হারের পর তামিমদের মন্থর ব্যাটিংয়ের দিকে আঙুল তুললেন মিরাজ
টপ অর্ডারের কেউ একজন বড় ইনিংস খেলবেন। ফিনিশাররা এসে যোগ করবেন দ্রুত কিছু রান। টি-টোয়েন্টি ইনিংসের আদর্শ অগ্রগতি এমনই হওয়া উচিত। আজ সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স ঠিক তা-ই করেছে। ফরচুন বরিশালের বিপক্ষে চট্টগ্রামের ওপেনার আভিস্কা ফার্নান্ডো ৫০ বলে ৯১ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেছেন। শেষে এসে কার্টিস ক্যাম্ফার ৯ বলে যোগ করেন হার না মানা ২৯ রান, স্ট্রাইক রেট ৩২২। দুজন মিলে চট্টগ্রামকে নিয়ে গেছেন ৪ উইকেটে ১৯৩ রানে, যা এবারের বিপিএলে এখন পর্যন্ত কোনো দলের সর্বোচ্চ স্কোর।
ফার্নান্ডো যা দিয়েছেন, বরিশালের টপ অর্ডারের কেউ তা করতে পারেননি।পাকিস্তানের আহমেদ শেহজাদ ১৭ বলে ৩৯ রান করে বিস্ফোরক শুরু এনে দিলেও সে ইনিংসটা লম্বা হয়নি। তামিম ইকবাল, সৌম্য সরকার ও মুশফিকুর রহিমও এ ক্ষেত্রে ব্যর্থ। শেষের দিকে মেহেদী হাসান মিরাজের ১৬ বলে ৩৫ রান ক্যাম্ফারের ইনিংসটিকে মনে করিয়ে দিলেও তা জেতার জন্য যথেষ্ট ছিল না। বরিশাল শেষ পর্যন্ত করেছে ৭ উইকেটে ১৮৩ রান।
তারকায় ঠাসা দল নিয়েও তামিমদের ৪ ম্যাচে ৩ হার স্বাভাবিকভাবেই সহজে হজম হওয়ার কথা নয়। যখন হারের কারণ হয় বাজে ফিল্ডিং, তখন স্বাভাবিকভাবেই হতাশায় খেলোয়াড়েরা হবেন নতমুখী। খেলা শেষে অধিনায়ক তামিমের শরীরী ভাষা দেখে তেমনই মনে হলো। পুরস্কার মঞ্চে এসে নিজ দলের ফিল্ডিংয়ের সমালোচনা করেছেন, ‘আমরা মাঠে এত সুযোগ হাতছাড়া করতে পারি না। গত তিন ম্যাচে ক্যাচ হাতছাড়া করা আমাদের বাজেভাবে ভুগিয়েছে। আজ নিয়ন্ত্রণে ছিলাম। কিন্তু ক্যাচ ফেলায় তা ধরে রাখতে পারিনি। একজন ৯০ করেছে, সে আউট হতে পারত ৪০-এ।’
তবু শেহজাদের সৌজন্যে ১৯৩ রান তাড়া করার মতো মঞ্চ পেয়ে যায় বরিশাল। কিন্তু শেহজাদের ২২৯ স্ট্রাইক রেটের সেই ইনিংসের পর টপ অর্ডারের বাকিদের কেউই দ্রুত রান তুলতে পারেননি। সর্বোচ্চ ১১০ স্ট্রাইক রেটে খেলেছেন তামিম। এরপর মিরাজ এসে ২১৮ স্ট্রাইক রেটে খেলে বল আর রানের পার্থক্য কমিয়ে আনেন।
ম্যাচ শেষে মিরাজই টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানদের মন্থর ব্যাটিংয়ের দিকে আঙুল তুলেছেন, ‘টি-টোয়েন্টিতে বেশি রান করতে গেলে প্রত্যেক ওভারে রান রেট ঠিক রাখতে হবে। দেখুন, আমরা ১৯৪ রান তাড়া করতে নেমেছি, সাড়ে ৯ করে লাগে ওভারে। এমন অবস্থায় টি-টোয়েন্টিতে কোনো ওভারে রয়েসয়ে খেলা যাবে না। প্রথম ৬ ওভারে আমরা যেভাবে খেলেছি, ২০ ওভার পর্যন্ত ওভাবে খেলতে হবে। এভাবে না খেললে রান রেট বেড়ে যাবে।’ দলের অন্যতম দুই অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান তামিম ও মুশফিক মিলে ৫২ বল খেলে করেছেন ৫৬ রান—তামিম ৩০ বলে ৩৩ আর মুশফিক ২২ বলে ২৩!
আর উইকেট পড়লে তো কথাই নেই। মাঝের ওভারে ক্যাম্ফারের স্পেলের প্রথম ৯ বলে ৪ উইকেট হারিয়ে ম্যাচ থেকে ছিটকে পড়ে বরিশাল। মিরাজের কাছে শেষের দিকে রানের চাপ বাড়ার আরেক কারণ এটি, ‘ওরা মাঝখানে দুটা ওভার ভালো বোলিং করেছে। ওখানে আমাদের তিনটা উইকেটে চলে গেছে। উইকেটও পড়েছে, আমাদের রান রেটও বেড়েছে। একটা সময়ে আমাদের ১৪ করে রান দরকার ছিল। ওটা যদি ১০/১১ বা কাছাকাছি থাকত, তাহলে হয়তো সহজ হতো। আমরা ১০ রানে হেরেছি, একটা ওভার বেশি রান হতেই পারে। উইকেটটা ভালো। আমাদের ছোট ছোট যে ভুলগুলো ছিল, এ জন্য আমরা হেরে গেছি।’