যুক্তরাষ্ট্রের ‘ভালো খেলার অজুহাত’ না দিয়ে নিজেদের ‘খারাপ খেলা’কে দুষলেন বাবর
হার তো হারই। কিন্তু সেটা যদি হয় যুক্তরাষ্ট্রের কাছে, তবে বিস্ময়ও জাগতে পারে। ভালো না লাগাটাও স্বাভাবিক। পাকিস্তান অধিনায়ক বাবর আজমেরও ভালো লাগছে না। বাবর সোজাসাপটাই বলেছেন, দল ভালো খেলেনি।
ডালাসের গ্র্যান্ড প্রেইরি স্টেডিয়ামে গতকাল রাতে কী ঘটেছে, তা সবার জানা। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সহ-আয়োজক ও আইসিসির সহযোগী দেশ, এবারই প্রথম বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ পাওয়া এবং টি-টোয়েন্টি র্যাঙ্কিংয়ে ১৮তম যুক্তরাষ্ট্র হারিয়ে দিয়েছে সাবেক চ্যাম্পিয়ন ও গতবারের রানার্সআপ পাকিস্তানকে। অঘটন তো বটেই, বিশ্বকাপের ইতিহাসে এটি সবচেয়ে বিস্ময়কর ফলগুলোর একটি। আর এমন অঘটনের শিকার হওয়া অধিনায়ক কেমন বোধ করবেন, সেটাও সবারই জানা।
সংবাদ সম্মেলনে পাকিস্তান অধিনায়কের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, এই ‘শকিং’ফল এরপর কেমন অনুভব করছেন? বাবরের উত্তর, ‘সত্যি বলতে, ভালো লাগছে না।’ বাবর ভালো না লাগার ব্যাখ্যা দিয়েছেন পরের কথাগুলোয়, ‘ম্যাচ হারলে তো হতাশ লাগেই। আমরা দুই (তিন) বিভাগেই ভালো করতে পারিনি। ফিল্ডিং, বোলিং ও ব্যাটিং। প্রথম ৬ ওভারটা আমরা ঠিকমতো কাজে লাগাতে পারিনি। পরে ১০ ওভার পর আমরা মোমেন্টাম পেয়েছি। তারপর দ্রুত কিছু উইকেট হারানোয় মোমেন্টাম হারিয়েছি। আমার মনে হয়, ব্যাটিং বিভাগ হিসেবে মাঝের ওভারগুলোয় এবং শেষে আমাদের ভালো করা প্রয়োজন।’
বাবরের কাছে সরাসরি জানতে চাওয়া হয়েছিল, এই হারকে তিনি অঘটন বলে মনে করেন কি না? কিংবা যুক্তরাষ্ট্র অসাধারণ ক্রিকেট খেলে জয়ের পথে তিন বিভাগেই পাকিস্তানের চেয়ে ভালো ক্রিকেট খেলেছে কি না? বাবর উত্তরে শুধু নিজের অনুভূতিটাই বলেছেন, ‘হ্যাঁ, আমি হতাশ। তিন বিভাগেই আমরা ভালো খেলতে পারছি না।’
যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে পাকিস্তান দল অতি-আত্মবিশ্বাসী ছিল কি না, সে প্রশ্নও উঠেছিল সংবাদ সম্মেলনে। বাবর এই প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন ভেঙে ভেঙে, ‘প্রথমে আমি ব্যাটিং নিয়ে বলব। প্রথম ৬ ওভারে বল একটু থেমে আসছিল ও সুইং করছিল। তবে আমরা জুটি গড়ার সঙ্গে পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে...যখন আমরা টানা দুটি উইকেট হারিয়েছি, তখনই (ম্যাচের) মোড় ঘুরেছে।’
বাবর এরপর যোগ করেন, ‘শুরুটা কঠিন হলেও আমরা পুষিয়ে নিয়েছিলাম। কিন্তু পেশাদার হিসেবে এমন পারফরম্যান্স কিংবা এমন দলের বিপক্ষে ব্যাটিংয়ে, বিশেষ করে মাঝের ওভারগুলোয় ভালো করতেই হয়। এটা কোনো অজুহাত নয় যে তারা (যুক্তরাষ্ট্র) ভালো খেলেছে। আমরা খারাপ খেলেছি।’
আগে ব্যাট করে ৭ উইকেটে ১৫৯ রান তুলেছিল পাকিস্তান। সেটি তাড়া করতে নেমে ঠিক ১৫৯ রান তোলে যুক্তরাষ্ট্রও, ম্যাচ গড়ায় সুপারওভারে। তবে নির্ধারিত ওভারের মধ্যেই জয়ের সুযোগ ছিল বাবরের দলেরও। জয়ের জন্য শেষ ২ ওভারে ২১ রান প্রয়োজন ছিল যুক্তরাষ্ট্রের। পাকিস্তানের বোলিং লাইনআপ বিশ্বের অন্যতম সেরা। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাটসম্যানদের এই রানের মধ্যেই আটকে ফেলার সামর্থ্য মোহাম্মদ আমির-হারিস রউফদের থাকলেও গতকাল সেটি হয়নি। আমিরের করা ১৯তম ওভারে ৬ রানের পর ২০তম ওভারে রউফের কাছ থেকে আসে ১৪ রান। এই দুই ওভারে ঠিক কী পরিকল্পনা ছিল পাকিস্তান দলের? সংবাদ সম্মেলনে জানতে চাওয়া হয়েছিল বাবরের কাছে।
পাকিস্তান অধিনায়কের উত্তর, ‘খুব সোজা পরিকল্পনা। আমরা ইয়র্কার মারার চেষ্টা করেছি। এই পরিকল্পনা আমরা পাল্টাইনি কারণ, বল রিভার্স সুইং করছিল এবং আমাদের বোলাররা ইয়র্কারে নিখুঁত ছিল। তাই পরিকল্পনা না পাল্টে অন্য কিছু না করে আমরা ইয়র্কারই মারার চেষ্টা করেছি।’