রুট জানালেন, ‘বাজবলে’ তিনিও আছেন
সেঞ্চুরির আগে দুটি ছয় মেরেছেন, দুটিই রিভার্স স্কুপে। একটি প্যাট কামিন্সকে, আরেকটি স্কট বোল্যান্ডকে। জো রুট যেন জানান দিলেন, বাজবল ক্রিকেটে তিনি ‘অনাহূত’ কেউ নন, বাজবলেরই একজন।
এজবাস্টনে আজ রুটের ‘বাজবল’ ব্যাটিং কত দূর এগোত, বলা মুশকিল। ৩০তম টেস্ট সেঞ্চুরির মাইলফলক স্পর্শ করার পর নাথান লায়নকে দুই ছক্কা মেরে যখন গ্যালারিতে নাচন তুলেছেন, তখনই ইংল্যান্ডের প্রথম ইনিংস ঘোষণা করে দেন বেন স্টোকস।
তাও কখন? ৭৮ ওভারে ৮ উইকেটে ৩৯৩ রান তুলে। অ্যাশেজের প্রথম টেস্টের প্রথম দিনেই পরিষ্কার বার্তা— আক্রমণাত্মক ও ফলকেন্দ্রিক ক্রিকেটই খেলবে ইংল্যান্ড। দিনের শেষ বেলায় ৪ ওভার ব্যাট করেছে অস্ট্রেলিয়া। কামিন্সের দল দিন শেষ করেছে বিনা উইকেটে ১৪ রানে।
গত এক বছর ইংল্যান্ড যে ধারায় খেলে এসেছে, অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে পাঁচ টেস্টের এই সিরিজেও তেমনই চলবে বলে ম্যাচের আগের দিনই জানিয়ে রেখেছিলেন ইংল্যান্ড অধিনায়ক। আজ সকালে টস জেতে ব্যাটিংয়ে নামার পর প্রথম বলে সেটিরই মঞ্চায়ন ঘটান জ্যাক ক্রলি। কামিন্সের অফস্টাম্পের বাইরের বলকে বেশ আত্মবিশ্বাস নিয়েই কাভার দিয়ে বাউন্ডারিতে পাঠিয়ে দেন।
২০২১ অ্যাশেজের প্রথম বলে মিচেল স্টার্কের ইয়র্কারে বোল্ড হয়েছিলেন ররি বার্নস। ইংল্যান্ড সিরিজ হেরেছিল ৪-০ ব্যবধানে। এবার ঘরের মাঠে প্রথম বলেই ক্রলির অমন শটের পর ড্রেসিংরুমে বসা স্টোকসের মুখে ফুটে ওঠে আক্রমণাত্মক শুরুর তৃপ্তিময় হাসি! ক্রলির অমন দারুণ শুরুর পরও অবশ্য প্রথম সেশনটা ঠিক ইংল্যান্ডের ছিল না।
চতুর্থ ওভারেই জস হ্যাজলউডের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন বেন ডাকেট। ওলি পোপ এসে ক্রলির সঙ্গে ৫০ ছাড়ানো জুটি গড়ে তুললেও বেশি দূর এগোতে পারেননি। ৩১ রান করে এলবির ফাঁদে পড়েন নাথান লায়নের স্পিনে। মধ্যাহ্ন বিরতির আগে শেষ ওভারে ফেরেন ক্রলিও। বোল্যান্ডের বলে উইকেটের পেছনে অ্যালেক্স ক্যারির ক্যাচে থামে ক্রলির ৭৩ বলে ৬১ রানের ইনিংস।
প্রথম সেশনে ৩ উইকেটে ১২৪ রান তোলা ইংল্যান্ড পরের সেশনে হারায় হ্যারি ব্রুক ও স্টোকসের উইকেট দুটি। এর মধ্যে বিদঘুটে আউটের শিকার হওয়ার আগে স্বচ্ছন্দেই খেলছিলেন ব্রুক। ৩৭ বলে ৩২ রান করা এই ডানহাতি ইনিংস থামে লায়নের বলে। বাঁক খেয়ে ভেতরে ঢোকা বল থাই প্যাড ও তাঁর হাত হয়ে ওপরের দিকে উঠে যায়।
উইকেটরক্ষক, ফরোয়ার্ড লেগের ফিল্ডার আর ব্রুক যখন বল কোথায় খুঁজছেন, ওপর থেকে বল মাটিতে পড়ে আঘাত করে স্টাম্পে। এর পরের ওভারেই জশ হ্যাজলউডের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন স্টোকস। ইংল্যান্ডের রান তখন ৫ উইকেটে ১৭৬।
এখান থেকে স্বাগতিকদের টেনে তোলে রুট-জনি বেয়ারস্টো জুটি। পঞ্চাশের মাইলফলক দুজন এগিয়ে যান বড় ইনিংসের দিকেও। তবে বেয়ারস্টো ৭৮ বলে ৭৮ রান তুলে লায়নের বলে স্টাম্পিং হলে থেমে যায় ১২১ রানের ষষ্ঠ উইকেট জুটি।
বেয়ারস্টো সেঞ্চুরি মিস করলেও রুট সুযোগ নষ্ট করেননি। ১৪৫ বলে তুলে নেন টেস্ট ক্যারিয়ারের ৩০তম সেঞ্চুরি, অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৮ বছর পর এই প্রথম। এর আগে ২০১৫ সালের আগস্টে নটিংহাম টেস্টে অজিদের বিপক্ষে তিন অঙ্কের ইনিংস খেলেছিলেন তিনি। রুটের ৩০তম সেঞ্চুরিটি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ৪৬তম। সক্রিয় ক্রিকেটারদের মধ্যে বিরাট কোহলির ৭৫ সেঞ্চুরির পর এটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।
শেষ পর্যন্ত ১৫২ বলে ১১৮ রানে অপরাজিত থাকেন রুট। অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে ১৪৯ রানে ৪ উইকেট নেন লায়ন।