বিশ্বকাপে ক্রিকেটারদের জন্য যে ব্যাপারটি ‘ভয়ংকর’ বললেন ম্যাক্সওয়েল
অস্ট্রেলিয়া দল তখন ফিল্ডিংয়ে। বিরতির সময় হঠাৎ করেই দিল্লির অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে ফ্লাডলাইটের আলো নিভে গেল। স্পিকারে বেজে উঠল সুরের মূর্ছনা। গ্যালারির দর্শকের অনেকেই ফোন বের করে ফ্লাশলাইট জ্বালালেন, হইহুল্লোড়ে প্রকম্পিত স্টেডিয়াম। সুরের তালে তালে ফ্লাডলাইট কিছুক্ষণ জ্বলল আর নিভলও। এরপর সব ফ্লাডলাইট জ্বলে উঠল একসঙ্গে।
বিশ্বকাপে এমন দৃশ্য দর্শকের কাছে মোটেও অপরিচিত নয়। ম্যাচের মধ্যে এমন আলোক প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার তারকা গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের তা মোটেও ভালো লাগেনি। ম্যাচের মধ্যে এই আলোক প্রদর্শনী খুব বোকার মতো কাজ বলে মনে হয়েছে তাঁর কাছে।
দিল্লিতে কাল বিশ্বকাপের ইতিহাসে দ্রুততম শতকের রেকর্ড গড়েন ম্যাক্সওয়েল। ৪৪ বলে ১০৬ রানের ইনিংসে শতক তুলে নেন ৪০ বলে। অস্ট্রেলিয়ার ৩৯৯ রান তাড়া করতে নেমে ৯০ রানে অলআউট হওয়া নেদারল্যান্ডস ছেলেদের বিশ্বকাপ ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ব্যবধানে (৩০৯ রান) হেরেছে। ডাচরা ব্যাটিং করার সময় ম্যাচ থামিয়ে প্রায় দুই মিনিটব্যাপী এই আলোক প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। ম্যাক্সওয়েলকে তখন দুই হাতে চোখ ঢেকে ফেলতে দেখা গেছে।
ব্যাপারটা যে তাঁর ভালো লাগেনি, সেটা পরে সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন ‘দ্য বিগ শো’–খ্যাত এই তারকা, ‘বিগ ব্যাশের ম্যাচে পার্থ স্টেডিয়ামে এমন আলোক প্রদর্শনী দেখেছি। প্রচণ্ড মাথাব্যথা হয়েছে এবং দৃষ্টিশক্তিও ঠিক করতে কিছুটা সময় লেগেছে। আমার কাছে মনে হয়, ক্রিকেটারদের জন্য কাজটা খুবই বোকার মতো।’
ম্যাক্সওয়েল মানছেন, দর্শকের জন্য এই আলোক প্রদর্শনী হয়তো খুবই মজার। কিন্তু ক্রিকেটারদের জন্য মোটেও ভালো নয়, ‘চোখ যতটা সম্ভব ঢেকে রাখার চেষ্টা করেছি। ভয়ংকর, ভয়ংকর একটা কাজ। দর্শকের জন্য হয়তো দুর্দান্ত ব্যাপার, কিন্তু ক্রিকেটারদের জন্য ভয়ংকর।’
তবে সতীর্থ ম্যাক্সওয়েলের সঙ্গে একমত হতে পারেননি একই ম্যাচে ১০৪ রানের ইনিংস খেলা ডেভিড ওয়ার্নার। আইপিএলের সুবাদে ভারতের ক্রিকেট–সংস্কৃতি ম্যাক্সওয়েল–ওয়ার্নার দুজনেরই বেশ ভালোভাবে জানা আছে। ওয়ার্নার ভারতে বেশ জনপ্রিয়ও। অস্ট্রেলিয়ান ওপেনার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘এক্স’–এ লিখেছেন, ‘আলোক প্রদর্শনী আমার খুব ভালো লেগেছে। কী দুর্দান্ত পরিবেশ! এসবই তো দর্শকের জন্য। আমরা যা ভালোবাসি, সেটা দর্শক ছাড়া করতে পারতাম না।’
নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ম্যাচের আগের রাতে ঘুমোতে পারেননি ম্যাক্সওয়েল। পরিবারের সঙ্গে সময় কাটিয়েছেন। সম্ভবত সে জন্যই মাঠের ভেতর আলোক প্রদর্শনী চোখে বিঁধেছে। ম্যাক্সওয়েল এ নিয়ে বলেছেন, ‘খুব একটা ভালো ছিলাম না। ড্রেসিংরুমে বসে ছিলাম। ব্যাট করতে যেতে ইচ্ছা হচ্ছিল না, যেটা আগের ম্যাচের চেয়ে একটু আলাদা। সে ম্যাচে (পাকিস্তানের বিপক্ষে) আমি মাঠে নামতে মুখিয়ে ছিলাম। তবে (নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে) নামার পর একটু শীতল লেগেছে। গত কয়েক দিন ধরে সেদ্ধ হয়ে যাচ্ছিলাম, এর সঙ্গে যোগ হয়েছিল নির্ঘুম রাত (ম্যাচের আগের রাত)। রাতটা পরিবারের সঙ্গে কাটিয়েছি।’