যে কারণে শৈশবে অস্ট্রেলিয়া দলকে সমর্থন করতেন না খাজা
কদিন আগে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ১৯৫ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলে আলোচনায় এসেছিলেন অস্ট্রেলিয়ান ওপেনার উসমান খাজা। লম্বা সময় দলটির নিয়মিত মুখও এই ব্যাটসম্যান। তবে পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত এই ক্রিকেটার বলেছেন, একসময় তিনি অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলকে সমর্থনই দিতেন না।
সিডনি মর্নিং হেরাল্ডকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে অস্ট্রেলিয়ার টেস্ট দলের প্রথম মুসলিম খেলোয়াড় খাজা লম্বা সময় ধরে তাঁর সঙ্গে হওয়া বর্ণবাদী আচরণকেও সামনে এনেছেন। ক্রিকেটে এই দৃষ্টিভঙ্গি এখনো বদলায়নি বলেও মন্তব্য করেছেন ৩৬ বছর বয়সী ক্রিকেটার।
বেড়ে ওঠার সময় আপনি কি অস্ট্রেলিয়া দলকে সমর্থন করতেন কি না, জানতে চাইলে খাজা বলেছেন, ‘আমি করতাম না। ১৩–১৪ বছর বয়স পর্যন্ত আমি অস্ট্রেলিয়া দলকে সমর্থন করতাম না। আমি অস্ট্রেলিয়া দলটির সঙ্গে নিজেকে সম্পৃক্ত করতে পারতাম না।’
শ্বেতাঙ্গ অস্ট্রেলিয়ানদের কাছ থেকে কীভাবে বর্ণবাদী আক্রমণের শিকার হতেন, তা উল্লেখ করে খাজা আরও বলেছেন, ‘যখন আমি টিভির দিকে তাকাতাম, দেখতাম খেলার সময় একদল উচ্ছৃঙ্খল, রূঢ় এবং বিয়ার পান করতে থাকা শ্বেতাঙ্গ অস্ট্রেলিয়ানরা বর্ণবাদী আচরণের মধ্য দিয়ে আমাকে অপমান করছে। তখন আমার মনে হতো, যে দলটি আমাকে সমর্থন করে না, আমি তাদের কেন সমর্থন করব।’
বেড়ে ওঠার সময়টা কতটা কঠিন ছিল তার ব্যাখ্যায় খাজা বলেছেন, ‘বড় হওয়ার সময়টা বেশ কঠিন ছিল। জাতিগত প্রেক্ষাপট বিবেচনায় বর্ণবাদী নামে আমাকে ডাকা হতো। কারি মুঞ্চার শব্দটি (উপমহাদেশের মানুষকে এই নামে ডেকে উপহাস করা হয়) আমার সঙ্গে সবচেয়ে বেশি লেগে ছিল। এই নামে সব সময় আমাকে ডাকা হতো।’
বর্ণবাদের স্বরূপটা কেমন, তা জানাতে গিয়ে খাজার কথা, ‘অবচেতন মনের পক্ষপাত সব সময় থাকে। যদি একজন ক্রিকেটার শ্বেতাঙ্গ এবং অন্যজন ভিন্ন বর্ণের হয়, তবে সাদা কোচ সব সময় সাদা ক্রিকেটারকেই বেছে নেবে।’
বর্ণবাদী আচরণের এই ধারা এখনো থামেনি বলেও জানিয়েছেন খাজা। এর আগেও নিজের সঙ্গে হওয়া আচরণ নিয়ে মুখ খুলেছিলেন এই ক্রিকেটার। গত মাসে এক টুইটে তিনি জানান, ২০২১ সালে দলের হোটেলে তাঁকে থামানো হয়েছিল তিনবার। জিজ্ঞেস করা হয়েছে তিনি দলের সদস্য কি না।