চার, ছক্কা আর ক্যাচ মিস— আজ ফরচুন বরিশাল ও সিলেট স্ট্রাইকার্সের ম্যাচে কিছুক্ষণ পর পর এই দৃশ্যই দেখা গেছে। শিশির ভেজা মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের উইকেটে ছিল রান। আর কুয়াশার ভারী চাদরে ঢাকা মিরপুরের আকাশে বল গেলে যেন কোথায় হারিয়ে যাচ্ছিল! ফিল্ডাররাও সেটি লুফে নিতে পারছিল না। দুই দলের দুই ইনিংস মিলিয়ে ক্যাচ পড়ল সাতটা। যার মধ্যে চারটিই ফেলেছেন ফরচুন বরিশালের ফিল্ডাররা। সে সুযোগটা কাজে লাগিয়েছে সিলেট। বরিশালের ১৯৪ রান এক ওভার বাকি থাকতেই তাড়া করেছে মাশরাফির দল। ৬ উইকেটের বড় জয়টি এসেছে বিপিএলের তৃতীয় সর্বোচ্চ রান তাড়ার রেকর্ড গড়ে।
টানা দুই জয়ে বিপিএল পয়েন্ট তালিকায় এখন শীর্ষে মাশরাফির দল। আর তারকায় ঠাসা সাকিব-মিরাজদের বরিশালের বিপিএলের শুরুটা হলো হারের হতাশায়। বোলিং শক্তিতে ঠাসা দলটিকে ১৯৪ রান করেও হারতে হয়েছে মূলত সিলেটের ব্যাটসম্যানদের বিস্ফোরক ব্যাটিংয়ের সৌজন্যে। ওপেনার কলিন অ্যাকারমান ছাড়া সিলেটের শীর্ষ ছয় ব্যাটসম্যানের পাঁচজনই অবদান রেখেছেন।
তৌহিদ হৃদয় ৩৪ বলে সর্বোচ্চ ৫৫ রান করলেও ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেওয়া ইনিংসটি এসেছে জাকির হাসানের ব্যাট থেকে। কদিন আগে টেস্ট অভিষেক হওয়া এই বাঁহাতি ১৮ বলে করেছেন ৪৩ রান, তাঁর ২৩৮ স্ট্রাইক রেটের ইনিংসটি মুশফিকুর রহিম ও থিসারা পেরেরার কাজটা সহজ করে দিয়েছেন। শেষের দিকে দুজনের ১০ বলে ২২ রানের জুটি ১ ওভার বাকি থাকতেই সিলেটের জয় নিশ্চিত করে।
বাঁহাতি রাজত্ব ছিল বরিশালের ইনিংসেও। বরিশালের হয়ে ৩২ বলে ৬৭ রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেলেন সাকিব। তাতে তাঁর দল বরিশালের রান দাঁড়ায় ৭ উইকেটে ১৯৪। ৭টি চার ও ৪টি ছক্কায় সাজানো ইনিংসে ছিল প্রতিপক্ষের বোলারদের দুমড়েমুচড়ে ফেলার চেষ্টা।
সাকিবের ইনিংসে বিতর্কও ছিল। সিলেটের পেসার রেজাউর রহমানের বাউন্সারকে ওয়াইড দেওয়ার দাবিতে আম্পায়ার মাহফুজুর রহমানের সঙ্গে তর্কে জড়ান সাকিব। মাথায় অনেকটা ওপর দিয়ে যাওয়া বলটি পরবর্তীতে ‘ওয়ান বাউন্স’ দেওয়া হয়। সাকিব তাতে সন্তুষ্ট ছিলেন না। আম্পায়ারের সঙ্গে এ নিয়ে তর্ক করেই যাচ্ছিলেন। সাকিবকে সেখান থেকে সরিয়ে আনেন সিলেটের উইকেটকিপার মুশফিকুর রহিম। সাকিব রাগ ঝাড়েন রেজাউরের পরের বলটি মিড উইকেট দিয়ে বিশাল ছক্কায় উড়িয়ে। সাকিবের ২০৯ স্ট্রাইক রেটের ইনিংসটি থামে মাশরাফি বিন মুর্তজার শেষ ওভারে। রান বন্যার রোমাঞ্চকর ম্যাচে শেষ হাসিটাও হেসেছে মাশরাফির সিলেট।