বাবরকে থামিয়ে সমতা ফেরাল নিউজিল্যান্ড
ওভারপ্রতি লক্ষ্য ছাড়িয়েছে ১০ রান, উইকেটও চলে গেছে ৮টি। তবুও বাবর আজম উইকেটে ছিলেন বলে আশায় ছিল পাকিস্তান। সে আশার সমাধিটা হলো ইস সোধির নিরীহ এক বলে। রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে বল ব্যাটে নিতে পারেননি বাবর, উল্টো ভারসাম্য হারিয়ে পড়লেন স্টাম্পিংয়ের ফাঁদে। ১১৪ বলে ৭৯ রান করা বাবরের সঙ্গে বিদায় নিল পাকিস্তানের জয়ের আশাও। নিউজিল্যান্ডের ২৬১ রান তাড়া করতে নেমে পাকিস্তান থেমে যায় ১৮২ রানে। ৭৯ রানে ম্যাচ জিতে তিন ওয়ানডে সিরিজে ১–১ সমতা আনল নিউজিল্যান্ড।
আগের ম্যাচে ২৫৫ রান তাড়া করা পাকিস্তান এই ম্যাচে খেই হারায় শুরুতেই। ৯ রান তুলতেই বিদায় নেন দুই ওপেনার ফখর জামান ও ইমাম উল হক। তৃতীয় উইকেটে মোহাম্মদ রিজওয়ানকে নিয়ে ধাক্কা সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন বাবর। ২০তম ওভারের শেষ বলে রিজওয়ান আউট হওয়ার আগে জুটিতে ওঠে ৫৫ রান।
৫০ বলে ২৮ রান করে রিজওয়ান আউট হওয়ার পর আর কেউই বাবরকে সঙ্গ দিতে পারেননি। ব্যাটসম্যানদের আসা–যাওয়ার মিছিলে একপ্রান্ত আগলে আশা বাঁচিয়ে রাখছিলেন বাবর। ৮৬ বলে অর্ধশত পূর্ণ করে হাত খোলারও চেষ্টা করেন। তবে খুব বেশি দুর এগোনোর আগেই আটকে যান সোধির স্পিনে। অধিনায়কের ৩ বল পর হারিস রউফের আউটে পাকিস্তানের ইনিংসও থেমে যায় ৪৩ ওভার আর ১৮২ রানে।
এর আগে নিউজিল্যান্ডকে আড়াইশোর্ধ রানের পুঁজি এনে দেন অধিনায়ক উইলিয়ামসন ও ওপেনার ডেভন কনওয়ে। টস জিতে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ওভারেই নাসিম শাহর শিকার ফিন অ্যালেন। অবশ্য শুরুর সেই ধাক্কা দ্বিতীয় উইকেটেই সামলে নেন কনওয়ে-উইলিয়ামসন।
উইকেটে থিতু হয়ে একপর্যায়ে রানের গতিও বাড়াতে শুরু করেন। ২৯.১ ওভার স্থায়ী জুটিতে এ দুজনের কাছ থেকে ১৮১ রান পায় নিউজিল্যান্ড। ৯২ বলে ১০১ রান করা কনওয়েকে বোল্ড করে বিপজ্জনক হয়ে ওঠা জুটিটি ভাঙেন নাসিম।
উইলিয়ামসনও এগোচ্ছিলেন তিন অঙ্কের দিকে। তবে মোহাম্মদ নওয়াজের দারুণ এক ডেলিভারিতে বোল্ড হয়ে যান ৮৫ রানে। এর আগে ওভারে তিন বলের মধ্যে ড্যারিল মিচেল আর টম ল্যাথামকেও তুলে নেন নওয়াজ। ১ উইকেটে ১৮৩ থেকে নিউজিল্যান্ডের স্কোরবোর্ড পরিণত হয় ৫ উইকেটে ২০১ রানে।
মারমুখী হওয়ার মুহূর্তে মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানদের হারানোর পর নিউজিল্যান্ডের ইনিংস আর ডানা মেলতে পারেনি। মিচেল স্যান্টনার ছাড়া আর কারও ব্যাট থেকে দুই অঙ্কের ইনিংস আসেনি। শেষ উইকেট হিসেবে রান আউট হওয়ার আগে ৪০ বলে ৩৭ রান করেন স্যান্টনার। ৪৯.৫ ওভারে নিউজিল্যান্ডের ইনিংস থামে ২৬১ রানে।
পাকিস্তানের পক্ষে ৩৮ রানে ৪ উইকেট নেন নওয়াজ। ৫৮ রানে ৩ উইকেট নাসিমের। এ নিয়ে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের প্রথম পাঁচ ম্যাচে ১৮ উইকেট নিলেন পাকিস্তানের ১৯ বছর বয়সী পেসার। আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে প্রথম ৫ ম্যাচে এটিই সবচেয়ে বেশি উইকেটের রেকর্ড। পেছনে ফেলেছেন অস্ট্রেলিয়ার রায়ান হ্যারিসের নেওয়া ১৭ উইকেটের কীর্তি।
তবে রেকর্ড গড়ার ম্যাচে নাসিমকে মাঠ ছাড়তে হয়েছে দলের হার নিয়ে, যা ওয়ানডে ক্যারিয়ারে তাঁর নিজেরও প্রথম হার।
তিন ওয়ানডে সিরিজের শেষ ম্যাচ শুক্রবার করাচিতে।