৪০০ রানের লক্ষ্য দিয়ে ডাচদের ৯০ রানে অলআউট করল অস্ট্রেলিয়া
এক গ্লেন ম্যাক্সওয়েল বা ডেভিড ওয়ার্নারের রানটাই তুলতে পারল না নেদারল্যান্ডস।
লক্ষ্যটা বেশ বড়ই ছিল। অস্ট্রেলিয়াকে হারাতে হলে তুলতে হতো ৪০০ রান। কিন্তু লড়াই করা দূরে থাক, স্কোরবোর্ডে ১০০ রানই তুলতে পারেনি ডাচরা। দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে দেওয়া নেদারল্যান্ডস তাড়া করতে নেমে অলআউট হয়ে গেছে মাত্র ৯০ রানে।
দিল্লির অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে অস্ট্রেলিয়া ম্যাচ জিতেছে ৩০৯ রানে। বিশ্বকাপ ইতিহাসে রানের হিসাবে এটি সবচেয়ে বড় জয়। আর ওয়ানডে ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।
নেদারল্যান্ডস ম্যাচ থেকে ছিটকে গিয়েছিল আসলে ম্যাচের প্রথম অংশেই। ৩৯তম ওভারের প্রথম বলে ওয়ার্নারকে আউট করে বেশ উচ্ছ্বাসেই ভেসে গিয়েছিল নেদারল্যান্ডস। আগের ওভারেই শতক পূর্ণ হয়েছে অস্ট্রেলিয়ান বাঁহাতির, হাত খুলে ভয়ংকর হয়ে ওঠার আগেই ফিরিয়ে দিতে পারায় উচ্ছ্বাস তো হবেই (৯৩ বলে ১০৪)। কিন্তু ডাচদের তো বটেই, অস্ট্রেলিয়ানদেরও হয়তো ভাবনায় ছিল না পরের ওভারগুলোতে কী ঘটতে পারে।
এরপর শেষ ১০ ওভারে যা ঘটেছে, তার রীতিমতো তাণ্ডব। সোজা ব্যাটে আর রিভার্স সুইপে একের পর এক বল বাউন্ডারিতে পাঠিয়ে গেলেন ম্যাক্সওয়েল। ৮ চার আর ৮ ছয়ে মাত্র ৪০ বলে তিন অঙ্ক ছুঁয়ে গড়লেন বিশ্বকাপের দ্রুততম শতকের রেকর্ডও। ম্যাক্সওয়েলের এই ঝোড়ো ব্যাটিংয়ে শেষের ১০ ওভারে অস্ট্রেলিয়া তোলে ১৩১ রান, ৫০ ওভার শেষে স্কোরবোর্ডে জমা হয় ৮ উইকেটে ৩৯৯।
শেষ দিকে ম্যাক্সওয়েলকে ৪৪ বলে ১০৬ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলার ভিত্তি গড়ে দিয়ে যান ওয়ার্নার, স্টিভেন স্মিথ ও মারনাস লাবুশেনরা। চতুর্থ ওভারে মিচেল মার্শকে হারালেও অস্ট্রেলিয়াকে পথহারা হতে দেয়নি স্মিথ-ওয়ার্নারের দ্বিতীয় উইকেট জুটি। এই দুজনে মিলে ১১৮ বলের জুটিতে তোলেন ১৩২ রান। ৬৮ বলে ৭১ রান করা স্মিথ ফেরেন পয়েন্ট ফন ডার মারওয়ের দুর্দান্ত এক ক্যাচে।
আগের ওভারে ওয়ার্নারের ক্যাচও নিয়েছিলেন মারওয়ে, তবে বল তাঁর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে না থাকায় আউট দেননি টিভি আম্পায়ার। এই ওয়ার্নার তৃতীয় উইকেটে লাবুশেনকে নিয়ে গড়েন ৮৪ রানের আরেকটি জুটি। অর্ধশতকের পর দ্রুত রান তুলতে গিয়ে লাবুশেন ফেরেন ৪৭ বলে ৬২ রান করে। পরের তিন ওভারের মধ্যে প্যাভিলিয়নে ফিরতে হয় জশ ইংলিস আর ওয়ার্নারকে। তবে আউট হওয়ার আগে বিশ্বকাপে নিজের ষষ্ঠ শতক পূর্ণ করে যান ওয়ার্নার। বাঁহাতি এই ওপেনার ফিরে যাওয়ার পর বাকি কাজটা সারেন ম্যাক্সওয়েল। ৪০তম বলে তিন অঙ্ক ছুঁয়ে ভেঙে দেন ৭ অক্টোবর দিল্লির এই মাঠেই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দক্ষিণ আফ্রিকার এইডেন মার্করামের ৪৯ বলে শতকের রেকর্ড।
৪০০ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে নেদারল্যান্ডস প্রথম উইকেট জুটিতে তোলে ২৮ রান। এটিই দলটির সর্বোচ্চ রানের জুটি। শেষ ৬ রানের মধ্যে ৫ উইকেট হারিয়ে গুটিয়ে যায় ৯০ রানে, মাত্র ২১ ওভারে।
পাঁচজন ব্যাটসম্যান দুই অঙ্কে পৌঁছালেও সর্বোচ্চ বিক্রমজিৎ সিংয়ের ২৫। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ৩ ওভারে ৮ রান দিয়ে ৪ উইকেট নেন অ্যাডাম জাম্পা। মিচেল মার্শের শিকার ১৯ রানে ২ উইকেট। অস্ট্রেলিয়া ২০১৫ বিশ্বকাপে অ্যাডিলেডে আফগানিস্তানকে হারিয়েছিল ২৭৫ রানে। বিশ্বকাপে এটিই ছিল রানের হিসাবে সবচেয়ে বড় জয়। এবার নিজেদের রেকর্ডই নতুন করে লিখেছে প্যাট কামিন্সের দল।
পাঁচ ম্যাচে এটি অস্ট্রেলিয়ার তৃতীয় জয়। পয়েন্ট তালিকায় অবস্থান চার নম্বরে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
অস্ট্রেলিয়া: ৫০ ওভারে ৩৯৯/৮ (ম্যাক্সওয়েল ১০৬, ওয়ার্নার ১০৪, স্মিথ ৭১, লাবুশেন ৬২; ফন বিক ৪/৭৪, ডি লিডি ২/১১৫)।
নেদারল্যান্ডস: ২১ ওভারে ৯০ (বিক্রমজিৎ ২৫, নিদামানুরু ১৪; জাম্পা ৪/৮, মার্শ ২/১৯)।
ফল: অস্ট্রেলিয়া ৩০৯ রানে জয়ী।
ম্যাচসেরা: গ্লেন ম্যাক্সওয়েল।