চট্টগ্রামে ভারত দলের কাছ থেকে আগ্রাসী ও সাহসী ক্রিকেট দেখা যাবে, এমন নিশ্চয়তা দিয়েছেন অধিনায়ক লোকেশ রাহুল। ইংল্যান্ডের এখনকার টেস্ট খেলার ধরন রোমাঞ্চকর ও উপভোগ্য মনে করলেও প্রতিটি দলেরই ‘অ্যাপ্রোচ’ আলাদা হবে, এমন জানিয়েছেন ভারতের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক।
ব্রেন্ডন ম্যাককালাম কোচ ও বেন স্টোকস অধিনায়ক হয়ে আসার পর থেকেই বদলে গেছে ইংল্যান্ডের টেস্ট খেলার ধরন। নিজেদের মাটির পর এবার পাকিস্তানের কন্ডিশনেও তারা খেলছে সেভাবেই। রাওয়ালপিন্ডির বেশ ফ্ল্যাট উইকেটেও শেষ পর্যন্ত রোমাঞ্চকর জয় পেয়েছে স্টোকসের দল। আজ মুলতানেও তারা জয় পেয়েছে ২৬ রানে।
ভারতও ইংল্যান্ডের পথে এগোবে কি না, বাংলাদেশের বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টের আগে রাহুলকে এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি জানিয়েছেন, পাকিস্তানের বিপক্ষে স্টোকসদের খেলা দেখছেন। ভয়ডরহীন, আগ্রাসী ক্রিকেট উপভোগও করছেন। তবে সব দল একইভাবে এগোতে পারবে না, মনে করেন রাহুল, ‘আমার মনে হয়, সেটি তাদের জন্য কাজ করছে। প্রতিটি দলেরই নিজস্ব পন্থা আছে। যেসব দল ভালো করছে, তাদের কাছ থেকে আমরা সবাই শিখতে পারি। তারা কীভাবে পারফর্ম করছে, তাদের জন্য কী কাজে দিচ্ছে। যেমনটি বললাম, সব সময় আপনি একই অ্যাপ্রোচে এগোতে পারবেন না। আপনি কোথায় আছেন, কন্ডিশন কেমন (এগুলো বিবেচনায় নিতে হবে)।’
রাহুলদের টেস্ট খেলার ধরনে প্রভাব ফেলবে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে। গতবারের ফাইনাল খেলা দলটি এখন আছে ৪ নম্বরে। এবারও সেটিই লক্ষ্য তাঁদের, ‘টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ উতরে যাওয়ার ব্যাপার আছে আমাদের। আমাদেরও আগ্রাসী হতে হবে। আমরা জানি, আমাদের অবস্থান কোথায়, ফাইনালে যেতে কী করতে হবে। যেমনটি বললাম, নির্দিষ্ট দিনে সবকিছু বিবেচনা করব। এটা টেস্ট ক্রিকেট—প্রতিটি দিন, প্রতিটি সেশনে দলের চাহিদা বিবেচনা করতে হবে। নিজেদের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করে উপভোগ করতে হবে।’
শেষ পর্যন্ত দেশের জন্য ফল বয়ে আনাটাই গুরুত্বপূর্ণ, এমন মনে করেন বলে ইংল্যান্ডের খেলার ধরনকে ‘বেপরোয়া’ বলতে চান না রাহুল, ‘এটা আসলে যে যেভাবে দেখবেন। একজন ক্রিকেটার হিসেবে এটিকে আমি বেপরোয়া মনে করি না। তাদের একটা নির্দিষ্ট মানসিকতা আছে। ভেবেচিন্তেই তারা করছে এমন। তারা খেলোয়াড়দের সমর্থন দিচ্ছে, যারা নিজেদের কাজটি করছে। দলের জন্য কাজ করার ক্ষেত্রে আসলে কীভাবে করছেন, তাতে কিছু যায় আসে না। আপনার দল, আপনার দেশের জন্য ফল আনতে চাইবেন। প্রতিটি ক্রিকেটারেরই এই মানসিকতা থাকে। সে খেলোয়াড়, দলের সঙ্গে কোনটি সামঞ্জস্যপূর্ণ, সেটিই করতে হবে। ক্রিকেট বদলাচ্ছে। কীভাবে খেলবেন, সেটির নির্দিষ্ট কোনো উপায় ঠিক করা নেই। এটা আসলে খেলোয়াড়দের ওপর, ক্রিজে তারা কোনটি সবচেয়ে ভালো মনে করছে দলের জন্য। দল হিসেবে, নেতা হিসেবে আপনি সেটিকে সমর্থন করবেন।’
চট্টগ্রামের এ মাঠে উইকেট ব্যাটিং সহায়ক, সেটি জানা কথাই। ওয়ানডে সিরিজের শেষ ম্যাচেও দেখা গেছে সেটি। এমন উইকেটে ফল আনতে গেলে কী করতে হবে, এমন প্রশ্নের জবাবে রাহুল বলেছেন, ‘আমরা আগে থেকেই নির্দিষ্ট কোনো মানসিকতা নিয়ে নামব না। হ্যাঁ, কোনো ভেন্যুর রেকর্ড ইতিহাস থেকে আপনি কিছু পয়েন্ট নোট করবেন। তবে দুই দলই কীভাবে খেলছে, সেটি গুরুত্বপূর্ণ। আমরা সাহসী, আগ্রাসী হয়ে ফল আনার চেষ্টা করব।’
এরপরই একটা আশাও দিলেন, ‘তবে খেলা তো পাঁচ দিনের। সেটিকে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র লক্ষ্যে ভাগ করে সেগুলো অর্জনের চেষ্টা করতে হবে। প্রতিটি সেশনে দলের চাহিদা ভিন্ন থাকবে, সেগুলো পূরণে সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে হবে। তবে এটা নিশ্চিত থাকতে পারেন, আপনারা আমাদের দলের কাছ থেকে অনেক আগ্রাসী ক্রিকেট দেখবেন।’