ভারতকে হারাতে কখনো এত কম বল লাগেনি অস্ট্রেলিয়ার
অ্যাডিলেড ওভালের গ্যালারিতে হাজির ছিলেন ৩৩ হাজার ১৮৪ দর্শক। টিকিট সারা দিনের জন্য হলেও তারা খেলা দেখতে পেরেছেন মোটে ২ ঘণ্টা।
তবে ৩৩ হাজার দর্শকের মধ্যে যারা অস্ট্রেলিয়ান, সময়টা তাদের ভালোই কেটেছে। ওই ঘণ্টা দু-একের মধ্যেই ভারতের দ্বিতীয় ইনিংস গুড়িয়ে দিয়ে ১০ উইকেটে ম্যাচ জিতে নিয়েছে প্যাট কামিন্সের দল। সেই সঙ্গে পাঁচ টেস্টের বোর্ডার-গাভাস্কার ট্রফিতে নিয়ে এসেছে ১-১ সমতা।
আজ তৃতীয় দিনের খেলায় ভারত তাদের দ্বিতীয় ইনিংসে শেষ ৫ উইকেটে মাত্র ৪৭ রান করে অলআউট হলে জয়ের জন্য মাত্র ১৯ রানের লক্ষ্য পায় অস্ট্রেলিয়া। দুই ওপেনার উসমান খাজা ও নাথান ম্যাকসুয়েনি সেটা তুলে নিয়েছেন ২০ বলে। তৃতীয় দিনে প্রথম সেশনে শেষ হওয়া ম্যাচটিতে সব মিলিয়ে খেলা হয়েছে মোটে ১০৩১ বলে। অস্ট্রেলিয়া-ভারতের দ্বিপক্ষীয় লড়াইয়ে যা সবচেয়ে কম বলের ম্যাচ।
অ্যাডিলেড ওভালে ভারতকে হার চোখরাঙানি দিয়েছে গতকাল দ্বিতীয় দিনেই। তবে ঋষভ পন্ত আর নীতিশ রেড্ডি অপরাজিত ছিলেন বলে লড়াইয়ের আশাও ছিল ভারতীয় দলে। ৫ উইকেটে ১২৮ রান নিয়ে দ্বিতীয় দিন শেষ করা পন্তরা অস্ট্রেলিয়ার প্রথম ইনিংসের চেয়ে পিছিয়ে ছিলেন ২৯ রানে। এই রান শোধ করে যতটা সম্ভব লিড নিলেই বোলারদের জন্য লড়াইয়ের ব্যবস্থা হয়ে যাবে—এমনটাই ছিল ভাবনা।
কিন্তু লড়াইয়ের জন্য পুঁজি জোগাড় পরে, অস্ট্রেলিয়ার প্রথম ইনিংসের রান শোধ করতেই রীতিমতো অলআউটের অবস্থা হয় ভারতের। দিনের পঞ্চম বলে কোনো রান যোগ না করেই মিচেল স্টার্কের বলে স্লিপে স্মিথের হাতে ক্যাচ পন্ত। কিছুক্ষণ পর প্যাট কামিন্স যখন রবিচন্দ্রন অশ্বিন ও হর্ষিত রানাকে তুলে নন, তখনো ৪ রানে পিছিয়ে ভারত।
ইনিংস হারের শঙ্কা জেগে ওঠা ওই অবস্থা থেকে ভারতকে উদ্ধার করেন নীতিশ রেড্ডি। স্কট বোলান্ডকে ৪ চার আর কামিন্সকে ৬ মেরে দলকে নিয়ে যান লিডের পথে। তবে কামিন্সকে ছক্কা মারার পরের বলেই ম্যাকসুয়েনিকে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন নীতিশ। তাঁর ৪২-ই ভারতের ইনিংসের সর্বোচ্চ। কোনো ব্যাটসম্যানই ফিফটি করতে পারেননি—ভারত সর্বশেষ এমন ইনিংস দেখেছে ২০২১ টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে।
নীতিশকে ফিরিয়ে টেস্ট ক্যারিয়ারে ১৪তম বারের মতো ইনিংসে পাঁচ উইকেট পূর্ণ করেন কামিন্স। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে বল হাতে নেওয়া তিন বোলারের মধ্যে বোলান্ড নেন ৩ উইকেট, স্টার্ক ২টি।
দ্রুত ভারতের দ্বিতীয় ইনিংস গুটিয়ে দিয়ে অস্ট্রেলিয়াও রান তাড়ায় দেরি করেনি। সব মিলিয়ে পুরো ম্যাচে খেলা হয়েছে ১০৩১ বল। এত কম বলে অস্ট্রেলিয়া কখনো ভারতকে হারায়নি। দুই দলের লড়াইয়ে এর আগে সবচেয়ে কম বলের ম্যাচ ছিল ২০২৩ সালের ইন্দোর টেস্ট—১১৩৫ বল।
পার্থে ২৯৫ রানে হেরে হেরে যাওয়া কামিন্সের দল এখন ১০ উইকেটের জয় নিয়ে পরের টেস্ট খেলতে নামবে ১৪ ডিসেম্বর ব্রিসবেনে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ভারত: ১৮০ ও ১৭৫ (রেড্ডি ৪২, গিল ২৮, পন্ত ২৮; কামিন্স ৫/৫৭, বোলান্ড ৩/৫১, স্টার্ক ২/৬০)। অস্ট্রেলিয়া: ৩৩৭ ও ১৯ ( ম্যাকসুয়েনি ১০*, খাজা ৯*; বুমরা ০/২)। ফল: অস্ট্রেলিয়া ১০ উইকেটে জয়ী। ম্যান অব দ্য ম্যাচ: ট্রাভিস হেড। সিরিজ: পাঁচ টেস্টের সিরিজে অস্ট্রেলিয়া-ভারত ১-১ সমতা।