সেমিফাইনালের আগে আফগান-স্পিন পরীক্ষায় জিতল দক্ষিণ আফ্রিকা
দক্ষিণ আফ্রিকার সেমিফাইনাল নিশ্চিত হয়েছে আগেই। আহমেদাবাদে আজ আফগানিস্তানের বিপক্ষে লিগ পর্বের শেষ ম্যাচটা ছিল প্রোটিয়াদের দলের সমন্বয় নিয়ে পরীক্ষা–নিরীক্ষার সুযোগ। জয়ে সেমিফাইনালের আগে আত্মবিশ্বাস আরও বাড়িয়ে নেওয়ার সুযোগ ছিল এই ম্যাচ। আফগানদের বিপক্ষে ৫ উইকেটের জয়ে দুটিই অর্জন করল প্রোটিয়ারা। আফগানিস্তানকে ২৪৪ রানে থামিয়ে ৪৭.৩ ওভারে ৫ উইকেট হাতে রেখে লক্ষ্য টপকে গেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। অপরাজিত ৭৬ রান করে ম্যাচসেরা রেসি ফন ডার ডুসেন।
স্কোরবোর্ডে রান থাকলে আফগানিস্তান বরাবরই ভয়ংকর প্রতিপক্ষ। আজ জিতলেও দক্ষিণ আফ্রিকা সেটি টের পেয়েছে। রান তাড়ায় কুইন্টন ডি কক ও টেম্বা বাভুমা উদ্বোধনী জুটিতে ৬৪ রান যোগ করলেও আফগান-স্পিন প্রোটিয়াদের স্বস্তি দেয়নি। পাওয়ার প্লেতে ৫৪ রান তোলার পরের ওভারেই প্রোটিয়া অধিনায়ক বাভুমাকে (২৩) ক্যাচ বানান স্পিনার মুজিব উর রহমান। ১১তম ওভারের সে ধাক্কা কাটিয়ে ওঠার আগেই ১৪তম ওভারে ডি কক আউট। আরেক স্পিনার মোহাম্মদ নবীর বলে ৪১ রান করে এলবিডব্লু হন ডি কক।
মাঝের ওভারে থিতু হয়ে আউট হয়েছেন এইডেন মার্করাম (২৫) ও হাইনরিখ ক্লাসেন (১০)। আফগান স্পিন ত্রয়ীর আরেক সদস্য রশিদ খানের বলে দুজনই আউট হন। তিনে নামা রেসি ফন ডার ডুসেন টিকে থাকায় রক্ষা। মার্করামের সঙ্গে ৬০ বলে ৫০ রানের জুটি গড়ার পর ডেভিড মিলারের সঙ্গে আরও ৪৩ রান যোগ করেন ডুসেন। মার্কো ইয়ানসেনের জায়গায় আজকের ম্যাচে সুযোগ পাওয়া আরেক অলরাউন্ডার আন্দিলে ফিকোয়াওকে নিয়ে বাকি পথটা পাড়ি দেন ডুসেন। দুজন মিলে ষষ্ঠ উইকেটে ৬২ বলে অবিচ্ছিন্ন ৬৫ রানের জুটি গড়েন। ডুসেন ৯৫ বলে ৬টি চার ও ১টি ছক্কায় অপরাজিত ৭৬ রান করেন। ফিকোয়াওর ব্যাট থেকে এসেছে ৩৭ বলে ৩৯ রান। আফগানিস্তানের হয়ে ২টি করে উইকেট নিয়েছেন নবী ও রশিদ।
এর আগে আফগানিস্তানের ইনিংসটা একাই টেনেছেন অলরাউন্ডার আজমতউল্লাহ ওমরজাই। টসে জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া আফগানিস্তান ১১৬ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে বসে। ওমরজাই লড়াই শুরু করেন তখনই। সেখান থেকে নিচের সারির ব্যাটসম্যানদের সঙ্গে ছোট ছোট জুটি গড়ে আফগানদের রানটা নিয়ে যান ২৪৪-এ। ওমরজাইয়ের ক্যারিয়ার সেরা অপরাজিত ৯৭ রান ছিল আফগান ইনিংসের মেরুদণ্ড।
এর আগে ভালো শুরু পেয়েও সেটি কাজে লাগাতে পারেনি আফগানরা। আফগান ব্যাটিংয়ের মূল শক্তি দুই ওপেনার রহমানউল্লাহ গুরবাজ (২৫) ও ইব্রাহিম জাদরান (১৫) প্রথম উইকেট জুটিতে ৪১ রান যোগ করেন। কিন্তু দুজনের একজনও লম্বা ইনিংস খেলতে পারেননি। ৪১ রানেই দুই ওপেনার আউট হন। দলের রান যখন ৪৫, তখন অধিনায়ক হাশমতউল্লাহ শহীদ ড্রেসিংরুমে ফিরে যান। ইকরাম আলিখিল, মোহাম্মদ নবীও টিকতে পারেননি।
পাঁচে নামা ওমরজাই এরপর রহমত শাহ, রশিদ খান ও নুর আহমেদের সঙ্গে তিনটি জুটি গড়ায় আফগানিস্তানের ইনিংস ৫০ ওভার গড়ায়। দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে সর্বোচ্চ ৪ উইকেট নিয়েছেন জেরাল্ড কোয়েটজি। ২টি করে উইকেট নিয়েছেন লুঙ্গি এনগিডি ও কেশব মহারাজ।
৯ ম্যাচে ১৪ পয়েন্ট নিয়ে তালিকার দুইয়ে থেকে লিগপর্ব শেষ করল দক্ষিণ আফ্রিকা। ৯ ম্যাচ ৮ পয়েন্টে ষষ্ঠস্থান নিয়ে বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিল আফগানিস্তান।