আর্থিক কেলেঙ্কারিতে জড়ানোর অভিযোগে শুবমান গিলকে তলব সিআইডির
আর্থিক কেলেঙ্কারিতে জড়িত থাকার অভিযোগে ভারতীয় দলের টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান ও আইপিএল ফ্র্যাঞ্চাইজি গুজরাট টাইটানসের অধিনায়ক শুবমান গিলকে তলব করেছে গুজরাটের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। গুজরাটভিত্তিক পত্রিকা আহমেদাবাদ মিরর এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
গিল ছাড়াও তাঁর তিন সতীর্থ সাই সুদর্শন, মোহিত শর্মা ও রাহুল তেওয়াতিয়াকে সমন জারি করা হয়েছে। মোহিত ভারতের হয়ে ৩৪টি ও সুদর্শন ৪টি ম্যাচ খেলেছেন। তেওয়াতিয়া কখনো জাতীয় দলে খেলেননি।
আহমেদাবাদ মিররের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিজেড ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস নামের এক আর্থিক পরিষেবা কোম্পানিতে বিপুল অর্থ বিনিয়োগ করেছিলেন গিল, সুদর্শন, মোহিত ও তেওয়াতিয়া। গিলের বিনিয়োগের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি—১ কোটি ৯৫ লাখ রুপি। অন্য তিনজনের বিনিয়োগ ১০ লাখ থেকে ১ কোটি রুপির মধ্যে।
পরে দেখা যায়, বিজেড ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস একটি পনজি স্কিম চালায়। অর্থাৎ এটি এক ধরনের কূটকৌশল, যেখানে নতুন বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে আদায় করা অর্থ পুরোনো বিনিয়োগকারীদের ফিরিয়ে দেওয়া হয়।
বিজেড ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস জনসাধারণকে ব্যাংকের চেয়ে ভালো সুদহার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। কিন্তু বিনিয়োগকারীরা বুঝতে পারেন, কোম্পানিটির প্রতিশ্রুতিগুলো মিথ্যা এবং তাঁদের সঙ্গে প্রতারণা করা হচ্ছে। এ নিয়ে তাঁরা পুলিশের কাছে অভিযোগ জানান। গুজরাটের অপরাধ তদন্ত বিভাগ প্রাথমিকভাবে অভিযোগের সত্যতা খুঁজে পায় এবং সম্প্রতি বিজেড ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেসের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ভূপেন্দ্রসিং জালাকে গ্রেপ্তার করে।
প্রাথমিক প্রতিবেদনে সিআইডি জানায়, ভূপেন্দ্রসিং জালা ৬০০ কোটি রুপি জালিয়াতি করেছেন। পরে জালিয়াতি অঙ্কটা কমিয়ে বলা হয় ৪৫০ কোটি রুপি। ভূপেন্দ্রসিংকে গ্রেপ্তারের পর তিনি সিআইডিকে গিল, সুদর্শন, মোহিত ও তেওয়াতিয়ার নাম বলেন। এ ছাড়া জানান, গুজরাট টাইটানসের ওই চার ক্রিকেটারের বিনিয়োগ করা অর্থ এখনো ফেরত দেননি।
এ ব্যাপারে গুজরাট সিআইডির এক কর্মকর্তা আহমেদাবাদ মিররকে বলেছেন, ‘দোষী প্রমাণিত হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা হিসাবরক্ষকদের একটি দল প্রস্তুত করেছি। তাঁরা ভূপেন্দ্রসিং জালার হিসাবের বই ও লেনদেন তদন্ত করে দেখবেন। বইটি সিআইডি কর্মকর্তারা হেফাজতে নিয়েছেন। সোমবার থেকে বিভিন্ন স্থানে লাগাতার অভিযান চালানো হচ্ছে।’
আহমেদাবাদ মিরর আরও জানিয়েছে, চার ক্রিকেটারকেই ডেকে পাঠাবে সিআইডি। বোর্ডার-গাভাস্কার ট্রফি খেলতে গিল বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ায় অবস্থান করছেন। তবে সুদর্শন, মোহিত ও তেওয়াতিয়া ভারতেই আছেন। সিআইডির আশা, তাঁরা গুজরাটে গিয়ে তদন্তে সহায়তা করবেন।