অর্থসংকটের কারণে নারী ফুটবল দলকে অলিম্পিক বাছাইয়ে খেলতে মিয়ানমারে পাঠায়নি বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)। এ নিয়ে দেশের ক্রীড়াঙ্গনে বইছে সমালোচনার ঝড়। সাফ চ্যাম্পিয়ন দলকে কেন অলিম্পিক বাছাইয়ে খেলতে পাঠাতে পারেননি, সেই ঘটনার ব্যাখ্যা দেওয়ার একপর্যায়ে গত সপ্তাহে বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন মন্তব্য করেছেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসানকে নিয়েও।
বাংলাদেশ ক্রিকেট দল জিতলেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফোন করেন নাজমুল হাসান। অথচ বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন মেয়েদের মিয়ানমার পাঠাতে প্রধানমন্ত্রীর সাহায্যই চাননি। এ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীও তাঁকে ‘ধমক’ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন বাফুফে সভাপতি। সে প্রসঙ্গেই সাংবাদিকেরা সালাউদ্দিনের কাছে জানতে চান, তিনি কেন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সে রকম যোগাযোগ রাখেন না? জবাবে সালাউদ্দিন বলেছিলেন, ‘আমি ওই ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে উঠে আসিনি। আমি ওই নাটক করতে পারব না। আমি তো প্রকাশ্যে বলব না, প্রধানমন্ত্রী ফোন দিয়েছেন।’
আজ মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে একমাত্র টেস্ট শেষে সালাউদ্দিনের এমন মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় বিসিবি সভাপতি প্রথমে বলেছেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ফোন করলে আমি যেখানেই থাকি, যে অবস্থায় থাকি ফোন ধরবই। আমি জানি না এটা নিয়ে কেন বলেছে। এ নিয়ে মন্তব্য করতে চাচ্ছি না।’
পরে সাংবাদিকদের উদ্দেশে আবার বলেছেন, ‘আমার মনে হয় সমস্যাটা আপনাদের, আপনারা এত বাজে প্রশ্ন করলেন কেন? আপনারা হিসাব চাচ্ছেন, টাকা কী করছে? এমন প্রশ্ন জিজ্ঞেস করতে যান কেন? এটা করলে তো উনার মাথা খারাপ হবেই, এটা সবাই জানেন।’
নারী ফুটবল দলকে মিয়ানমারে না পাঠানোর কঠোর সমালোচনাও করেছেন বিসিবি সভাপতি। তিনি বলেন, ‘আমার কাছে খারাপ লাগছে মেয়েরা যেতে পারল না। তা–ও মাত্র ২০ লাখ (বাফুফে বলেছে ৬০ লাখ) টাকার জন্য! এর চেয়ে দুঃখ-কষ্ট আর কী হতে পারে? মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কি কষ্টটাই না পেয়েছেন! আমার মনে হয় আপনাদের যে চ্যানেলগুলো আছে, যেকোনো চ্যানেলের মালিকের কাছে চাইলেই টাকাটা দিয়ে দিতেন। কারও না কারও কাছে বলতে তো হবে। আমাদের খেলোয়াড়দের বললেও দিত। এত গোপনে জিনিসটা রেখে, যে প্রক্রিয়ায় করেছে, এটা খুব দুঃখজনক।’
বিসিবি সভাপতির চোখে টাকার অভাবে সাফ চ্যাম্পিয়নদের মিয়ানমারে খেলতে না পাঠানোটা দেশের জন্যই বড় লজ্জার, ‘দেশের জন্য এর চেয়ে বড় বদনাম হতে পারে না। আমরা বলছি, আমাদের দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে যাচ্ছে, যেটা সারা পৃথিবী মেনে নিচ্ছে। সেখানে আমরা টাকার জন্য আমাদের দেশের মেয়েদের প্রি-অলিম্পিকে খেলতে পাঠাতে পারি না। এর চেয়ে লজ্জার আর কিছু হতে পারে না।’