২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

বিগ ব্যাশে নেসারের অদ্ভুত ক্যাচ নিয়ে বিতর্ক

বিগ ব্যাশে অদ্ভুত এক ক্যাচ নিয়েছেন মাইকেল নেসারসেভেন ক্রিকেট

বিগ ব্যাশ লিগে মাইকেল নেসারের নেওয়া একটি ক্যাচ নিয়ে তৈরি হয়েছে বিতর্ক। অবশ্য ক্রিকেটের আইনে নেসারের ক্যাচটি বৈধ, সেটি নিতে দারুণ দক্ষতা ও উপস্থিত বুদ্ধির পরিচয়ই দিয়েছেন তিনি।

আজ সিডনি সিক্সারসের বিপক্ষে ব্রিসবেন হিটের ম্যাচে ঘটেছে এ ঘটনা। ব্রিসবেনের দেওয়া ২২৫ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিং করছিল সিডনি। শেষ ২ ওভারে সিডনির প্রয়োজন ছিল ৩৩ রান। মার্ক স্টিকিটির করা ১৯তম ওভারের প্রথম বৈধ বলে ছক্কা মারেন সিল্ক, ১১ বলে তখন দরকার ২৪ রান। পরের বলটি ছিল অফ স্টাম্পের বাইরে ফুল লেংথে, এক্সট্রা কাভারের ওপর দিয়ে তুলে মারেন সিল্ক।

নেসার ক্যাচটি নিয়েছিলেন বাউন্ডারির বেশ ভেতরেই, তবে ভারসাম্য রাখতে না পেরে বেরিয়ে যান। বাউন্ডারি পেরোনোর আগেই অবশ্য হাত থেকে ছুড়ে দেন বল। এখনকার সময়ে বাউন্ডারির বাইরে যাওয়ার আগে এভাবে বল ছুড়ে দিয়ে ফিরে এসে ক্যাচ সম্পন্ন করার ঘটনা নতুন নয় মোটেও। তবে নেসার বল ছুড়ে দিলেও সেটি বাউন্ডারির ভেতরে রাখতে পারেননি।

নেসার এরপর বাউন্ডারির বাইরেই বলকে অনুসরণ করেন। বাইরে গিয়ে একটা লাফ দিয়ে বলটা নেন, পা শূন্যে থাকা অবস্থাতেই ছুড়ে মারেন আবার। এবার বল আসে বাউন্ডারির ভেতরে, ফিরে এসে ক্যাচ সম্পন্ন করেন। তাঁর নেওয়া অদ্ভুত ক্যাচের পর সরব হন টুইটার ব্যবহারকারীরা। আম্পায়ার সিল্ককে আউট দেন, শেষ পর্যন্ত গ্যাবায় হয়ে যাওয়া ম্যাচটি ব্রিসবেন জেতে ১৫ রানে।

নেসারের নেওয়া ক্যাচটি কেন আইনসিদ্ধ, সেভেন ক্রিকেটের ধারাভাষ্যে সেটি ব্যাখ্যা করেন চোটের কারণে বাইরে থাকা অস্ট্রেলিয়া অলরাউন্ডার গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। পরে এ নিয়ে টুইট করে ক্রিকেটের আইনপ্রণেতা সংস্থা মেরিলিবোন ক্রিকেট ক্লাব বা এমসিসিও।

ক্রিকেট আইনের ১৯.৫.২ ধারা অনুযায়ী, একজন ফিল্ডার তখনই বাউন্ডারির বাইরে চলে গেছেন বলে বিবেচ্য হবেন, যদি বোলার ডেলিভারির পর সে ফিল্ডারের চূড়ান্ত স্পর্শ বাউন্ডারির ভেতরে পুরোপুরি না হয়। ফিল্ডার বাউন্ডারির বাইরে চলে গেলে ক্যাচ হবে না। এ ধারার ব্যাখ্যায় এমসিসি তাদের টুইটে বলেছে, এখানে মূল ব্যাপার দুটি।

প্রথমটি হচ্ছে, বলের সঙ্গে বোলারের প্রথম স্পর্শ বাউন্ডারির ভেতরে হতে হবে। বাউন্ডারির বাইরে গিয়ে পা মাটিতে রেখে ফিল্ডার বল ছুঁতে পারবেন না। নেসার প্রথমবার বাউন্ডারির ভেতরেই বল স্পর্শ করেছেন, দ্বিতীয়বার স্পর্শ করার সময় তাঁর পা শূন্যে ছিল, শেষবার ক্যাচ নেওয়ার সময়ে তিনি বাউন্ডারির ভেতরেই ছিলেন।

আইনের দিক থেকে নেসারের ক্যাচটি শুধু বৈধ নয়, স্কিলের দিক দিয়েও দুর্দান্তই। অবশ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কারও কারও মত, বল বাউন্ডারির বাইরে গিয়ে ধরলেই (পা শূন্যে থাকা অবস্থাতেও) সেটিকে ছয় হিসেবে গণ্য করা উচিত।

বিগ ব্যাশে এমন ক্যাচ অবশ্য একেবারেই নতুন নয়। ২০২০ সালে হোবার্ট হারিকেনের বিপক্ষে ম্যাচে এমন করেছিলেন ব্রিসবেনেরই ম্যাট রেনশ। ম্যাথু ওয়েড সেবার ওয়াইড লং অন দিয়ে তুলে মেরেছিলেন বেন কাটিংকে। বাউন্ডারির ভেতরে বল নিয়ে ছুড়ে দিয়েছিলেন রেনশ, তবে বলে গিয়েছিল বাউন্ডারি সীমানার উল্টো দিকে। সেদিকে গিয়ে শূন্যে উঠে হাত দিয়ে ঠেলে বল বাউন্ডারির ভেতরে পাঠিয়েছিলেন রেনশ, যেখানে ছিলেন টম ব্যান্টন।

রেনশ সেবার ব্যান্টনকে সহায়তাকারী হিসেবে পেয়েছিলেন। নেসার এবার পুরো কাজটি করেছেন একাই। নেসারের ক্যাচটির মাহাত্ম্য তাই বেড়ে যাচ্ছে আরও!

পরে এ ক্যাচের প্রতিক্রিয়ায় নেসার বলেছেন, ‘আমি জানতাম কয়েক বছর আগে (ম্যাট) রেনশ এমন করেছিল। জানতাম না নিয়মটা বদলানো হয়েছিল কি না। ভাগ্যিস বদলায়নি। তখন অবশ্য নিয়ম বদলানোর ব্যাপার না জানলেও ভেবেছি, “চেষ্টা করে দেখি”।’