আইপিএলই রুটের জন্য অ্যাশেজের ‘ভালো প্রস্তুতি’

আইপিএলে প্রথম ১০ ম্যাচ বেঞ্চে কাটিয়েছেন জো রুটবিসিসিআই

রাজস্থান রয়্যালসের হয়ে আইপিএলের এ মৌসুমের প্রথম ১০ ম্যাচ বেঞ্চে বসেই কাটাতে হয়েছে জো রুটকে। জস বাটলার, শিমরন হেটমায়ার, জেসন হোল্ডার, অ্যাডাম জ্যাম্পা, ট্রেন্ট বোল্টদেরই ঘুরিয়ে ফিরিয়ে খেলিয়েছে দলটি। রাজস্থানের সবশেষ তিন ম্যাচে রুট খেলেছেন ঠিকই। এর মধ্যে দুই ম্যাচে ব্যাটিংয়ের সুযোগ পাননি। ৫৯ রানে গুটিয়ে যাওয়া অন্য ম্যাচে ১৫ বলে করেছেন ১০ রান। প্লে-অফের আশা প্রায় শেষ রাজস্থানের। দেখে মনে হবে আইপিলে সে অর্থে সময়টা ‘ফলপ্রসূ’ হয়নি রুটের।

এবার অন্য একটি চিত্র। মাসখানেক পরই অ্যাশেজ। রুট ইংল্যান্ডের টেস্ট দলের সেরা ব্যাটসম্যান। দেশটির ঘরোয়া প্রথম শ্রেণির টুর্নামেন্ট কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশিপে রুটের দল এ সময়ের মাঝে খেলবে চারটি লাল বলের দীর্ঘ সংস্করণের ম্যাচ। আইপিএলে এমন ‘নিষ্ফলা’ সময় কাটানোর বদলে অ্যাশেজের আগে ঘরোয়া প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলাটাই কি বেশি কার্যকরী হতো না রুটের জন্য? এমন আলোচনা স্বাভাবিকভাবেই উঠেছে।

কিন্তু রুটের মতে, এমন আলোচনা আসলে ওঠা উচিৎ নয়। কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশিপ নয়, আইপিএলে সময় কাটানোটাই তাঁর কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কেন গুরুত্বপূর্ণ, ইএসপিএনক্রিকইনফোকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে রুট ব্যাখ্যা করেছেন সেটিই, ‘এটা আসলে সহজই। ইয়র্কশায়ারের হয়ে খেলা আমি ভালোবাসি, এটা বলেই শুরু করি। কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশিপও ভালোবাসি। যুক্তরাজ্যে এটিই আমাদের খেলার ভিত্তি। খেলোয়াড় গড়ে তুলতেও এর প্রভাব অনেক। তবে এখন আমি নিজের খেলা ও এর উন্নতিতে যে অবস্থায় আছি, ৩২ বছর বয়সে প্রথমবারের মতো এমন অভিজ্ঞতা পাওয়ার পর মনে হয় দীর্ঘ মেয়াদে কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশিপ ম্যাচের চেয়ে এতেই আমি বেশি লাভবান হব। নিজের সম্পর্কে অনেক কিছু শিখতে পারি এখানে।’

নিজের সম্পর্কে অনেক কিছু শিখতে পারি এখানে।
জো রুট, আইপিএলে খেলা প্রসঙ্গে

রুট এরপর বলেছেন, ‘(কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশিপে ইয়র্কশায়ারের) সূচির দিকে তাকান—একটা ম্যাচ বৃষ্টিতে ভেসে গেছে, একটা বৃষ্টিবিঘ্নিত হয়ে ড্র হয়েছে। এটা কি সত্যিই আমাকে অ্যাশেজ সিরিজের জন্য প্রস্তুত করবে? নাকি বিশ্বকাপের ছয় মাস আগে ভারতে এমন অভিজ্ঞতা অর্জন, তা–ও এমন কন্ডিশনে, সব খেলোয়াড়দের সঙ্গে কথা বলা, মূলত টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট নিয়ে যতটা পারি শেখার চেষ্টা করা, আর সব মিলিয়ে এই খেলা নিয়েই বেশ ভালো আলোচনা করা—এগুলো আমাকে ভালো খেলোয়াড় বানাবে আরও? আমার তো তাই মনে হয়।’

রুট বলেছেন, আইপিএলে কুমার সাঙ্গাকারার সঙ্গে লম্বা সময় আলোচনা করতে পারছেন তিনি। আলাপ করতে পেরেছেন ব্রায়ান লারার সঙ্গেও। আইপিএলে আপাতদৃষ্টে অলস সময় কাটালেও তাই রুটের এসব কাজে লাগবে বলেই বিশ্বাস, ‘আর আমার মনে হয়, আমি প্রস্তুত হয়েই ফিরব। টেস্ট ক্রিকেটে ঝাঁপ দিতে রোমাঞ্চিত থাকব, অ্যাশেজ ক্রিকেটের দারুণ এক মৌসুম হতে যাচ্ছে। এমনি এমনি এমন করেছি, তা কিন্তু নয়। আমার মনে হয়েছে এতে বাড়তি কিছু পাওয়ার আছে। আর এ অভিজ্ঞতা যদি ঠিকঠাক কাজে লাগাই, তাহলে আমি সত্যিই ভালো একটা অবস্থানে ফিরতে পারব, যেখানে আমার জ্ঞান আরও বেশি থাকবে।’

নিয়মিত খেলার সুযোগ না পেলেও আইপিএলে সময়টা উপভোগ করছেন জো রুট
এএফপি

আইপিএলে এবারই প্রথম খেলার সুযোগ পেলেন রুট। ভিত্তিমূল্য ১ কোটি রুপিতে তাঁকে দলে নেয় রাজস্থান। গত ফেব্রুয়ারিতে সবশেষ দীর্ঘ সংস্করণে খেলা রুট বলছেন, আইপিএলে না গেলেও হয়তো খুব বেশি ম্যাচ এ সময়ের মধ্যে খেলতেন না তিনি, ‘এমনিতে মোটের ওপর সূচি খেয়াল করুন। সব সময় অনেক অনেক খেলা হচ্ছে। হয়তো এই দুই মাস ছুটি হিসেবেও কাজে লাগানো যেত। আমি হয়তো খুব বেশি ম্যাচ এমনিতেও খেলতাম না।’

তবে কীভাবে প্রস্তুতি নিলেন বা সময় কাটালেন, সেটির চেয়েও খেলোয়াড়ের পারফরম্যান্স গুরুত্বপূর্ণ, রুট মনে করিয়ে দিয়েছেন সেটিও, ‘আপনি তো চাইলে যেকোনো কিছুর দিকে পেছন ফিরেই বলতে পারেন, “আচ্ছা, তুমি যদি এটি তখন না করতে, সেটি না করতে, তাহলে হয়তো এখানে ভালো করতে পারতে।” তাতে আসলে কিছু যায় আসে না। বড় ম্যাচগুলোতে আপনি কীভাবে নামছেন, পারফর্ম করছেন সেটিই ব্যাপার। আর আপনাকে বিচারও করা উচিৎ সেসব দিয়েই।’