২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

শানাকারা ক্রিকেটের ‘শ্রীলঙ্কান ব্র্যান্ড ফিরিয়েছেন’

চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর শ্রীলঙ্কা দলছবি: এএফপি

একপেশে লড়াইয়ে আফগানিস্তানের কাছে হার দিয়ে শুরু, আর ফাইনালে একপেশে লড়াইয়ে পাকিস্তানকে হারিয়ে মধুর সমাপ্তি—এশিয়া কাপ টি-টোয়েন্টিতে এই হলো শ্রীলঙ্কা!

টুর্নামেন্টে মোট ৬টি ম্যাচ খেলেছে দাসুন শানাকার দল। প্রথমটিতে হারের পর শিরোপা জিতেছে টানা পাঁচ জয়ে। পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৪ সালের পর এই প্রথম টানা পাঁচ টি-টোয়েন্টি জিতল শ্রীলঙ্কা। সর্বশেষ এমন টানা জয় এসেছিল দলটি যখন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জিতেছিল। গত আট বছরে শ্রীলঙ্কা অনেকগুলো ম্যাচ টানা জেতেনি, ট্রফি তো নয়ই।

আরও পড়ুন

পরিস্থিতি এমনই বেগতিক ছিল যে, আগামী মাসে অস্ট্রেলিয়ায় শুরু হতে যাওয়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সরাসরি মূল পর্বেও খেলতে পারবেন না শানাকারা, খেলতে হবে বাছাইপর্ব।

পেছাতে পেছাতে দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া একটি দল যখন মহাদেশীয় প্রতিযোগিতায় বাজে শুরুর পরও শেষ পর্যন্ত ট্রফি হাতে নিয়ে মাঠ ছাড়তে পারে, তখন তো বাহবা দিতেই হয়। বিশেষ করে আট বছর আগে লঙ্কাকে যারা সাফল্যের পথে রেখে গিয়েছিলেন, সাবেক হয়ে যাওয়া সেই ক্রিকেটারদের আনন্দটা এ ক্ষেত্রে বেশিই। মাহেলা জয়বর্ধনে যেমন লিখেছেন, ‘টসে হেরে ভালোই হয়েছে। তোমরা দেশের হয়ে খেলার প্যাশন এবং ব্যক্তিত্ব দেখিয়েছ। তোমাদের প্রত্যেকের জন্য গর্ব হচ্ছে। সারা দেশের মতো এ জয় উপভোগ করো। দুর্দান্ত দলীয় প্রচেষ্টা।’

জয়বর্ধনের সতীর্থ কুমার সাঙ্গাকারাও টুইট করেছেন শানাকার দল নিয়ে। শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট বোর্ড, অধিনায়ক শানাকা এবং ফাইনালসেরা রাজাপক্ষেকে ট্যাগ করে লিখেছেন, ‘দুর্দান্ত জয় এবং সম্পূর্ণরূপে প্রাপ্য। সত্যিকার চ্যাম্পিয়নের মতোই খেলেছ। দল হিসেবে তোমরা অনুপ্রাণিত করে চলেছ।’

শানাকার আগে শ্রীলঙ্কার হয়ে যিনি এশিয়া কাপের ট্রফি হাতে তুলেছিলেন, সেই অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস লিখেছেন, ‘চ্যাম্পিয়নের মতো খেলে বড় উপলক্ষ এনে দিয়েছে ছেলেরা। শানাকা ভালো নেতৃত্ব দিয়েছে, রাজাপক্ষে কী চমৎকার ইনিংস খেলেছে, ওয়ানিন্দু এবং করুনারত্নে বল হাতে কী দারুণ খেলল! শ্রীলঙ্কা বোর্ডের কী এক মুহূর্ত! জয় উপভোগ করো।’ আরেক সাবেক ক্রিকেটার সনাথ জয়াসুরিয়া লিখেছেন, ‘চমৎকার জয়ের জন্য অভিনন্দন। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে সেই শ্রীলঙ্কান ব্রান্ডের ক্রিকেট ফিরে এসেছে, যার জন্য আমাদের সুনাম ছিল। পরিকল্পনামতোই তোমরা ট্রফি ঘরে নিয়ে এসেছ। এই মুহূর্তটা উপভোগ করো। পরবর্তী লক্ষ্য বিশ্বকাপ।’

শুধু শ্রীলঙ্কার সাবেকরা নন, এশিয়া কাপ জয়ে পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেটাররাও শ্রীলঙ্কাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। ২০১৪ এশিয়া কাপ ফাইনালে শ্রীলঙ্কার কাছে হেরে যাওয়া পাকিস্তান দলে ছিলেন শহীদ আফ্রিদি। তখন নিজেরা হারলেও আশা করেছিলেন উত্তরসূরিরা এবার হারবে না, বিশেষ করে টস জেতার পর বাবরদের হার চিন্তাই করেননি তিনি। টুইটারে লিখেছেন, ‘যখন খেলা দেখা শুরু করলাম, মনে হয়েছে পাকিস্তান একপেশে বানিয়ে ফেলবে। কিন্তু শেষপর্যন্ত ম্যাচটি শ্রীলঙ্কাই একপেশে বানিয়ে ফেলল। পুরো টুর্নামেন্টে, বিশেষ করে ফাইনালে শ্রীলঙ্কা ভালো খেলেছে। এশিয়া কাপ তাদের প্রাপ্য।’

শ্রীলঙ্কাকে পাকিস্তানের তুলনায় এগিয়ে রেখে অভিনন্দন জানিয়েছেন ওয়াসিম আকরামও, ‘জয়ই সবকিছু নয়, কিন্তু জয়ই একমাত্র। এটাই ছিল এই দুর্দান্ত শ্রীলঙ্কা দলের একমাত্র মন্ত্র। দিন শেষে ভালো দলটিই জিতেছে। অভিনন্দন।’ এ ছাড়া পাকিস্তানের হারে হতাশা ও ভুল শোধরানোর পরামর্শ দিয়ে করা টুইটে শ্রীলঙ্কাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন মোহাম্মদ হাফিজ, কামরান আকমল, সাইদ আজমলরা।

ফাইনালিস্ট দুই দেশের বাইরে শ্রীলঙ্কাকে অভিনন্দন জানিয়ে টুইট করেছেন বাংলাদেশের মুশফিকুর রহিম। গ্রুপ পর্বে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে শেষ ম্যাচ খেলে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিকে বিদায় জানানো মুশফিক লিখেছেন, ‘চাপের মধ্যে কী দারুণ ইনিংস খেলেছে ভানুকা, আর ব্যাটে ও বলে কী দারুণ সহায়তা দিয়েছে হাসারাঙ্গা। যোগ্যতর দলটিই এশিয়া কাপের ট্রফি হাতে তুলেছে। অভিনন্দন শ্রীলঙ্কা।’

ভারতের সাবেক ওপেনার বীরেন্দর শেবাগ অভিনন্দন জানাতে গিয়ে শ্রীলঙ্কার এই দলটির বিশ্বকাপ বাছাইয়ের কথা উল্লেখ করেছেন, ‘শ্রীলঙ্কা ভালো খেলেই এশিয়া কাপ জিতেছে। ভাবুন তো, এই দলটিই আগামী মাসে হতে যাওয়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে কোয়ালিফাই করতে পারে নাই। যে আপনার সঙ্গে কোয়ালিফাই করতে পারে নাই, তার কাছে হারাটা কেমন চমকপ্রদ ব্যাপার নয় কি! সব দলের ঘুম উড়ে যাবে।’