সুপার এইটে উঠে স্বপ্নটাকে আরও বড় করতে না পারাই বাংলাদেশের জন্য কাল হলো। স্বপ্নটা বড় হলে হয়তো ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে সবটুকু উজাড় করে দিয়ে লড়াই করত বাংলাদেশ। তাতে ম্যাচের ফলাফল যা–ই হোক, হারের ব্যবধান কম হতে পারত এবং গতকাল আফগানিস্তানের বিপক্ষে শেষ ম্যাচে ১২.১ ওভারের পরিবর্তে ১৫ বা ১৬ কিংবা তার চেয়েও বেশি ওভারে লক্ষ্যে পৌঁছানোর সুযোগ থাকত।
কী হতে পারত বা পারত না, তা এখন আর নিশ্চিত করে বলার উপায় নেই। তবে বড় কিছু অর্জন করতে চাইলে এই অল্পতে সন্তুষ্ট হওয়ার মানসিকতা বদলাতে হবে। এটি আমাদের সবচেয়ে বড় বাধা। আমরা কোনোরকমে পার পেয়ে যেতে চাই, বড় চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে চাই না।
দল নির্বাচনের সময় উপলব্ধি করেছি, আমাদের খেলোয়াড়–সংকট কত তীব্র। দিনের পর দিন রান–খরায় ভোগা খেলোয়াড়দের নিয়ে আমাদের দল তৈরি করতে হয়। এমনকি চাইলেও কার্যকর অলরাউন্ডার খুঁজে পাওয়া যায় না। আবার এক–আধজন থাকলেও দলে জায়গা হয় না। টি-টোয়েন্টিসুলভ একটা ভারসাম্যপূর্ণ দল গড়ার মতো ১৫ জন নিয়ে আমরা বিশ্বকাপে যেতে পারিনি।
বিশ্বকাপে দল কেমন করবে, তা নিয়ে শঙ্কা ছিল। আশা ছিল, যুক্তরাষ্ট্র সিরিজে ব্যাটসম্যানরা ফর্মে ফিরবে; কিন্তু হলো উল্টোটা। সিরিজ হেরে আত্মবিশ্বাস গিয়ে ঠেকল তলানিতে। এককথায় প্রস্তুতি ছিল ভয়াবহ। তারপরও গ্রুপের তিন ম্যাচ জিতে সুপার এইটে যাওয়া কৃতিত্বের।
পুরো বিশ্বকাপে ব্যাটিংয়ের যে দৈন্যদশা দেখলাম, তা মেনে নেওয়া সত্যি কষ্টকর। সংশ্লিষ্ট কোচের দায় এখানে কম নয়। বিচ্ছিন্নভাবে দু–তিনজন ব্যাটসম্যান ভালো করলেও ধন্যবাদ দিতে হয় বোলারদের, যাদের কারণে আমরা বেশ কিছু ম্যাচে প্রভাব বিস্তার করতে পেরেছি। তরুণ তানজিম সাকিব ও লেগ স্পিনার রিশাদ আমাদের বোলিং ইউনিটে দারুণ সংযোজন। তবে বল বা ব্যাট হাতে সাকিব আল হাসানের পারফর্ম করতে না পারা দলকে ভুগিয়েছে। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদেরও নিজেকে নিয়ে সন্তুষ্ট না হওয়ারই কথা।
সময় এসেছে, খেলোয়াড়–সংকট বা দুর্বল প্রস্তুতির কারণ খুঁজে বের করার। দলের দায়িত্বে যাঁরা ছিলেন, তাঁদেরও সঠিক মূল্যায়ন হওয়া উচিত। ভবিষ্যতে এভাবে আর নয়, আরও বড় স্বপ্ন নিয়ে আমরা বিশ্বকাপে যেতে চাই।
লেখক: ক্রিকেট কোচ ও বিশ্লেষক