তামিম বলছেন, ‘একবার আউট করে ফিরিয়ে আনা ভালো দেখায় না’

বল করার আগেই নন স্ট্রাইক প্রান্তে সোধিকে রানআউট করেছিলেন হাসানশামসুল হক

এ ম্যাচের পর ‘মানকাডিং’ বা বল করার আগেই নন স্ট্রাইক প্রান্তে ব্যাটসম্যানকে রানআউট করার ব্যাপারে দলের মধ্যে সিদ্ধান্ত নিতে হবে বলে মনে করেন তামিম ইকবাল। নিজে এমন আউট করার পক্ষে মন্তব্য করে তামিম বলেছেন, একবার আউট করে ফিরিয়ে আনাটা ভালো দেখায় না। এমন আউট করা বা না করা—কোনোটিই ভুল নয় বলেও মনে করেন তিনি।

নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ইশ সোধিকে এভাবে রানআউট করেছিলেন হাসান মাহমুদ। আউট হয়ে ফেরার পথে ব্যাট ও হাত মিলিয়ে ইশারাও করেন সোধি, যেটিতে কিছুটা ব্যঙ্গ করেছেন বলেই মনে হয়েছে। তবে এরপর লিটন দাস আবেদন তুলে নেওয়াতে ফিরে আসার পথে হাসানকে জড়িয়েও ধরেন সোধি। ব্যাটিংয়ে ফিরে সোধি করেন আরও ১৮ রান, শেষ পর্যন্ত ম্যাচে ৮৬ রানে হেরে সিরিজে পিছিয়ে পড়ে বাংলাদেশ।

তাঁকে এভাবে ফিরিয়ে আনা উচিত হয়েছে কি না, এমন এক প্রশ্নের জবাবে তামিম সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ‘এ আউট নিলে… আমার মনে হয়নি ওরও (সোধি) এমন করা উচিত হয়নি। ও যেভাবে বিস্মিত হয়েছে, তারও বিস্মিত হওয়া উচিত নয়। এটা আমরা নেব কি নেব না, এটা অধিনায়কের সিদ্ধান্ত। দুঃখিত, দলের সিদ্ধান্ত। নেব কি নেব না। তবে সে যেভাবে নিয়েছে, তাতে আমি অবাক হয়েছি। এটা ক্রিকেটেরই অংশ।’

আউট হয়ে ফেরার পথে ব্যাট ও হাত মিলিয়ে ইশারাও করেন সোধি, যেটিতে কিছুটা ব্যঙ্গ করেছেন বলেই মনে হয়েছে
প্রথম আলো

এমন আউটের ক্ষেত্রে একটা কথা আসে—ব্যাটসম্যানকে সতর্ক করা। তবে সেটিকেও উড়িয়ে দিয়েছেন তামিম, ‘এখানে ওয়ার্নিংয়ের কিছু নেই। বোল্ড আউটের মতোই। হয়তো তখন অধিনায়ক ভেবেছে আমরা নেব না, এ কারণেই আমরা নেই নাই। এখানে ঠিক বা ভুল নেই। হয় আপনি করবেন, তাতেও ভুল নেই। যদি না করেন, তাতেও ভুল নেই। এটা দলের সিদ্ধান্ত। আমাদের এটা নিয়ে আলোচনা হওয়া উচিত, করব কি করব না। কারণ সামনে (এমন) আরও দেখা যাবে।’

এমন দ্বিপক্ষীয় সিরিজে ম্যাচের ওই পর্যায়ে না হয়ে অন্য কোনো আরও গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে এমন আউট বাংলাদেশ করত কি না, সে ব্যাপারে তামিম বলেছেন, ‘হয়তোবা (নিতাম)। হয়তোবা না। আমি ভুল দেখি না। নিয়ম আছে এমন। এটা যদি কেউ আমরা নিই বা আমাদের বিপক্ষেও নেয়, আমার মনে হয় না এভাবে প্রতিক্রিয়া দেখানো উচিত। যেভাবে এখন লোকে দেখায়।’

আরও পড়ুন

তামিমের কথা শুনে মনে হবে, মানকাডিং না করার ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত বা নিজেদের মধ্যে আলোচনা হয়নি তাঁদের। এ ব্যাপারে এখন দলের মধ্যে আলোচনা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি, ‘এটা একটা দলীয় সিদ্ধান্ত। আজকের ঘটনার পর আমরা এটা নিয়ে আলোচনা করব। আমাদের যদি দলীয় সিদ্ধান্ত হয়, আমরা এ ধরনের উইকেট নেব তাহলে নেব, নইলে নেব না। কারণ এটা ভালো দেখায় না, একবার আউট করার পর আবার ফিরিয়ে নিয়ে আসা।’

ফিরে আসার পথে হাসানকে জড়িয়েও ধরেন সোধি
প্রথম আলো

যাঁর আউট নিয়ে এত আলোচনা, সেই সোধি অবশ্য বাংলাদেশের প্রশংসাই করলেন। পুরস্কার বিতরণীর পর সংবাদ সম্মেলনেও লিটনকে ধন্যবাদ দিয়ে তিনি বলেছেন, ‘দেখুন, এসব মুহূর্তে সবাই ম্যাচ জয়ের কথাই ভাবে। আমি একটু উইকেটের বাইরে ছিলাম। তবে বাংলাদেশকে ধন্যবাদ দিতেই হয় ওরা যেভাবে আমাকে ফিরিয়ে এনেছে, এটা প্রশংসার যোগ্য। আমি আসলে এত ভালো ব্যাটসম্যান না। তবে ধন্যবাদ দিতে চাই। এই রকম পরিস্থিতিতে হয়তো আমরাও এটা করতে পারতাম। লিটন আমাকে ফিরিয়েছিল, আমি এসে হ্যান্ডশেক করেছি, জড়িয়ে ধরেছি।’

সোধি অবশ্য বাস্তবতাও জানেন। হাসান যে তাঁকে আউট করে ভুল কিছু করেননি, সেটিও বলেছেন, ‘এটা এখন খেলার একটা অংশ, ভুল কিছু নয়, এটা তো পুরো বিশ্বেই হচ্ছে। ওরা চাইলে আমাকে না-ও ফেরাতে পারত। বাংলাদেশ স্পোর্টসম্যানশিপ দেখিয়েছে। তবে এটাও ঠিক, সবাই দলকে জেতানোর জন্যই খেলে।’

আরও পড়ুন