গ্যাবার মাঠে উদ্যাপন শেষ। জিম্বাবুয়ের খেলোয়াড়দের সঙ্গে হাত মেলাতে মেলাতে বাংলাদেশ দল ড্রেসিংরুমে ফিরছে। নিয়ম অনুযায়ী থার্ড আম্পায়ার ব্লেসিংস মুজারাবানির আউট হওয়া শেষ বলটা ‘নো’ হয়েছে কি না, দেখবেন। তারপর ম্যাচের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি হবে। ততক্ষণ আর মাঠে দাঁড়িয়ে থাকার দরকার কী! বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের কল্পনাতেও ছিল না, মোসাদ্দেকের ওই বল আসলেই ছিল ‘নো’
‘ম্যাচ জিতে’ ফেরা ক্রিকেটারদের কারও মনোযোগই তখন আর সেদিকে ছিল না। কিন্তু গ্যাবার ড্রেসিংরুম থেকে অ্যালান ডোনাল্ড ঠিকই চোখ রেখেছিলেন মাঠের আম্পায়ারের দিকে। আউটের চূড়ান্ত সিদ্ধান্তটা যে তখনো দেননি তাঁরা! একটু পরই ডোনাল্ড বলে উঠলেন, ‘খেলাটা এখনো শেষ হয়নি...।’
পেস বোলিং কোচের এ কথায় বাংলাদেশ দলের পুরো ড্রেসিংরুমই যেন ভ্যাবাচেকা খেয়ে গেল! এটা কীভাবে সম্ভব? বোলার মোসাদ্দেকের পা যে ক্রিজের দাগ অতিক্রম করে যায়নি, সে ব্যাপারে মোটামুটি নিশ্চিত দলের সবাই। তাহলে কিসের ‘নো’?
তবে একজন মনে মনে ঠিকই বুঝতে পারছিলেন কিসের ‘নো’। উইকেটকিপার নুরুল হাসান আরেকবার কল্পনা করে নিলেন, শেষ বলটা কোথা থেকে টেনে এনে মুজারাবানির স্টাম্প ভেঙেছেন তিনি। চকিত হিসাব-নিকাশ করে ততক্ষণে দলের অন্যরাও বুঝে গেছেন ‘নো’ বলের রহস্য। হ্যাঁ, মোসাদ্দেকের বলটা স্টাম্প অতিক্রম করার আগেই সেটি ধরে স্টাম্প ভেঙেছেন নুরুল। ক্রিকেটের নিয়মে বলটা তাই ‘নো’। জিম্বাবুয়ে পেল ‘ফ্রি হিট’।
সেই ‘নো’ আর ‘ফ্রি হিটে’ও অবশ্য শেষ পর্যন্ত জয়ের শিকে ছেঁড়েনি জিম্বাবুয়ের। আর বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটাররাও খুব দ্রুতই মানিয়ে নিয়েছেন পরিস্থিতির সঙ্গে। এক সেকেন্ড আগেও যাঁরা জানতেন—ম্যাচ জিতে গেছেন, এক সেকেন্ড পর তাঁদেরই আবার মাঠে নামতে হয়েছে শেষ বলটা আরেকবার খেলতে! কিন্তু এতে হতচকিত না হয়ে পড়ে বাস্তবতা মেনে নিয়েছেন সাকিব-মোসাদ্দেকরা। আবার মাঠে নেমে আবারও শেষ বলটা করলেন মোসাদ্দেক।
বাকিটা তো সবার জানাই এতক্ষণে। গ্যাবায় বাংলাদেশের ১৫০ রান তাড়া করে শেষ বল পর্যন্ত খেলেও ৩ রানে হেরে গেছে জিম্বাবুয়ে। শেষ বলের ওই নাটক বাংলাদেশের জয়ের আনন্দ বাড়িয়ে দিয়েছে কয়েক গুণ।