বিপিএলের যা-তা অবস্থা, দায়িত্ব পেলে সব বদলে দিতেন সাকিব
বিপিএলের নতুন মৌসুমের পর্দা উঠবে শুক্রবার থেকে। তার আগে আজ বিপিএলকে মোটামুটি ধুয়ে দিলেন সাকিব আল হাসান। ফরচুন বরিশালের এই অধিনায়ক গালফ অয়েলের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর। আজ এক দিনের জন্য প্রতিষ্ঠানটির সিইও (প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা) হয়ে অফিসে বসেছিলেন এই তারকা অলরাউন্ডার।
প্রাতিষ্ঠানিক বিভিন্ন কথার পর উঠেছিল বিপিএলের প্রসঙ্গ। সাকিবের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল বিপিএল আয়োজনের দায়িত্ব পেলে কী করবেন? সাকিবের সোজাসাপটা উত্তর, ‘আমাকে যদি সিইওর দায়িত্ব দেওয়া হয়, আমার বেশি দিন লাগবে না। সব ঠিক করতে সর্বোচ্চ এক থেকে দুই মাস লাগবে।’
দেশের একমাত্র ফ্র্যাঞ্চাইজি টি-টোয়েন্টি লিগ বিপিএলকে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের সঙ্গে তুলনা করতেও নারাজ সাকিব। প্রিমিয়ার লিগের চেয়েও বিপিএলকে পিছিয়ে রাখছেন, ‘একটা যা-তা অবস্থা। এর থেকে আমাদের ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ (ডিপিএল) আরও ভালোভাবে হয়। কারণ, আগে থেকেই দল গোছাতে পারে। আরও আগে থেকে জানে যে দলটা কী হচ্ছে এবং তারা সেভাবে প্রস্তুতি নিতে পারে।’ সাকিব মনে করেন বিপিএল বাজারজাতের জায়গা থেকে বড় ব্যর্থতা। দেশে ক্রিকেটের জনপ্রিয়তার উদাহরণ টেনে সাকিব বলেছেন, ‘গ্রামের এমন কোনো প্রত্যন্ত অঞ্চল দেখবেন না, যেখানে ক্রিকেট খেলা হচ্ছে না। এমন তো না যে জনপ্রিয়তা নেই। ১৬-২০ কোটি মানুষের একটা দেশে এত পছন্দের একটা খেলা, তার বাজারটা থাকবে না, এটা খুবই দুঃখজনক। মানে আমি অন্তত বিশ্বাস করি না।’
অনিল কাপুর অভিনীত বলিউডের ‘নায়ক’ সিনেমার উদাহরণ টেনে সাকিব বলেছেন, ‘“নায়ক” সিনেমা দেখেছেন না? এক দিনেও অনেক কিছু করা সম্ভব। যে করতে পারে সে সব করতে পারে।’
সেই সিনেমায় অনিল কাপুরকে এক দিনের জন্য মুখ্যমন্ত্রী বানানো হয়েছিল। এক দিনেই দুর্নীতির মূলোৎপাটন করেছিলেন শিবাজী রাও চরিত্রে অভিনয় করা অনিল কাপুর। সাকিবকেও যদি বিপিএলের সিইওর দায়িত্ব দেওয়া হয়, তাহলে তিনি কী করবেন? ফরচুন বরিশাল অধিনায়ক সোজাসাপটাই বলেছেন, ‘সবকিছু বাদ দিয়ে আবার ড্রাফট হবে, অকশন হবে, ফ্রি টাইমে (খেলোয়াড়দের) বিপিএল হবে, আধুনিক প্রযুক্তি থাকবে। সম্প্রচার ভালো থাকবে। হোম অ্যান্ড অ্যাওয়ে ভেন্যু থাকবে।’
বিপিএলে এবার শুরু থেকে ডিআরএস থাকছে না। প্লে-অফ পর্ব থেকে ডিআরএস যোগ হওয়ার কথা। এসবের পেছনে সদিচ্ছার অভাব দেখছেন সাকিব, ‘বাজেট-সংকট বোধ হয় বিসিবির! সদিচ্ছা থাকলে আমি তো কোনো কিছু থেমে থাকার কারণ দেখি না। ৩ মাস আগে ড্রাফট হবে না, অকশন হবে না, ডিআরএস থাকবে না, ২ মাস আগে থেকে দল গঠন থাকবে না—আমি এসবের কোনো কারণ দেখি না। এক খেলোয়াড় এক দিন আসবে, দুই দিন পর চলে যাবে। কে কখন আসবে যাবে কেউ জানে না।’
বিপিএলে পারফর্ম করা খেলোয়াড়দের বাইরে সেভাবে মূল্যায়ন করা হয় না—এর পেছনে লিগটি সেভাবে না দেখে এবং মনোযোগ কাড়তে না পারার ব্যর্থতাকে বড় করে দেখছেন সাকিব, ‘আইপিএলকে হিসাবের বাইরে রাখলাম। বিগ ব্যাশ, পিএসএল বা সিপিএলে যখন কেউ ভালো করে জাতীয় দলে সুযোগ দিয়ে দেয়। বিপিএল তো বাইরের দেশের কেউ ও রকম দেখে না যে একটা প্যারামিটার (মানদণ্ড) ঠিক করবে; বিপিএলের খেলা এ রকম, প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ টুর্নামেন্ট, এখানে যারা ভালো খেলছে তাদের যোগ্যতা আছে। এমন কেউ চিন্তাই করতে পারেনি এখন পর্যন্ত। এখনো এ পর্যায়ে রয়ে যাওয়াটা খুবই হতাশাজনক।’