২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

ওয়ার্নারের সমালোচনা করা জনসনের সুস্থতা নিয়ে প্রশ্ন বেইলির

ওয়ার্নারের সমালোচনায় জনসনফাইল ছবি

পাকিস্তানের বিপক্ষে সিডনি টেস্ট দিয়ে ক্রিকেটের এই সংস্করণ থেকে অবসর নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন ডেভিড ওয়ার্নার। টেস্টে খুব একটা ছন্দে নেই অস্ট্রেলিয়ান ওপেনার। এরপরও ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া মাঠ থেকে বিদায় নেওয়ার সুযোগ দিচ্ছে ওয়ার্নারকে। এ কারণেই তাঁকে রাখা হয়েছে সিরিজের প্রথম টেস্টের দলে

তবে ওয়ার্নারকে এমন আনুষ্ঠানিক বিদায় দেওয়ার বিষয়টি পছন্দ হয়নি অস্ট্রেলিয়ার সাবেক পেসার মিচেল জনসনের। বিশ্বকাপজয়ী এই ক্রিকেটার ‘দ্য ওয়েস্ট অস্ট্রেলিয়ান’-এ লেখা এক কলামে ওয়ার্নারকে ধুয়ে দিয়েছেন। জনসনের এই সমালোচনার জবাব দিতে গিয়ে তাঁর সুস্থতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অস্ট্রেলিয়ার নির্বাচক কমিটির চেয়ারম্যান জর্জ বেইলি।

আরও পড়ুন

জনসন তাঁর কলামে নির্বাচক কমিটির চেয়ারম্যান বেইলিরও সমালোচনা করেছেন। জনসনের সমালোচনার জবাবে বেইলি বলেছেন, ‘আমাকে এর কিছু অংশ পাঠানো হয়েছে। আশা করছি, জনসন ঠিক আছে। আমি অবশ্য নিশ্চিত নই।’

অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ৩১৩টি টেস্ট উইকেট নেওয়া জনসনের ওয়ার্নারের এমন বিদায়ে আপত্তি শুধু ছন্দহীনতার কারণে নয়। এই ওপেনারের নায়কোচিত বিদায় জনসন মানতে পারছেন না বল টেম্পারিং কেলেঙ্কারির কারণেও।

বল টেম্পারিং করে স্মিথ-ওয়ার্নার-ব্যানক্রফট নিষিদ্ধ হয়েছেন
ছবি: এএফপি

২০১৮ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে কেপটাউন টেস্টে স্টিভেন স্মিথ ছিলেন অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক, ওয়ার্নার ছিলেন তাঁর সহকারী। সেই টেস্টে বল টেম্পারিং করে ধরা পড়েছিলেন ক্যামেরন ব্যানক্রফট। এর দায়ে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া সেই ম্যাচের অধিনায়ক স্মিথ ও সহ-অধিনায়ক ওয়ার্নারকে এক বছরের জন্য সব ধরনের ক্রিকেটে নিষিদ্ধ করেছিল। ব্যানক্রফটকে নিষিদ্ধ করেছিল ৯ মাসের জন্য। একই সঙ্গে ওয়ার্নারকে অধিনায়কত্বে আজীবন নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। সংবাদমাধ্যমে সেই সময় এমনও খবর এসেছিল যে পুরো ঘটনাটাই ওয়ার্নারের পরিকল্পনায় হয়েছিল।

আরও পড়ুন

এ ঘটনার সঙ্গে সাম্প্রতিক সময়ে টেস্টে ওয়ার্নারের ফর্মের প্রসঙ্গও টেনে এনেছেন জনসন। বিশ্বকাপে ভালো খেললেও টেস্টে অনেক দিন ধরেই ওয়ার্নার ছন্দহীন। ২০১৯-২০ মৌসুমের পর থেকে টেস্টে ওয়ার্নারের গড় মাত্র ২৮। ২০২০ সালের পর টেস্টে শতক মাত্র একটি। অন্যদিকে ঘরোয়া ক্রিকেটে দুর্দান্ত পারফর্ম করে এই জায়গা নেওয়ার জন্য নির্বাচকদের দরজায় কড়া নাড়ছেন ক্যামেরন ব্যানক্রফট, মার্কাস হ্যারিস ও ম্যাট রেনশ।

টেস্টে সময়টা ভালো যাচ্ছে না ওয়ার্নারের
ছবি: রয়টার্স

কলামে জনসন লিখেছেন, ‘আমরা এখন ডেভিড ওয়ার্নারের বিদায়ী টেস্ট সিরিজের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি। কেউ কী বলতে পারবেন, কেন? কেন ফর্মের সঙ্গে লড়াই করা একজন ওপেনার নিজেই নিজের অবসরের তারিখ ঠিক করে? অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেট ইতিহাসের সবচেয়ে কলঙ্কজনক অধ্যায়ের কেন্দ্রে থাকা একজন খেলোয়াড়কে কেনই–বা নায়কোচিত বিদায় দিচ্ছি আমরা?’

জনসন যোগ করেন, ‘যদিও ওয়ার্নার একা স্যান্ডপেপার কেলেঙ্কারিতে জড়িত ছিল না। তবে ওই সময় ওয়ার্নার দলে সিনিয়র সদস্য ছিল। এমন একজন ছিল, যে নেতা হিসেবে তার ক্ষমতা দেখাতে পছন্দ করত। এখন ও এমনভাবে অবসর নিচ্ছে, যেটা আমাদের দেশের প্রতি একই রকম ঔদ্ধত্য ও অসম্মান।’

আরও পড়ুন

জনসন তাঁর কলামে লিখেছেন, ‘গত গ্রীষ্মে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ওয়ার্নার দ্বিশতক করেছে, কিন্তু এটাই ছিল গত কয়েক বছরে ওর খেলা একমাত্র বড় ইনিংস। অ্যাশেজের আগে ১৭ ইনিংসের মধ্যে ওই একবারই ও ৫০ রানের কোটা পার হতে পেরেছে।’

পেইনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভার বেইলি ছেড়ে দেন কোচ জাস্টিন ল্যাঙ্গারের হাতে
ছবি: এক্স

বেইলির সমালোচনা করতে গিয়ে জনসন এখানে অস্ট্রেলিয়ার সাবেক অধিনায়ক টিম পেইনের প্রসঙ্গও তুলে এনেছেন। তিনি লিখেছেন, ‘সেক্সটিং-বিতর্কে ওই সময়ের অধিনায়ক টিম পেইনের ক্যারিয়ার যখন শেষ হয়ে যাচ্ছিল, তখন পেইনের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্তের অংশ বেইলি হতে চায়নি। কারণ, তারা দুজন কাছের বন্ধু ছিল। বেইলি তখন এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভার ছেড়ে দেয় কোচ জাস্টিন ল্যাঙ্গার ও অন্য নির্বাচক টনি ডডিমেইডের ওপর।’

জনসন যোগ করেন, ‘তিন সংস্করণেই ওয়ার্নার বেইলির সঙ্গে খেলেছে। ওয়ার্নারকে যেভাবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সামলানো হয়েছে, তাতে প্রশ্ন জাগে বেইলি খেলা ছেড়ে খুব দ্রুতই দায়িত্ব পেয়ে গেছে কি না আর কিছু ক্রিকেটারের সঙ্গে খুব বেশি ঘনিষ্ঠ কি না?’

অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় দলের প্রধান নির্বাচক জর্জ বেইলি
ছবি: এএফপি

বেইলি এই প্রসঙ্গে জবাব দিয়েছেন এভাবে, ‘ আমি শুধু একটা কথাই বলতে চাই, কেউ যদি আমাকে দেখাতে পারে, দূর থেকে খেলোয়াড়েরা কীসের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে, দল ও কোচিং স্টাফদের পরিকল্পনা না জানা থাকাটা বেশি লাভজনক , তাহলে এমন কথা শুনতে আমি রাজি আছি।’

অস্ট্রেলিয়া দলের হয়ে একসঙ্গে পাঁচ বছরের বেশি সময় খেলেছেন ওয়ার্নার ও জনসন। ২০১৫ সালে অবসর নেওয়ার আগে খেলেছেন বেইলির সঙ্গেও।

আরও পড়ুন