শুধুই ফর্মেই নয়, দলে ফেরার লড়াই-ও মোস্তাফিজের
মোস্তাফিজুর রহমানের কাটারের বিষে নীল হচ্ছেন ব্যাটসম্যান—সাদা বলের ক্রিকেটে নিয়মিতই ছিল এমন দৃশ্য। তবে সম্প্রতি মোস্তাফিজের কিছুই যেন আর ঠিক হচ্ছে না। ত্রিদেশীয় সিরিজের প্রথম ম্যাচে ৪ ওভারে রান দিয়েছেন ৪৮, পাননি কোনো উইকেট। এর আগে এশিয়া কাপে দুটি ম্যাচ খেলে পেয়েছেন মাত্র ১টি উইকেট।
তবে ত্রিদেশীয় সিরিজে পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচে তাঁর বাজে পারফরম্যান্সের পর সমালোচনা হয়েছে অনেক। সম্প্রতি বল হাতে মোস্তাফিজের সংগ্রামের উদাহরণ অবশ্য এটিই প্রথম নয়।
গত এক বছরের পারফরম্যান্সও খুব একটা পক্ষে নেই। আজ স্বাগতিক নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ত্রিদেশীয় সিরিজে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে একাদশে জায়গা হয়নি মোস্তাফিজের। বিশ্বকাপের আগে বাংলাদেশের বড় দুর্ভাবনার নামও এখন বাঁহাতি এই পেসার।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আবির্ভাবের শুরুর দিকে প্রতিপক্ষ ব্যাটসম্যানদের জন্য আতঙ্ক হয়ে ওঠা মোস্তাফিজের গত এক বছরের পারফরম্যান্স তাঁর নামের প্রতি মোটেই সুবিচার করতে পারছে না। এক বছরে ম্যাচ প্রতি তাঁর উইকেটের গড় ১–এরও নিচে। আর এ সময়ে ওভারপ্রতি রান দিয়েছেন ৮.৬৬ করে।
চলতি বছরে খেলা ১১ টি–টোয়েন্টির মধ্যে ৫টিতেই উইকেটশূন্য ছিলেন মোস্তাফিজ। আর ম্যাচে দুইয়ের বেশি উইকেট পান না ১৮ ম্যাচ হয়ে গেছে। প্রতিপক্ষ ব্যাটসম্যানদের মনে আগের সেই আতঙ্কও এখন আর ছড়াতে পারছেন না, যা বিশ্বকাপের আগে গুরুত্বপূর্ণ সময়ে শেষ পর্যন্ত মোস্তাফিজকে দলের বাইরেই ঠেলে দিল।
বিশ্বকাপের আগে ত্রিদেশীয় এই সিরিজ বংলাদেশের জন্য প্রস্তুতির সবচেয়ে বড় মঞ্চ। দলের সেরা তারকারাও স্বাভাবিকভাবে এই সিরিজকে প্রস্তুতির জন্য পাখির চোখ করার কথা। আর এমন একটি সিরিজে দলের অন্যতম সেরা পেসারকেই কিনা ছন্দহীনতার কারণে দলের বাইরে রাখতে হচ্ছে বাংলাদেশকে।
সর্বশেষ আরব আমিরাতের বিপক্ষে সিরিজেও অবশ্য দলের বাইরে ছিলেন মোস্তাফিজ। তবে সেটিকে বিশ্রাম হিসেবে ধরেও নেওয়া হয়। এ ম্যাচটিকে তেমন ভেবে নেওয়া কঠিনই।
অবশ্য এমন নয় যে বাজে পারফরম্যান্সের কারণে এই প্রথম দল থেকে বাদ পড়লেন মোস্তাফিজ। গত চার বছরে এর আগে বেশ কয়েকবারই দলের বাইরে ছিটকে গেছেন তিনি।
বাস্তবতা হচ্ছে, পেসবান্ধব উইকেটে মোস্তাফিজ এখন আর কার্যকারিতা দেখাতে পারছেন না। মিরপুরের স্পিন–সহায়ক এবং অনিয়মিত বাউন্সের উইকেটে মোস্তাফিজ যতটা স্বচ্ছন্দ, পেস–সহায়ক উইকেটে তার ঠিক উল্টো।
এমন পরিস্থিতিতে তাঁকে শুধু নামের কারণে খেলানোও কঠিন হয়ে উঠেছে। কারণ, তাঁর এমন ছন্দহীনতার জন্য দলকেও বেশ ভুগতে হচ্ছে। পাকিস্তানের বিপক্ষে দলের আরও ভালো করার যে সম্ভাবনা জেগেছিল, সেটা মিলিয়ে গেছে মোস্তাফিজের করা ৪ ওভারে!
ছন্দহীনতার পরও বাংলাদেশ দলে জায়গাটা নিশ্চিতই ছিল মোস্তাফিজের। তবে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে পেলেন ভিন্ন এক বার্তা। এখন তাঁর লড়াইটা শুধু ছন্দে ফেরারই নয়, দলে ফেরারও বটে।
শুধু মোস্তাফিজই নন, তাঁর সঙ্গে এই ম্যাচ বাদ পড়েছেন সাব্বির রহমান। সাব্বিরের দলে ফিরে আসা যতটা চমকজাগানো ছিল, বাদ পড়া অতটা নয়।। বরং বাদ না পড়াটাই হতো অস্বাভাবিক। তিন বছর পর দলে ফিরে চারটি ম্যাচ খেলে তাঁর রান মাত্র ৩১!