২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

মিরাজের সঙ্গে কী কথা হয়েছিল লিটনের

সেঞ্চুরি করে আউট হয়ে ফেরার পথে লিটনকে অভিবাদন জানিয়েছেন পাকিস্তানের উইকেটকিপার মোহাম্মদ রিজওয়ানএএফপি

জয় থেকে তখনো ১০ রানের বেশি দূরত্বে বাংলাদেশ। ক্রিজে বাংলাদেশের ক্রিকেটের দুই অভিজ্ঞতম মুশফিকুর রহিম ও সাকিব আল হাসান। বাংলাদেশের জয় নিশ্চিত বুঝেই সম্ভবত ধারাভাষ্য কক্ষ থেকে পরিসংখ্যানটি জানিয়ে দেন পাকিস্তান নারী দলের সাবেক অধিনায়ক ও ধারাভাষ্যকার উরুজ মুমতাজ। প্রথম ইনিংসে ২৬ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে টেস্ট জয়ের এটাই নাকি প্রথম নজির!

পরিসংখ্যানটি ঠিক না ভুল, তা নির্ণয়ের দায়িত্ব ক্রিকেট পরিসংখ্যানবিদদের। কিন্তু রাওয়ালপিন্ডিতে অমন ধ্বংসস্তূপ থেকে বাংলাদেশের টেস্ট জয় নিশ্চিতভাবেই দেশের ক্রিকেটে সেরা সাফল্যগুলোর একটি। আরেকটু জোরালো গলায়ও বলা যায়, পাকিস্তানকে বাংলাদেশের ২–০ ব্যবধানে ধবলধোলাইয়ের পেছনে বেশ বড় অবদান ৬ উইকেটে ২৬–এর ধ্বংসস্তূপে দাঁড়িয়ে লিটন দাসের ১৩৮ রানের ইনিংসশৈলী।

মেহেদী হাসান মিরাজের ৭৮ রানের ইনিংসটিকে এতটুকু ছোট না করে বলাই যায়, লিটনের অমন ব্যাটিংয়ে পাকিস্তানের প্রথম ইনিংস থেকে মাত্র ১২ রানে পিছিয়ে ছিল বাংলাদেশ। যে কারণে পাকিস্তান তাঁদের দ্বিতীয় ইনিংসে ১৭২ রানে অলআউট হওয়ায় বাংলাদেশের জয়ের লক্ষ্য (১৮৫ রান) ছিল নাগালের মধ্যেই।

১৩৮ রানের ইনিংসটি খেলার পথে দারুণ কিছু শট খেলেন লিটন
এএফপি

রাওয়ালপিন্ডিতে আজ দ্বিতীয় টেস্টে সাকিব–মুশফিক বাংলাদেশকে ৬ উইকেটে জেতানোর পর মাঠেই প্রতিক্রিয়া জানিয়ে লিটন বলেছেন, ‘বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের জন্য বড় অর্জন। খুব ভালো লাগছে।’

লিটনের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল বাংলাদেশ প্রথম ইনিংসে ২৬ রানে ৬ উইকেট হারানোর পর মেহেদী হাসান মিরাজকে সঙ্গে নিয়ে কীভাবে (১৬৫ রানের জুটি) ঘুরে দাঁড়ালেন? কী কথা হয়েছিল দুজনের মধ্যে? লিটনের উত্তর, ‘মিরাজকে কৃতিত্ব দিতেই হবে। সে যেভাবে খেলেছে, অন্তত প্রথম ২০টি বল। তখন আমি (হাতে) আঘাত পেয়েছিলাম। আমাদের মধ্যে কথা হয়েছে, মোমেন্টাম তাদের পক্ষে ছিল, এটা নষ্ট করতে হবে। তারপর কী হয়, দেখা যাবে।’

সিরিজ জয়ে দলের সবাইকেই কৃতিত্ব দিয়েছেন ম্যাচসেরা লিটন, ‘এটা দলীয় খেলা। জিততে চাইলে ব্যাটিং, বোলিং ও ফিল্ডিংয়ে ভালো করতে হবে। প্রথম টেস্টে জাকির দুটো ক্যাচ নিয়েছে...এভাবে আমরা মোমেন্টাম পেয়েছি। দ্বিতীয় টেস্টে প্রথম সেশন বাদে আমরা ব্যাটিং, বোলিং ও ফিল্ডিংয়ে ভালো করেছি।’

প্রথম ইনিংসে পাকিস্তানের মুঠো ফসকে বাংলাদেশ কীভাবে বেরিয়ে গেল, সেটাও বলেছেন লিটন, ‘আমি ও মিরাজ লম্বা সময় ব্যাটিং করতে চেয়েছি। সে চার ও ছক্কা মারার পর মোমেন্টাম বদলে যায়।’ পেসার হাসান মাহমুদের (৫১ বলে ১৩) সঙ্গে ১৫০ বলে ৬৯ রানের জুটি নিয়ে বলেছেন, ‘অসাধারণ ব্যাটিংয়ের জন্য হাসানকে কৃতিত্ব দিতেই হবে।’ দুই ম্যাচের এই সিরিজে ভালো কিপিং করেছেন লিটনও। তা নিয়ে বলেছেন, ‘টেস্টে কিপিং করতে পছন্দ করি। এটাই আমার কাজ এবং আমি যখন ভালো করি, তখন দলও ভালো করে।’

পাকিস্তান সফরে যাওয়ার সময় দেশে ছাত্র বিক্ষোভ দেখে গিয়েছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। সেই বিক্ষোভ শেষে সরকার পতনের পর পরিস্থিতি এখন শান্ত হওয়ার দিকে। লিটন বলেছেন, ‘আমরা যখন এখানে আসি, দেশে পরিস্থিতি ভালো ছিল না। কিন্তু আমরা এখানে এসে কঠোর অনুশীলন করেছি। এটা সম্পূর্ণই দলীয় প্রচেষ্টার ফসল। কোচিং স্টাফকেও কৃতিত্ব দিতে হবে। এই গরমে খেলাটা সহজ নয়।’