ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টিতে যে সুযোগ দেখছেন হাথুরুসিংহে
এর আগে একবারই টি-টোয়েন্টিতে দেখা হয়েছে দুই দলের। ২০২১ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের মুখোমুখি হয়েছিল বাংলাদেশ। সে সময় শুধু ওয়ানডের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নই ছিল ইংল্যান্ড। আবার যখন দুই দলের দেখা, ইংল্যান্ড তখন সীমিত ওভারের দুই সংস্করণেরই বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন।
এখন পর্যন্ত ছেলেদের একমাত্র দল হিসেবে একই সঙ্গে দুই সংস্করণের বিশ্বকাপ ট্রফি ইংল্যান্ডের কাছে। বাংলাদেশ সফরে ওয়ানডে সিরিজ জিতেছে দলটি, এবার পালা টি-টোয়েন্টির। বাংলাদেশের প্রধান কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে অবশ্য ওয়ানডের চেয়ে টি-টোয়েন্টিতেই একটু বেশি সুযোগ দেখছেন তাদের বিপক্ষে।
গত নভেম্বরে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ফাইনালে পাকিস্তানকে হারানোর পর এই প্রথম এ সংস্করণে খেলতে নামছে ইংল্যান্ড। ওয়ানডের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন নাকি টি-টোয়েন্টির বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন—কোন ইংল্যান্ড বেশি শক্তিশালী, এমন প্রশ্নের জবাবে হাথুরুসিংহে বলেন, ‘বলতে পারব না কারা বেশি শক্তিশালী। তবে তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে। এটি ঠিক যে দলটি পূর্ণশক্তির নয়। তারা কীভাবে বিশ্বকাপের জন্য দল গঠন করে, সেটি কাছ থেকে দেখার ভালো সুযোগ আমাদের।’
ইংল্যান্ডের এই পরীক্ষা-নিরীক্ষার সুযোগটাই নিতে পারে বাংলাদেশ, এমনই ইঙ্গিত হাথুরুসিংহের, ‘তাদের ৫০ ওভারের দলটা বেশ থিতু। তবে টি-টোয়েন্টি দল নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে। আমার মনে হয় না ২০২২ সালে বিশ্বকাপ জেতা দলটি ২০২৪ বিশ্বকাপে খেলবে। এ কারণে নতুন খেলোয়াড় চেষ্টা করে দেখছে। সে লক্ষ্যেই তারা পরিকল্পনা করে দল তৈরি করছে। আমরা সেদিকেও চোখ রাখতে পারি।’
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দল থেকে বাংলাদেশ সফরে বেশ কয়েকটি পরিবর্তন আছে ইংল্যান্ড দলে। চোট, ঠাসা আন্তর্জাতিক সূচি, ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগের কারণে ইংল্যান্ড পাচ্ছে না হ্যারি ব্রুক, অ্যালেক্স হেলস, লিয়াম লিভিংস্টোন, বেন স্টোকসদের মতো প্রথম সারির ক্রিকেটারদের। বাংলাদেশের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের শেষ ম্যাচে অভিষেক করানো রেহান আহমেদকে রাখা হয়েছে টি-টোয়েন্টি দলেও।
বাংলাদেশও বিশ্বকাপের দল থেকে বেশ কয়েকটি পরিবর্তন এনেছে, সেটি অবশ্য চোট বা ঠাসা সূচির কারণে নয়। হাথুরুসিংহে বলছেন, এ সিরিজ দিয়েই পরবর্তী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পথটা শুরু করতে চান তাঁরা, ‘আজই টি-টোয়েন্টি দলকে দেখলাম। ২০২৪ বিশ্বকাপ-ভ্রমণের শুরুমাত্র। এরপর অনেক জল গড়াবে। আমাদের কী আছে, সেটি পর্যবেক্ষণ করব। কোথায় খেলোয়াড়েরা উন্নতি করতে পারে, নিজেদের সামর্থ্য অনুযায়ী খেলতে পারে।’
বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের বিপক্ষে খেলা সুযোগ হিসেবেই দেখতে চান এ সিরিজেই দলের দায়িত্ব নেওয়া হাথুরুসিংহে, ‘আমার মনে হয় না এটি কঠিন, (বরং) বিশ্বকাপের জন্য নিজেদের প্রস্তুত করার একটা সুযোগ। (পরের বিশ্বকাপ) কোথায় হবে, সেটি ভেবে দেখতে হবে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও যুক্তরাষ্ট্রে হবে বলে আমরা কিছুটা বেশি জানি, অন্য দলগুলোর তুলনায় (বেশি) সফর করেছি সেখানে। সেসব ভেবেই ঠিক কম্বিনেশনটা খুঁজে বের করার চেষ্টা করা হবে। অনেক খেলোয়াড়ের জন্যই এটি সুযোগ।’
টি-টোয়েন্টি সিরিজে অভিষেকের অপেক্ষায় থাকা তৌহিদ হৃদয়, রেজাউর রহমান, তানভীর ইসলামরা যেমন আছেন, লম্বা বিরতির পর ফেরানো হয়েছে রনি তালুকদারকেও। তাঁদের কাছে প্রত্যাশা কেমন, এমন প্রশ্নের জবাবে হাথুরুসিংহে বলেন, ‘তারা কী করতে পারে, সেটি আমি খোলা মন নিয়েই দেখব। যে পারফরম্যান্সে তারা নির্বাচিত হয়েছে, আশা করব অমনই করবে। বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের বিপক্ষে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তারা (সামর্থ্য) দেখাবে। তারা কোথায় আছে, আমাদের কন্ডিশনে আমরা তাদের চেয়ে ভালো, না তারা আমাদের চেয়ে—এগুলোই বুঝতে চেষ্টা করব। টি-টোয়েন্টিতে আমাদের দক্ষতা বাজিয়ে দেখার ভালো সুযোগ।’
টি-টোয়েন্টি বরাবরই বাংলাদেশের জন্য একটু অস্বস্তির সংস্করণ। এ মেয়াদে দায়িত্ব নিয়ে প্রথমবার সংবাদ সম্মেলনে হাথুরুসিংহে বলেছিলেন, টি-টোয়েন্টিই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হবে তাঁর। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে জিততে পারবেন কি না, এমন প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে যেন চরম বাস্তববাদী হয়ে গেলেন তিনি, ‘জেতাই লক্ষ্য। আমি জাদুকর বা এমন কেউ নই যে ভবিষ্যৎ বলে দিতে পারব। তবে আমরা জেতার চেষ্টা করব।’