলাদেশ, স্কোরবোর্ডে রান ৭।
নাঈম ৮ বলে ৬
সর্বশেষ দুটি সিরিজে টি-টোয়েন্টি দলে ছিলেন না নাঈম। ছিলেন না শুরুতে ঘোষিত এশিয়া কাপের দলেও। চোটের কারণে নুরুল হাসান ও হাসান মাহমুদ ছিটকে যাওয়ার পর দলে নেওয়া হয়েছে তাঁকে। নাঈমের টি–টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের শুরুটা ছিল দারুণ। ২০১৯ সালে ভারতের বিপক্ষে তৃতীয় ম্যাচেই খেলেছিলেন ৪৮ বলে ৮১ রানের এক ইনিংস। তবে এরপর নাঈমের ব্যাটিং টি-টোয়েন্টির সঙ্গে কতটা সামঞ্জস্যপূর্ণ, এ নিয়ে অনেকবারই প্রশ্ন উঠেছে।
তবে গতকাল সংবাদ সম্মেলনে তাঁর টি-টোয়েন্টি পরিসংখ্যান নিয়ে চিন্তিত নন বলে জানিয়েছিলেন বাংলাদেশ দলের টেকনিক্যাল কনসালট্যান্ট শ্রীধরন শ্রীরাম। এই বাঁহাতি ওপেনারের বল মারার সামর্থ্যকে ‘সহজাত’ উল্লেখ করে শ্রীরাম বলেছিলেন, নাঈমের কাছে তাঁদের চাওয়াটা বেশ পরিষ্কার—‘বল দেখো আর মারো।’
টি-টোয়েন্টি দলে ফিরে নাঈম অবশ্য তেমন কিছু করতে পারলেন না।
মুজিবের ২ ওভারে নেই দুই ওপেনার
নীচু হয়ে আড়াআড়ি খেলতে গিয়ে মিস করে গিয়েছিলেন এনামুল হক, আম্পায়ার আসিফ ইয়াকুব অবশ্য আউট দেননি। মুজিব উৎসাহী ছিলেন শুরু থেকেই, তবে নবী রিভিউ নেন একেবারে শেষ মুহূর্তে গিয়ে। সফলও হলো আফগানিস্তান। বল ব্যাটে লাগেনি, বল ট্র্যাকিংয়ে দেখিয়েছে তিন লাল। মুজিবের ২ ওভারে ফিরলেন দুই ওপেনার, এনামুল ফিরলেন ১৪ বলে মাত্র ৫ রান করে। ৪ ওভারে ১৩ রান তুলতে ২ উইকেট হারাল বাংলাদেশ।
মুজিবের তৃতীয় শিকার সাকিব
নভিন উল হকের আগের ওভারে পরপর দুই বলে দুই চার মেরেছিলেন সাকিব। তবে পরের ওভারে মুজিবকে জায়গা বানিয়ে খেলতে গিয়ে বিপদ ডেকে আনলেন তিনি। লাইন মিস করে গেছেন বাংলাদেশ অধিনায়কও, হারিয়েছেন স্টাম্প। তৃতীয় ওভার করতে এসে তৃতীয় উইকেট মুজিবের, চাপে বাংলাদেশ।
এসেই সফল রশিদ
এক প্রান্তে মুজিব, অন্য প্রান্তে রশিদ। প্রথম ওভারে বোলিং করতে এসেই রশিদ ফেরালেন মুশফিকুর রহিমকে। আরেকটি এলবিডব্লুর আবেদন, আরেকটি আফগানিস্তান রিভিউ। সফলও হলো সেটি। ডিফেন্ড করতে যাওয়া মুশফিকের ব্যাটের ইনসাইড এজ ফাঁকি দিয়ে রশিদের গুগলি লাগে প্যাডে, আম্পায়ার আবেদনে সাড়া না দিলেও বল ট্র্যাকিং পক্ষে গেছে আফগানদের। সপ্তম ওভারেই চতুর্থ উইকেট হারিয়েছে বাংলাদেশ।
দশম ওভারে বাংলাদেশের ৫০
পঞ্চম ওভারে পর পর দুই বলে দুই চার মেরেছিলেন সাকিব। পরের বাউন্ডারিটি এলো দশম ওভারের পঞ্চম বলে। নবির লেগ সাইডের বলে ব্যাট চালিয়ে সেটি পেয়েছেন মাহমুদউল্লাহ।
দশম ওভারে ইনিংসে তৃতীয় স্পিনার হিসেবে এসেছেন আফগান অধিনায়ক মোহাম্মদ নবি। আফিফ রিভার্স সুইপ করেছিলেন, বাউন্ডারিও পেয়ে যেতে পারতেন। তবে সীমানায় দারুণ ফিল্ডিং করে সেটি বাঁচিয়েছেন ইব্রাহিম জাদরান।
নবির প্রথম ওভারে এসেছে ১২ রান। ১০ ওভার শেষে ৫০ রান বাংলাদেশের।
রশিদের কবলে আফিফ
আফগান স্পিনের কোনো জবাব দিতে পারছে না বাংলাদেশ।
সর্বশেষ রশিদ খানের শিকার আফিফ হোসেন। সোজা হওয়া বলটি পেছনে গিয়ে আড়াআড়ি খেলতে গিয়ে মিস করে গেছেন আফিফ। আম্পায়ারের এলবিডব্লুর সিদ্ধান্ত রিভিউ করেছিলেন, তবে কাজে আসেনি সেটি। আফিফ ফিরে গেলেন ১৫ বলে ১২ রান করে। দ্বিতীয় ওভারে দ্বিতীয় উইকেট নিলেন রশিদ। শারজায় বাংলাদেশের দুর্দশা বাড়ল আরেকটু।
আউটের বদলে প্রথম ছক্কা
নবিকে তুলে মেরেছিলেন মোসাদ্দেক হোসেন, বাউন্ডারি লাইনে আজমতউল্লাহ ওমরজাই ক্যাচ নেওয়ার পর ভার সামাল দিতে সেটি ছুড়ে দিয়েছিলেন রশিদের খানের দিকে। রশিদ ভুল করেননি। তবে ওমরজাইয়ের পা ছুঁয়েছিল বাউন্ডারি কুশন, ফলে আউট হওয়ার বদলে মোসাদ্দেকের শটটিতে এসেছে ছয় রান। ইনিংসের প্রথম ছক্কা এটি।
গ্যালারিতে বাংলাদেশের দাপট
প্রতিটি সিঙ্গেলও দর্শকদের ভাসাচ্ছে উল্লাসে, অন্তত তাদের আওয়াজ বলছে সেটিই। শারজার গ্যালারিতে বাংলাদেশের উপস্থিতি চোখে পড়ার মতোই, যদিও মাঠের পারফরম্যান্স এখনো খুব একটা সুবিধার নয়।
রেকর্ড অ্যালার্ট
মোসাদ্দেক হোসেন ও মাহমুদউল্লাহর জুটিতে এখন পর্যন্ত উঠেছে ১৯ রান। দুজনের ষষ্ঠ উইকেট জুটি শুরু হয়েছিল বাংলাদেশের স্কোর ৫৩ রান থাকতে। এর আগে কখনোই আফগানিস্তানের বিপক্ষে এত কম রানে ৫ উইকেট হারায়নি বাংলাদেশ।
মুজিব: ৩/১৬
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ২৪ রান দিয়ে নিয়েছিলেন ২ উইকেট। বাংলাদেশের বিপক্ষে মুজিব ধরা দিলেন আরও ভয়ঙ্কর রূপে। ৪ ওভারে মাত্র ১৬ রান দিয়ে ৩ উইকেট নিলেন এ রহস্য স্পিনার। ৬ ওভার বাকি থাকতে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৫ উইকেটে ৭৯ রান।
শেষ ওভারে রশিদের তৃতীয়
এতক্ষণ রশিদের ওপর সে অর্থে চড়াও হননি বাংলাদেশ ব্যাটসম্যানরা। শেষ ওভারে মাহমুদউল্লাহ স্লগ করতে গিয়ে ধরা পড়লেন। মিডউইকেটে ক্যাচ দেওয়ার আগে ২৭ বলে ২৫ রান করেছেন সাবেক বাংলাদেশ অধিনায়ক। মোসাদ্দেক হোসেনের সঙ্গে জুটিতে উঠেছে ৩১ বলে ৩৬ রান।
এ ওভারেই স্টাম্পিং থেকে সূক্ষ্ণ ব্যবধানে বেঁচে গেছেন মোসাদ্দেক।
রশিদের শেষ বলে বাউন্ডারি পেয়েছেন মোসাদ্দেক। আফগান লেগ স্পিনার বোলিং শেষ করলেন ৪ ওভারে ২২ রানে ৩ উইকেট নিয়ে। ফলে রশিদ ও মুজিব—৮ ওভারে মাত্র ৩৮ রান দিয়ে নিলেন ৬ উইকেট।
বাকি ২ ওভার
নভিন উল হক, ফজলহক ফারুকি, মোহাম্মদ নবি—শেষ ৩ ওভার করতে হতো এ তিনজনকে। নভিন নিজের শেষ ওভারটি করে ফেলেছেন, দিয়েছেন ৮ রান। ১৮ ওভার শেষে বাংলাদেশ তুলেছে ১১১ রান।
বৈপরীত্য
শেষ ওভারে ওমরজাই
ফারুকির শেষ বলে স্কুপ করে চার মেরেছেন মেহেদী হাসান, এর আগপর্যন্ত যিনি টাইমিং করতে ভুগেছেন বেশ। ১৯তম ওভারে উঠেছে ৯ রান। অধিনায়ক নবি শেষ ওভার করতে আসেননি, পাঠিয়েছেন পেসার আজমতউল্লাহ ওমরজাইকে।
বাংলাদেশকে ১২৭ পর্যন্ত নিয়ে গেলেন মোসাদ্দেক
প্রথম ছয়জন ব্যাটসম্যানের পাঁচজনই ব্যাটিং করেছেন ১০০-এর নিচে স্ট্রাইক রেটে, একজনের স্ট্রাইক রেট ১২২.২২। সাতে নামা মোসাদ্দেক হোসেন সেখানেই খেললেন ৩১ বলে ৪৮ রানের ইনিংস, ১৫৪.৮৩ স্ট্রাইক রেটে। ফিফটি পাননি, তবে মোসাদ্দেকের ওই ইনিংসে ভর করেই আফগানিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশ তুলতে পেরেছে ১২৭ রান।
শারজার ধীরগতির নিচু বাউন্সের উইকেটে শুরু থেকেই আফগান ঘূর্ণিতে ভুগেছে বাংলাদেশ। মুজিব ও রশিদের ৮ ওভারে উঠেছে মাত্র ৩৮ রান, বাংলাদেশ হারিয়েছে ৬ উইকেট। ৬টি উইকেটই এসেছে বোল্ড বা এলবিডব্লু থেকে।
শেষ ওভারে আজমতউল্লাহ ওমরজাইকে পাঠান নবি, ওই ওভারে উঠেছে ৭ রান।
১২৭ বা এর কম রান ডিফেন্ড করে বাংলাদেশ এর আগে জিতেছে মাত্র দুইবার। দুটিই অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে, গত বছর বিশ্বকাপের আগে। যদিও মিরপুরের ওই সিরিজের উইকেট ছিল স্পিন সহায়ক।
সাকিবের প্রথম ওভারে ২ রান
প্রথম ওভারেই এসেছেন সাকিব আল হাসান। হজরতউল্লাহ জাজাই ও রহমানউল্লাহ গুরবাজকে হাত খোলার সুযোগ দেননি। শেষ বলে আফিরের সরাসরি থ্রোয়ে তৈরি হয়েছিল রানআউটের সম্ভাবনা। তবে জাজাই ক্রিজে ব্যাট ঢোকাতে পেরেছেন সময়মতোই। প্রথম ওভারে বাংলাদেশ অধিনায়ক দিয়েছেন ২ রান।
অন্য প্রান্তে এসেছেন মোস্তাফিজুর রহমান।
গুরবাজকে জীবন দিলেন মাহমুদউল্লাহ
সাকিবের লেংথ আমন্ত্রণ জানাচ্ছিল গুরবাজকে, ছিল ফাঁদও। সে ফাঁদেই পা দিয়ে তুলে মারতে গিয়ে ধরা পড়তে ধরেছিলেন গুরবাজ। তবে লং অনে ক্যাচটি নিতে পারলেন না মাহমুদউল্লাহ। নাগালে পেলেও ধরে রাখতে পারেননি বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক। আগের ওভারে মোস্তাফিজকে একটি চার মারা গুরবাজ বেঁচে গেছেন ৬ রানে।
৩ ওভারে আফগানিস্তান ১১/০।
গুরবাজ স্টাম্পড মুশফিক বোল্ড সাকিব
টানা তৃতীয় ওভার করতে এসে গুরবাজকে ফেরালেন সাকিব। নিচু হওয়া বলে ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে এসে খেলতে চেয়েছিলেন আগের ওভারেই জীবন পাওয়া গুরবাজ। তবে বলের নাগাল পাননি। উইকেটের পেছনে ভুল করেননি মুশফিক, গুরবাজ স্টাম্পড হয়ে ফিরেছেন ১৮ বলে ১১ রান করে।
পঞ্চম ওভারে প্রথম ব্রেকথ্রু বাংলাদেশের, সেটিও অধিনায়কের বোলিংয়ে।
পাওয়ারপ্লেতে ২৯/১
প্রথম বলে ইনসাইড-এজে চার পেয়েছিলেন জাজাই, যেটি হতে পারত বোল্ড অথবা ক্যাচ। শেষ পর্যন্ত বেঁচে গেছেন। পঞ্চম বলে অবশ্য চার মেরেছেন দাপটের সঙ্গেই। পাওয়ারপ্লের শেষ ওভারে মেহেদী হাসান দিয়েছেন ১০ রান, প্রথম ৬ ওভারে আফগানিস্তান তুলেছে ২৯ রান। এ সময়ে বাংলাদেশের স্কোর ছিল ২৮ রান, তবে আফগানিস্তানের ১ উইকেটের বিপরীতে তারা হারিয়েছিল ৩ উইকেট।
জাজাইকে ফেরালেন মোসাদ্দেক
এ পিচে আড়াআড়ি শট—যেন নিজের বিপদ নিজেই ডেকে আনা। সর্বশেষ সেটি করলেন হজরতউল্লাহ জাজাই। মোসাদ্দেক হোসেনকে আড়াআড়ি খেলতে গিয়ে মিস করে এলবিডব্লু তিনি। রিভিউ নিয়েছিলেন, তবে উইকেটে হয়েছে আম্পায়ার্স কল। গুরুত্বপূর্ণ সময়ে ব্রেকথ্রু এনে দিলেন মোসাদ্দেক, ৪৫ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারাল আফগানিস্তান।
এর আগে নিজের প্রথম ওভারে তাসকিন দিয়েছিলেন ৬ রান, মোসাদ্দেক ২ রান। এরপর মোস্তাফিজকে ফেরান সাকিব। ফিজের বিপক্ষে সতর্কই ছিলেন জাজাই ও জাদরান, অন্তত প্রথম চার বলে। পঞ্চম বলে কাটারকে পাত্তা দেননি জাজাই, কাভার দিয়ে টেনে মেরেছেন চার।
অবশ্য পরের ওভারে মোসাদ্দেকের ওপর চড়াও হতে গিয়ে ফিরতে হলো তাঁকে, ২৬ বলে ২৩ রান করে।
চেয়ে চেয়ে দেখলাম...
সাকিব: ৪-০-১৩-১
প্রথম ওভারেই এসেছিলেন, প্রথম ব্রেকথ্রুও দেন তিনিই। ১২তম ওভারে বোলিং শেষ করলেন সাকিব আল হাসান। টি-টোয়েন্টিতে ফেরার ম্যাচে ৪ ওভারে মাত্র ১৩ রান দিয়েছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক, নিয়েছেন রহমানউল্লাহ গুরবাজের উইকেট।
ফিরেই সফল সাইফউদ্দিন
গত বছর শারজায় শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচটি ছিল সাইফউদ্দিনের সর্বশেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ। চোটের সঙ্গে দীর্ঘ লড়াই শেষে ফিরলেন আজ, ওই ভেন্যুতেই। প্রথম ওভারেই এরপর সফল হলেন বাংলাদেশ পেসার। নীচু হওয়া বলে আড়াআড়ি খেলতে গিয়ে মিস করে এলবিডব্লু মোহাম্মদ নবি। রিভিউ না করেই ফিরে গেছেন আফগান অধিনায়ক, ৯ বলে ৮ রান করে।
আফগানিস্তানকে আরেকবার চাপে ফেলল বাংলাদেশ, শেষ ৪২ বলে প্রয়োজন ৬৬ রান।
তাসকিনের ওভারে দুই চার
প্রথমে পয়েন্ট, পরে টেনে কাভার দিয়ে তাসকিনকে দুটি চার মারলেন ইব্রাহিম জাদরান। ১১তম ওভারে তাসকিনের বলেই এর আগের বাউন্ডারি এসেছিল আফগানিস্তানের।
৩০ বলে আফগানিস্তানের প্রয়োজন ৫১ রান, বাকি ৭ উইকেট।
মেহেদীকে নাজিবুল্লাহর ছয়
আগের ওভারে দুই চার মেরেছিলেন ইব্রাহিম জাদরান, এবার মেহেদীকে ছয় মারলেন নাজিবুল্লাহ জাদরান। মেহেদী ৪ ওভার শেষ করলেন। মোস্তাফিজের ২ ওভারের সঙ্গে সাইফউদ্দিনের বাকি ৩ ওভার, মোসাদ্দেকের ২টি, তাসকিনের ১টি। ২৪ বলে দরকার ৪৩ রান।
মোস্তাফিজের ওভারে ঘুরে গেল ম্যাচ
দ্বিতীয় বলটি শর্ট করতে গিয়ে ওয়াইড করলেন। মোস্তাফিজ যেন ছন্দ হারালেন ওখানেই।
এরপর করলেন আরেকটি ওয়াইড, তার আগে-পরে নাজিবুল্লাহ জাদরান মারলেন দুটি ছয়। প্রথমটি পুল করে, পরেরটি লং অফ দিয়ে টেনে। ১৭তম ওভারে ১৭ রান, ম্যাচ হেলে পড়ল আফগানিস্তানের দিকে। ১৮ বলে এখন প্রয়োজন মাত্র ২৬ রান।
নাজিবুল্লাহ ঝড়ে উড়ে গেল বাংলাদেশ
মোসাদ্দেক হোসেনকে টেনে ছয় মেরে ম্যাচ শেষ করলেন নাজিবুল্লাহ জাদরান। আফগানিস্তানের জন্য ‘পারফেক্ট’ শেষ!
মোহাম্মদ নবি যখন ফেরেন, ৪২ বলে আফগানিস্তানের প্রয়োজন ছিল ৬৬ রান। ম্যাচে তখন ফেভারিট ছিল বাংলাদেশই। তবে চিত্রটা বদলে দিলেন দুই জাদরান–নাজিবুল্লাহ ও ইব্রাহিম। বিশেষ করে নাজিবুল্লাহ। মাত্র ১৭ বলে ৪৩ রান করে অপরাজিত থাকলেন তিনি। ইব্রাহিমের সঙ্গে তাঁর জুটি অবিচ্ছিন্ন ছিল ৩৩ বলে ৬৯ রানে।
মোস্তাফিজের করা ১৭তম ওভারে ১৭ রানের পর সাইফউদ্দিনের ওভারে দুটি করে চার-ছক্কায় ওঠে ২২ রান। আফগানিস্তানের জয় এরপর হয়ে পরে আনুষ্ঠানিকতা।
শারজায় বাংলাদেশকে ৭ উইকেটে হারিয়ে সবার আগে সুপার ফোর নিশ্চিত করল আফগানিস্তান। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাংলাদেশের ম্যাচটি এখন বাঁচামরার দুই দলের জন্যই। সে ম্যাচে জয়ী দল গ্রুপ ‘বি’ থেকে আফগানদের সঙ্গী হবে সুপার ফোরে।