‘পৃথিবীর সবচেয়ে দুর্ভাগা ব্যক্তি রোহিত’
ভারতের ইনিংসের প্রথম পাওয়ারপ্লের শেষ ওভারটি করার জন্য অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক বল তুলে দেন অফ স্পিনার গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের হাতে। প্রথম বলটি ডট দেন রোহিত। পরের দুই বলে ছক্কা ও চার। রোহিত খেলছিলেন তাঁর চেনা ছন্দেই। চতুর্থ বলটিও তুলে মারেন তিনি। কিন্তু মিস টাইমিংয়ে সেটা ওপরে উঠে যায়। সেটিও অবশ্য কাভারে দাঁড়ানো ফিল্ডার ট্রাভিস হেডের মাথার ওপর দিয়ে উড়ে গিয়ে ৩০ গজ বৃত্তের বাইরেই পড়তে যাচ্ছিল।
বলের দিকে চোখ রেখে হেড পেছনের দিকে দৌড়াতে শুরু করেন। কিছুটা বেঁকে দৌড়ে ডাইভ দিয়ে অসাধারণ এক ক্যাচ নেন হেড। যে ক্যাচ মনে করিয়ে দিয়েছে ১৯৮৩ বিশ্বকাপে কপিল দেবের নেওয়া ওয়েস্ট ইন্ডিজের ভিভ রিচার্ডসের ক্যাচটির কথা।
ডিপ মিড উইকেটের দিকে উল্টো দৌড়ে অসাধারণ এক হাই ক্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান গ্রেট ভিভকে ফিরিয়েছিলেন কপিল। ৪০ বছর আগে বিশ্বকাপ ফাইনালে কপিলের সেই ক্যাচকেই টার্নিং পয়েন্ট হিসেবে ধরা হয়। গতকাল হেডের ক্যাচটির পর ধারাভাষ্যকার ইয়ান স্মিথ বলেই ফেলেন, ‘আমার কাছে এটাই ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট।’
তখন অনেকেই প্রশ্ন তোলেন ইয়ান স্মিথের মন্তব্য নিয়ে। ভারতের তখনো ৮ উইকেট হাতে, বিরাট কোহলিও ছিলেন—এমন সময়ে একটা ক্যাচকে ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট বলে দেওয়া যায়! ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার ৬ উইকেটের জয়ের পর অনেকেই অবশ্য বলছেন, হেডের নেওয়া রোহিতের ওই ক্যাচই আসলে ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট।
রোহিতের ওই আউটের পর আর সেভাবে মাথা উঁচু করে খেলতেই পারেনি ভারত। শেষ পর্যন্ত তারা ইনিংসের শেষ বলে অলআউট হয়েছে ২৪০ রান করে। এই রান তাড়া করতে নেমে অস্ট্রেলিয়া মাত্র ৪ উইকেট হারিয়ে লক্ষ্যে পৌঁছে যায় ৪২ বল হাতে রেখে।
শিরোপা জয়ের পর হেড কথা বলেছেন সেই ক্যাচ নিয়ে। শিরোপা জয় উদ্যাপনের মধ্যেই তিনি বলেন, ‘সে (রোহিত শর্মা) সম্ভবত পৃথিবীর সবচেয়ে দুর্ভাগা ব্যক্তি।’ এরপর হেড জানিয়েছেন তাঁর দুর্দান্ত এই ফিল্ডিংয়ের রহস্য, ‘আমি ফিল্ডিং নিয়ে কঠিন পরিশ্রম করেছি। আমি শতক পাওয়ার কথা ভাবতেও পারিনি। ওই ক্যাচ যে ধরতে পারব, সেটাও ভাবিনি। ক্যাচটি ধরতে পারাটা ছিল দারুণ ব্যাপার।’