বাংলাদেশকে সুপার এইটে যেতে এড়াতে হবে ‘চরম বাজে’ দিন
গতকাল রাতে নামিবিয়াকে হারানোর পর অস্ট্রেলিয়ার কাছে স্কটল্যান্ডের হারের আশায় ছিল ইংল্যান্ড। সেন্ট লুসিয়ায় অস্ট্রেলিয়াকে চ্যালেঞ্জ জানালেও শেষ পর্যন্ত পেরে ওঠেনি স্কটিশরা। সুপার এইটের খুব কাছে গিয়েও ফিরতে হয়েছে দলটিকে। তাদের এই হারে সপ্তম দল হিসেবে শেষ আট নিশ্চিত হয়েছে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডের।
সুপার এইটে গ্রুপ ‘২’-এ যুক্তরাষ্ট্র, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে খেলবে ইংল্যান্ড। গ্রুপ ‘১’-এ যাওয়া ভারত, অস্ট্রেলিয়া ও আফগানিস্তান আছে চতুর্থ দলের অপেক্ষায়। সে দলটি হতে পারে বাংলাদেশ বা নেদারল্যান্ডস। প্রথম পর্বের গ্রুপ ‘ডি’ থেকে দক্ষিণ আফ্রিকা উঠেছে। তবে শ্রীলঙ্কা ও নেপালের সম্ভাবনা নেই।
বাংলাদেশের সুপার এইটে ওঠার ভাগ্য নিজেদের হাতেই আছে। সমীকরণটা সরল—নেপালের বিপক্ষে হার এড়ালেই চলবে। বৃষ্টি বা কোনো কারণে ম্যাচ পরিত্যক্ত হলেও বাংলাদেশই যাবে সুপার এইটে। তবে আগের ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে মাত্র ১ রানে হারা নেপাল যদি অঘটন ঘটায়ও, এরপরও বেশ জোরালো সম্ভাবনা থাকবে বাংলাদেশের।
সেদিক থেকে নেদারল্যান্ডসের কাজটা কঠিন। তাদের সুপার এইটে যেতে আগামীকাল নেপালের কাছে তো বাংলাদেশকে হারতে হবেই, সেন্ট লুসিয়ায় শ্রীলঙ্কাকেও ডাচদের হারাতে হবে মোটামুটি বড় ব্যবধানে। বাংলাদেশ যদি নেপালের কাছে হারে, ওদিকে শ্রীলঙ্কাকে হারায় নেদারল্যান্ডস—তখন বাংলাদেশ ও নেদারল্যান্ডসের পয়েন্ট সমান হবে। গ্রুপ ‘ডি’-এরও টাইব্রেক হবে তখন গ্রুপ ‘বি’-র মতো—নেট রানরেটে।
গ্রুপ পর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচের আগে নেদারল্যান্ডসের (-০.৪০৮) চেয়ে অবশ্য নেট রানরেটে এগিয়ে আছে বাংলাদেশ (০.৪৭৮)। মানে দুই দলের নেট রানরেটের পার্থক্য প্রায় ০.৮৮৬।
কিংসটাউনে আগের ম্যাচে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ১৫৯ রান করেছিল বাংলাদেশ। ধরা যাক, নেপালের সঙ্গে আগে ব্যাটিং করে ২০ ওভারে ১৫০ রান করল বাংলাদেশ। নেপাল সেটি টপকে গেল ১৯ ওভারের মধ্যে। তখন বাংলাদেশের নেট রানরেট নেমে আসবে ০.২৬৬-এ।
অন্যদিকে এখন পর্যন্ত ২০ ওভারে সর্বোচ্চ ১৩৪ রান তোলা নেদারল্যান্ডস যদি শ্রীলঙ্কার সঙ্গে আগে ব্যাটিং করে ১৭০ রানও তোলে, এরপর ম্যাচটি জেতে ২০ রানে (দুই দলই ২০ ওভার ব্যাটিং করবে ধরে নিয়ে), তখনো ডাচদের নেট রানরেট থাকবে -০.০৫০-এর মতো। মানে সেই সমীকরণেও এগিয়ে থাকবে বাংলাদেশই।
টুর্নামেন্টে এখন পর্যন্ত সর্বনিম্ন ১০৯ রান করেছে বাংলাদেশ, দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে নিউইয়র্কে। সে পিচের ধরন বেশ ভিন্ন ছিল। এরপরও যদি ধরে নেওয়া হয়, নেপালের সঙ্গেও ২০ ওভারে ১০৯ রান তুলবে বাংলাদেশ আর নেপাল সেটি পেরিয়ে যাবে ১৫ ওভারে (যদিও এখন পর্যন্ত নেপাল ২০ ওভার ব্যাটিং করে তুলেছে সর্বোচ্চ ১১৪ রান), তাহলে বাংলাদেশের নেট রানরেট নেমে আসবে ০.০৫৯-এ। মানে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে একেবারে বাজে ব্যাপারটি ঘটলে আর ওদিকে নেদারল্যান্ডস শ্রীলঙ্কাকে গুঁড়িয়ে দিলেই শুধু নেট রানরেটে পিছিয়ে পড়বে বাংলাদেশ।
অবশ্য এ ক্ষেত্রেও বাংলাদেশের ১০৯ রান টপকাতে যদি নেপাল ১৮ ওভারও ব্যাটিং করে, আর ওদিকে নেদারল্যান্ডস শ্রীলঙ্কাকে ৩০ রানেও হারায়—এরপরও নেট রানরেটে ডাচদের চেয়ে এগিয়ে থাকবে বাংলাদেশ।
ফলে সব মিলিয়ে বলা যায়, নেপালের বিপক্ষে ব্যাটিং-বোলিং দুটিতেই চরম বাজে দিন না এলে মোটামুটি নেদারল্যান্ডসকে টপকে সুপার এইটে যাওয়ার সম্ভাবনা বাংলাদেশের বেশ জোরালো।
বাংলাদেশ ও নেপালের ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় ৫টা ৩০ মিনিটে, নেদারল্যান্ডস ও শ্রীলঙ্কার ম্যাচটি এক ঘণ্টা পর। দুটি ম্যাচই ঠিকঠাক সময়ে শুরু হলে নেদারল্যান্ডস সমীকরণটা হয়তো জেনে যেতে পারে শেষ সময়ে গিয়ে, তবে সেটিও খুব বেশি পার্থক্য গড়তে পারবে কি না—প্রশ্ন সেটিই।