প্রাইজমানিতে চ্যাম্পিয়ন আইপিএল, রানারআপ এসএ টোয়েন্টি, বিপিএল কোথায়
ক্রিকেটে বাণিজ্যিকীকরণ বেড়ে যাওয়ায় এখন বছরের বেশির ভাগ সময় ফ্র্যাঞ্চাইজিভিত্তিক টি–টোয়েন্টি লিগগুলো দখল করে রেখেছে। অর্থের ঝনঝনানির কারণে ক্রিকেটাররাও এসব লিগের দিকে ঝুঁকে পড়েছেন। ক্রিকেটার ও ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিকদের আকৃষ্ট করতে প্রাইজমানিও (অর্থ পুরস্কার) দিন দিন বেড়ে চলেছে।
আগামী বুধবার শুরু হতে যাচ্ছে দক্ষিণ আফ্রিকার ঘরোয়া টি–টোয়েন্টি আসর এসএ টোয়েন্টি। টুর্নামেন্ট সামনে রেখে গতকাল প্রাইজমানি ঘোষণা করেছে ক্রিকেট সাউথ আফ্রিকা (সিএসএ)। দক্ষিণ আফ্রিকান মুদ্রায় এবার ৭ কোটি র্যান্ড অর্থ পুরস্কার দেবে প্রোটিয়া বোর্ড, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ৪০ কোটি টাকার কিছু বেশি। সিএসএর এ ঘোষণার মধ্য দিয়ে ফ্র্যাঞ্চাইজি টি–টোয়েন্টি লিগগুলোর সর্বোচ্চ প্রাইজমানির তালিকায় দুইয়ে উঠে এল এসএ টোয়েন্টি। আইপিএলের পরেই এখন এসএ টোয়েন্টির অবস্থান।
বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ঘরোয়া ক্রিকেট প্রতিযোগিতা আইপিএলের সর্বশেষ আসরে রেকর্ড ৬১ কোটি টাকা (৪৬ কোটি ৫০ লাখ রুপি) অর্থ পুরস্কার দিয়েছে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই)।
ক্রিকেট বিষয়ক বিভিন্ন বিশ্বস্ত ওয়েবসাইট থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, সর্বোচ্চ প্রাইজমানিতে এত দিন ৩৯ কোটি টাকা (৫৩ লাখ অস্ট্রেলিয়ান ডলার) পুরস্কার দিয়ে আইপিএলের পরেই অবস্থান ছিল অস্ট্রেলিয়ার বিগ ব্যাশ লিগের। বিগ ব্যাশের চলমান আসরেও এই অর্থ পুরস্কার দেওয়া হবে। কাল ৪০ কোটি টাকা অর্থ পুরস্কার ঘোষণার মধ্য দিয়ে দুইয়ে উঠে এসেছে এসএ টোয়েন্টি, বিগ ব্যাশ নেমে গেছে তিনে।
অর্থবিত্তের দিক থেকে বিসিবি বিশ্বের পঞ্চম ধনী ক্রিকেট বোর্ড হলেও সংস্থাটি আয়োজিত বিপিএল তালিকায় শীর্ষ পাঁচেও নেই। প্রাইজমানির দিক থেকে বিপিএলের অবস্থান নয়ে। ১৯ জানুয়ারি শুরু হবে বিপিএলের দশম আসর। এবারের আসরের প্রাইজমানি এখনো জানায়নি বিসিবি। তাই গত বছর সর্বশেষ আসরে দেওয়া ৪ কোটি টাকা প্রাইজমানিকেই বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। প্রাইজমানির দিক থেকে শীর্ষ ১০ লিগের তালিকায় বিপিএলের পর আছে শুধু শ্রীলঙ্কার ঘরোয়া আসর লঙ্কা প্রিমিয়ার লিগ (এলপিএল)।
বিপিএলের ২০২২ মৌসুমে মোট প্রাইজমানি ছিল ২ কোটি টাকা। সেটা গত বছর দ্বিগুণ বাড়িয়ে ৪ কোটি করা হয়।
কোন টি–টোয়েন্টি লিগে কত প্রাইজমানি
তালিকায় আইপিএল, এসএ টোয়েন্টি, বিগ ব্যাশের পরেই আছে পাকিস্তান সুপার লিগ (পিএসএল)। পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) গত আসরে ৩৮ কোটি টাকা অর্থ পুরস্কার দিয়েছে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (সিপিএল) আছে পাঁচে। এই লিগে মোট ২৩ কোটি টাকা অর্থ পুরস্কার দেওয়া হয়।
এর পরের অবস্থানে থাকা লিগকে চমকই বলতে হবে। ১৪ কোটি টাকা ২০ লাখ টাকা (১৩ লাখ মার্কিন ডলার) অর্থ পুরস্কারে ছয়ে আছে সংযুক্ত আরব আমিরাতের ইন্টারন্যাশনাল লিগ টি–টোয়েন্টি বা আইএল টি–টোয়েন্টি। গত বছর থেকে যাত্রা শুরু করা আইএল টি–টোয়েন্টি এরই মধ্যে বিপিএল কর্তৃপক্ষের জন্য মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই লিগের সূচি বিপিএলের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হওয়ায় এবং বিপিএলের চেয়ে অর্থ পুরস্কার বেশি হওয়ায় বেশির ভাগ বিদেশি ক্রিকেটার বাংলাদেশে আসতে অনীহা প্রকাশ করে আরব আমিরাতে খেলতে যাচ্ছেন। ফলে শীর্ষ সারির বা তারকা ক্রিকেটারের সংকটে ভুগছে বিপিএল।
আইএল টি–টোয়েন্টির পর আছে ইংল্যান্ডের টি–টোয়েন্টি ব্লাস্ট। এ টুর্নামেন্টে মোট ১৩ কোটি ৯০ লাখ টাকা অর্থ পুরস্কার দেওয়া হয়। যদিও টি–টোয়েন্টি ব্লাস্ট ফ্র্যাঞ্চাইজিভিত্তিক টুর্নামেন্ট নয়। এতে অংশগ্রহণ করে ইংল্যান্ড ও ওয়েলসের ১৮টি কাউন্টি ক্লাব। ইসিবির ফ্যাঞ্চাইজি লিগ মূলত দ্য হান্ড্রেড। এই প্রতিযোগিতার প্রাইজমানি ৪ কোটি ১৭ লাখ টাকা। এটি ১০০ বলের সংস্করণ হলেও টি–টোয়েন্টি মর্যাদার।
৮ কোটি ২০ লাখ টাকা অর্থ পুরস্কারে এ তালিকায় আট নম্বরে আছে নিউজিল্যান্ডের একমাত্র ঘরোয়া টি–টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট সুপার স্ম্যাশ।