এখনো বিশ্বকাপে খেলার আশা ছাড়েননি উইলিয়ামসন
চোটের সঙ্গে বেশ লম্বা এক লড়াই চলছে, ওদিকে বিশ্বকাপের বাকি সাড়ে তিন মাসের মতো। তবে ভারতে হতে যাওয়া ওয়ানডে বিশ্বকাপের খেলা এখনো ছাড়েননি কেইন উইলিয়ামসন। অবশ্য ভারতে খেলার চেয়ে তাঁর প্রাধান্য হাঁটুর পুরোপুরি সেরে ওঠা, সেটিও বলেছেন নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক। আপাতত সপ্তাহ ধরে ধরে এগোচ্ছেন উইলিয়ামসন।
আইপিএলের প্রথম ম্যাচে গুজরাট টাইটানসের হয়ে খেলার সময় ডান হাঁটুর লিগামেন্টে চোট পান উইলিয়ামসন। এরপর অস্ত্রোপচারও লাগে তাঁর। লম্বা সময়ের জন্য মাঠের বাইরে থাকতে হচ্ছে তাঁকে, বিশ্বকাপ খেলাও পড়ে গেছে চরম অনিশ্চয়তায়।
এর আগে বলা হয়েছিল, শেষ পর্যন্ত যদি উইলিয়ামসন না-ও খেলতে পারেন, দলের সঙ্গে মেন্টর হিসেবে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে তাঁর। এবার নিজেই চোটের সর্বশেষ অবস্থা জানিয়েছেন এ ব্যাটসম্যান। তবে বিশ্বকাপ সামনে রেখে ফেরার দিকে নয়, বরং হাঁটু ঠিকঠাক করাই তাঁর মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে।
আইপিএলের ওই ম্যাচে ওই ফিল্ডিংয়ের সময়ই উইলিয়ামসন বুঝেছিলেন, কিছু একটা গড়বড় হয়েছে। তবে চোট যে এতটা গুরুতর, সেটি ভাবেননি, ‘সে সময় খুবই আশাবাদী ছিলাম যে তেমন ক্ষতি হয়নি। তবে এরপর স্ক্যান করে বোঝা গেল ব্যাপারটি কী। বাস্তবতা তখনোই আঘাত করে আসলে। এরপর মনোযোগ অন্যদিকে দিতে হয়। আপনার পরিকল্পনায় বিশাল পরিবর্তন আনতে হয়। এরপর আবার এমন একটা ব্যাপারের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া, যেটি আমার ক্যারিয়ারে নতুন।’
উইলিয়ামসন বলেছেন, ‘এ মুহূর্তে সপ্তাহ ধরে ধরে এগোতে চাচ্ছি। এর আগে এমন দীর্ঘমেয়াদি চোটে পড়িনি। তবে যারা পড়েছে, তাদের সঙ্গে কথা বলে একটা ব্যাপার বুঝেছি। আপনি যদি খুব দূরে তাকান, তাহলে ব্যাপারটি বেশ কঠিন হয়ে পড়তে পারে।’
উইলিয়ামসন কথা বলেছেন একই চোটে পড়া কয়েকজন রাগবি খেলোয়াড়ের সঙ্গেও। গুগল করে দেখেছেন, ঘটনাটি কেমন। এরপর আবার এনবিএ ফাইনাল দেখার সময় কোনো খেলোয়াড়কে দেখেও মনে হয়েছে, তিনিও এমন চোটে পড়েছিলেন! স্বাভাবিকভাবেই, এ চোট নিয়ে ব্যাপক আগ্রহ জন্মেছে তাঁর। এরপর উপলব্ধি হয়েছে, ‘আমিই প্রথম নই, শেষও নই (এ চোটে পড়া খেলোয়াড়)। এটা আসলে প্রক্রিয়া ধরে কাজ করে যাওয়ার ব্যাপার।’
আপাতত তাই ধাপে ধাপে এগোচ্ছেন উইলিয়ামসন, ‘সেখানে এক সপ্তাহ লক্ষ্য করে যদি এগোই, ছোট ছোট ধাপ পেরিয়ে যাই, ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জয়ই দারুণ অভিজ্ঞতা। তবে এটাও জানতে হবে, পথটা মসৃণ নয়। এ পথে বাধা থাকবেই।’
সর্বশেষ দুই বিশ্বকাপে নিউজিল্যান্ডের সাফল্যের অন্যতম ভরসা ছিলেন উইলিয়ামসন। ২০১৫ সালের পর ২০১৯ সালেও ফাইনাল খেলে নিউজিল্যান্ড। ২০১৫ সালে বড় ব্যবধানে হারলেও পরের আসরে লর্ডসে ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা ম্যাচে সুপার ওভারের শেষে ইংল্যান্ডের কাছে হারে কিউইরা। উইলিয়ামসন হন টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড়।
এ মুহূর্তে সপ্তাহ ধরে ধরে এগোতে চাচ্ছি। এর আগে এমন দীর্ঘমেয়াদি চোটে পড়িনি। তবে যারা পড়েছে, তাদের সঙ্গে কথা বলে একটা ব্যাপার বুঝেছি। আপনি যদি খুব দূরে তাকান, তাহলে ব্যাপারটি বেশ কঠিন হয়ে পড়তে পারে।
তবে নিউজিল্যান্ডের সীমিত ওভারের অধিনায়ক আপাতত একেবারে প্রাথমিক অনুশীলন করছেন। সম্প্রতি নিজের পায়ে ভর দিয়ে হেঁটেছেন। এবার সামনে লক্ষ্য নেটে ফেরা। চোটের এ পর্যায়কে তিনি ব্যাখ্যা করেছেন এভাবে, ‘এটি হয়তো নিজের মানসিক অবস্থা একটু ঠিকঠাক রাখার জন্য, রুটিনে একটু পরিবর্তন আনার ব্যাপার। অন্য যারা অনুশীলন করছে, তাদের সঙ্গে জিমে যাওয়া, ফিজিওর সঙ্গে কাজ করা, পুনর্বাসনে নির্দিষ্ট কিছু করাটা এখন দারুণ। তবে নেটে ফিরতে এ মুহূর্তে নিশ্চিতভাবেই দারুণ আগ্রহী আমি।’
বিশ্বকাপের জন্য আগস্টে গিয়ে দল ঘোষণা করতে পারে নিউজিল্যান্ড। ১০ দলের এ টুর্নামেন্ট বেশ দীর্ঘ, রাউন্ড রবিন পদ্ধতিতে খেলা বলে প্রথম পর্বেই খেলতে হবে ৯টি ম্যাচ। সে ক্ষেত্রে গ্রুপ পর্বের শেষ দিকে বা নকআউট পর্বে নিউজিল্যান্ড গেলে উইলিয়ামসনের খেলার সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে। তবে আপাতত উইলিয়ামসনের মাথায় এসব নেই, ‘আমি খুব একটা ভাবিনি। দলের দিক থেকে চিন্তা করলে সিদ্ধান্ত কী হবে, সেটিও জানি না।’