কী ছিল তামিমের মেডিকেল রিপোর্টে
চোটের কারণ দেখিয়ে তামিম ইকবালকে ছাড়াই বিশ্বকাপ দল ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ দল। এটা এক দিনের বাসি খবর। কিন্তু বাংলাদেশ দল যখন ভারতে যাচ্ছে, তখন দেশে বসে বোমা ফাটালেন তামিম। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ফিজিওর রিপোর্টে কী ছিল এবং মেডিকেল টিম কী বলেছিল, তা জানিয়ে নতুন করে বিতর্কের আগুনে ঘি ছিটিয়ে দিয়েছেন।
নিজের ফেসবুক পেজে এক ভিডিও বার্তায় তামিম নিউজিল্যান্ড সিরিজ দিয়ে ক্রিকেটে ফেরায় স্বস্তির কথা জানান। তিনি বলেছেন, ‘সে ম্যাচের পর আমি মানসিক দিক দিয়ে খুশি ছিলাম। যা শেষ চার-পাঁচ মাস হয়েছে, সেগুলো মাথায় অতটা ছিল না সেভাবে। খেলতে মুখিয়ে ছিলাম আবার, বিশ্বকাপ খেলতে মুখিয়ে ছিলাম।’
তবে সেই নিউজিল্যান্ড সিরিজেই পিঠের পুরোনো চোট থেকে ফেরার পর বিশ্বকাপ দল থেকে ছিটকে পড়েন তামিম। বিসিবির প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন তামিমের না থাকার ব্যাখ্যায় এ কথাই বলেছেন। কিন্তু তামিম আজ জানালেন ভিন্ন কথা, ‘স্বাভাবিকভাবেই এত দিন পর যখন ক্রিকেট খেলবেন, চোট থেকে সেরে উঠেছেন, ব্যথা অস্বস্তি থাকবেই। প্রথম ম্যাচের পরও ব্যথা অনুভব করেছি। যখন খেলা শেষ হলো, আমার অবস্থান ফিজিওকে বললাম যে, আমি কেমন বোধ করছি।’
তিনি আরও যোগ করেন, ‘ঠিক ওই মুহূর্তে তিনজন নির্বাচক ড্রেসিংরুমে আসেন। একটা জিনিস ক্লিয়ার করতে চাই, আমি কোনো সময়, কোনো মুহূর্তে কাউকে কোনো সময় বলি নাই আমি ৫টা ম্যাচের বেশি খেলতে পারব না। আমি নিশ্চিত, গতকাল নান্নু ভাইও ক্লিয়ার করছে। এটা মিথ্যা কথা, ভুল কথা। আমি জানি না এটা মিডিয়ায় কীভাবে ফিড করা হয়েছে বা কে করেছে। এটা একেবারে ভুল। যেটা নির্বাচকদের বলেছিলাম, আমার শরীর এখন এমনই থাকবে। ব্যথা থাকবে। দল যখন নির্বাচন করবেন, এটা মাথায় রেখে করবেন।’
নির্বাচকদের সঙ্গে তামিমের পরে কী কথা হয়েছে, সেটা নিয়ে তামিম বলেছেন, ‘আপনারা যদি কিছুদিন আগের কথা চিন্তা করেন, অধিনায়ক ছিলাম, যে ম্যাচের পর অবসর নেই, একটা কথা ছিল, ফিজিও ও কোচ মিলে কথা বলেছিলাম। তিনজন এগ্রি করেছিলাম যে আমার খেলা উচিত। এরপর আপনারা জানেন যে কেমন ধরনের কথা মিডিয়ায় বলা হয়েছে, ফিট না থাকলে খেলা উচিত না। অবাক লাগছে কারণ ওই রুমে সবাই এগ্রি করছিলাম। আমি আরেকটি বিতর্ক তৈরি করতে চাইনি। পুরোপুরি সৎ থেকে আমার তরফ থেকে নির্বাচকদের বলেছি, আপনারা মাথায় রেখে সিলেক্ট করিয়েন। এমন হতে পারে, ৯ ম্যাচ খেলি সমস্যা ছাড়া। বিশ্বকাপের ফিকশ্চার এমন ছিল, প্রতি ম্যাচের পরই ৩-৪ দিনের গ্যাপ আছে, প্রথম দুটি ম্যাচ ছাড়া। যেকোনো সুস্থ মানুষের সাথেও হতে পারে, দুটি ম্যাচ খেলার পর ইনজুরড হলো, এরপর দেশে পাঠিয়ে দিলেন। রিপ্লেসমেন্ট নিতে পারেন।’
তামিমের মেডিকেল রিপোর্টে কী ছিল, সেটাও তিনি খোলসা করেছেন, ‘আমি এ জিনিসটা ক্লিয়ারলি বলি। বলার পর যখন হোটেলে যাই, আমাকে অ্যাসেস করে, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে কথাটা, যেটা ফিজিওর রিপোর্টে ছিল। এক্সাক্টলি যে কথাটা ছিল, আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করি। কেউ যদি চ্যালেঞ্জ করতে চায়, তারা মোস্ট ওয়েলকাম। পাবলিক ফোরামে বসেন, বলেন যে আমি ভুল করেছি। ফিজিওর রিপোর্ট যেটা ছিল, আমার কন্ডিশনটা বলা হয়েছিল। প্রথম ম্যাচের পর এমন পেইন হয়েছে।
দ্বিতীয় ম্যাচের পর এমন পেইন হয়েছে। আর আজকের দিন হিসাবে হি ইজ অ্যাভেইলেবল ফর সিলেকশন ফর দ্য টোয়েন্টি সিক্সথ (২৬ সেপ্টেম্বর) গেম। বাট মেডিকেল ডিপার্টমেন্ট মনে করে যদি আমি রেস্ট নিই, টোয়েন্টি সেভেনথ আমাদের ট্রাভেলিং ছিল, টোয়েন্টি এইটে আমাদের একটা প্র্যাকটিস গেম। তারপর ১-২ তারিখে আরেকটি প্র্যাকটিস গেম। আমি যদি এখন রেস্ট নিই, আমি যদি দ্বিতীয় প্র্যাকটিস ম্যাচটা খেলি তাহলে পর্যাপ্ত সময় পাব। রিহ্যাবও হয়ে যাবে, ওভারঅল ১০ সপ্তাহের রিহ্যাব হয়ে যাবে। সে ক্ষেত্রে প্রথম ম্যাচটা খেলার জন্য খুব ভালো অবস্থায় থাকব।’
সংবাদমাধ্যমে খবর এসেছে, বিশ্বকাপে নাকি পাঁচটির বেশি ম্যাচ খেলতে পারবেন না তামিম। এটা ঠিক নয় বলে দাবি করেছেন তামিম, ‘কোনো জায়গায় বলা হয়নি পাঁচ ম্যাচ-দুই ম্যাচ, ইনজুরি, খেলতে পারব না এত কিছু। হ্যাঁ, আমার শরীরে পেইন ছিল, যেটা অস্বীকার করছি না। বেসিক্যালি এটা হয়েছে। তারপর যেটা ঘটেছে, আমার কাছে যেটা মনে হয় মিডিয়াতে যেটা আসছে ইনজুরি, পাঁচ ম্যাচ...আমার কাছে মনে হয় না বিশ্বকাপে না যাওয়ার পেছনে এটার বড় অবদান ছিল। কারণ, আমি যেহেতু ইনজুরড হইনি এখনো, ব্যথা থাকতে পারে, কিন্তু ইনজুরড হইনি এখনো।’