কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার পক্ষে ব্যাট ধরলেন কুম্বলে
দল নির্বাচনে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তির সাহায্য নেওয়ার কথা কিছুদিন আগে জানিয়েছিলেন ইংল্যান্ড নারী ক্রিকেট দলের কোচ জন লুইস। এবার ভারতের সাবেক কোচ, অধিনায়ক ও কিংবদন্তি স্পিনার অনিল কুম্বলেও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার পক্ষে কথা বললেন। তাঁর মতে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ক্রিকেট কোচিং, বিশ্লেষণ ও কৌশলগত ব্যাপারগুলোকে আরও এক ধাপ এগিয়ে নিতে পারে।
ভারতের হয়ে টেস্টে সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি কুম্বলের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ডিগ্রি আছে। অবসর নেওয়ার পর ‘স্পেকটাকম’ নামে প্রযুক্তিভিত্তিক খেলাধুলা সরঞ্জামের একটি প্রতিষ্ঠান দেন তিনি। এ প্রতিষ্ঠানের স্মার্ট ব্যাট স্টিকার বেশ জনপ্রিয়। এ প্রতিষ্ঠানের অন্যান্য খেলাধুলাভিত্তিক পণ্যের মাধ্যমে পারফরম্যান্স বিশ্লেষণ করাও সহজ। ক্রিকেটে প্রযুক্তির প্রভাবকে অনস্বীকার্য বলেই মানেন কুম্বলে। এই কিংবদন্তি লেগ স্পিনার কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি নিয়ে বলেছেন, ‘ক্রিকেট পরিসংখ্যানগত খেলা, তাই (কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহারের) অনেক সুযোগই আছে।’
কুম্বলে এরপর বলেছেন, ‘কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কোচিং, প্রতিভা অন্বেষণ, দল নির্বাচন, নিলাম এমনকি নির্দিষ্ট কোনো ব্যাটসম্যানকে একজন বোলার কীভাবে বল করবে—এ ব্যাপারেও ব্যবহার করা যায়।’ ১৩২ টেস্টে ৬১৯ উইকেট নেওয়া এই স্পিনার যুক্তি দেন, ‘ক্রিকেটে বৈচিত্র্যের অভাব নেই। একবার তথ্য সংরক্ষণ করা শুরু করলে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সেগুলো অনেকগুলো সম্ভাবনা থেকে কয়েকটিতে নামিয়ে আনতে পারবে। ক্রিকেটে এটাই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ—অনেক বেশি সম্ভাবনা।’
কুম্বলে মনে করেন, ক্রিকেটে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির অনেক সম্ভাবনাই এখনো আবিষ্কার করা বাকি, ‘লোকে এটাকে শুধু বিশ্লেষণের জন্য ব্যবহার করছে। কিন্তু আমার মতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার এখনো অনেক কিছুই সুপ্ত। এখনো অনেক সম্ভাবনাই সামনে আসেনি। আমরা স্পেকটাকম এটা নিয়েই কাজ করছি।’
ভারতীয় কিংবদন্তি এ নিয়ে উদাহরণও টেনেছেন, ‘আমরা এমন একটি মডেল তৈরি করেছি যা আপনি কীভাবে ব্যাট করেন, সেটি বুঝতে সাহায্য করবে এবং অ্যালগরিদমে স্বয়ংক্রিয়ভাবেই ভুল শুধরে দেবে। উদাহরণস্বরূপ, আপনি কোন ব্যাটটি বেছে নেবেন। ধরুন, আমি আপনাকে স্মার্ট স্টিকারওয়ালা ব্যাট দিয়ে বললাম ১০০টি বল খেলুন। আপনি (ব্যাটের) সুইট স্পটে বলগুলো খেলার চেষ্টা করবেন তাই তো? যদি বলি আপনি মাত্র ২০টি বল ব্যাটের সুইট স্পটে লাগাতে পেরেছেন, তাহলে পরের কাজটা হবে এই সংখ্যাটা বাড়ানো।’
কুম্বলে স্বীকার করেছেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অনুপ্রবেশের কারণে ক্রিকেট থেকে মানবিক দক্ষতাগুলো ধীরে ধীরে হারিয়ে যাওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। তাঁর যুক্তি, ‘ইতিমধ্যেই ব্যাপারগুলো ঘটছে। মিনিট থেকে মিলিমিটার পর্যন্ত ভাঙা হচ্ছে। তবে বর্তমান প্রযুক্তিতে আমার মনে হয় না আমরা সেখানে পৌঁছাতে পেরেছি।’