পাল্লেকেলের উইকেটে রান করাটা সহজ নয় বলেই প্রমাণিত হলো। বাংলাদেশের ১৬৪ টপকাতে গিয়েও যখন চেনা মাঠে ঘরের দল শ্রীলঙ্কাকে ৩৯ ওভার পর্যন্ত খেলতে হয় এবং হারাতে হয় ৫ উইকেট, তখন এ নিয়ে আর কোনো সংশয়ই থাকে না।
কিন্তু তাই বলে কি উইকেটে বাংলাদেশ ২০০–ও করতে পারবে না? বাংলাদেশের অভিজ্ঞ বোলিং আক্রমণের বিপক্ষেও যদি শ্রীলঙ্কা ৫ উইকেট হাতে রেখে জিততে পারে, শ্রীলঙ্কার তুলনামূলক অনভিজ্ঞ বোলারদের বিপক্ষে কেন বাংলাদেশ ১৬৪–তে আটকে যাবে!
এই ব্যর্থতা মানতে পারছেন না অধিনায়ক সাকিব আল হাসানও। পাল্লেকেলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আজ মঙ্গলবার শ্রীলঙ্কার কাছে ৫ উইকেটে হারার পর পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ অধিনায়ক বলেছেন, ‘এটা ৩০০ রান করার উইকেট নয়, তবে আমাদের ২২০–২৩০ রান করা উচিত ছিল।’
সে উচিত কাজটা করতে না পারার ব্যর্থতা সাকিব নিয়েছেন নিজের কাঁধেও, ‘আমার নিজেরও আরও দায়িত্ব নেওয়া উচিত ছিল। কিন্তু আমি সেটা নিতে পারিনি। ব্যাটিংয়ে আমরা ভালো করতে পারিনি। সামনে এখন আমাদের জন্য বড় একটা ম্যাচ অপেক্ষা করছে।’
ব্যাটিং খারাপ হওয়ার পরও অবশ্য সাকিব একবার আশাবাদী হয়ে উঠেছিলেন। সেটা ৪৩ রানে শ্রীলঙ্কার ৩ উইকেট পড়ে যাওয়ার পর, ‘আমাদের তখনই আরও কিছু উইকেট নেওয়া দরকার ছিল। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমরা সেটা নিতে পারিনি। স্কোরবোর্ডেও যথেষ্ট রান ছিল না।’
ম্যাচ শেষে দলের প্রতিনিধি হয়ে সংবাদ সম্মেলনে আসেন বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ৮৯ রান করা নাজমুল হোসেন। দলের ব্যাটিং ব্যর্থতায় পাল্লেকেলের উইকেটের একটা ভূমিকা তিনিও দেখেন।
তবে বলেছেন, এই উইকেটেও আরও ভালো ব্যাটিং করা উচিত ছিল তাঁদের, ‘এটা বলব না যে উইকেট অনেক সহজ ছিল। নতুন বলে হয়তো একটু সহজ ছিল, তবে বল যখন পুরোনো হয়, তখন কঠিন ছিল খেলা। আমার মনে হয়, আমরা ওপরের দিকের ব্যাটসম্যানরা যদি ভালো জুটি গড়তে পারতাম, তাহলে হয়তো এ রকম সমস্যায় পড়তে হতো না। আমাদের আরেকটু ভালো ব্যাটিং করা উচিত ছিল।’
লিটন দাসের অনুপস্থিতিতে বাংলাদেশ দলের প্রথম চার ব্যাটসম্যানই ছিলেন বাঁহাতি। তবে সেটাকে কোনো সমস্যা মনে হয়নি নাজমুলের, ‘আমার মনে হয় না, এটা কোনো সমস্যা ছিল। কারণ, সবাই বাঁহাতি–ডানহাতি বোলারদের খেলার প্রস্তুতি নিয়েই আসে। আমাদের সবারই সামর্থ্য আছে যেকোনো পরিস্থিতি ও যেকোনো বোলিংয়ের বিপক্ষে ব্যাটিং করার।’
শ্রীলঙ্কার কাছে হেরে যাওয়ায় ৩ সেপ্টেম্বর লাহোরে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচটা বাংলাদেশের জন্য হয়ে দাঁড়িয়েছে জীবন–মরণ লড়াই। হারলে তো সুপার ফোরে ওঠাই হবে না, জিতলেও থেকে যেতে পারে নেট রান রেটের সমীকরণ।
নাজমুল অবশ্য এখনই অত দূর ভাবতে রাজি নন। তিনি বরং আশাবাদী—বাংলাদেশ এখনো সুপার ফোরে খেলতে পারবে। তবে আপাতত তাঁদের চিন্তায় কেবলই আফগানিস্তান, ‘অবশ্যই সম্ভব (সুপার ফোরে খেলা)। তবে এত দূর চিন্তা না করে আমাদের এখন পরের ম্যাচটা কীভাবে জিততে পারি, সেটা নিয়েই পরিকল্পনা করতে হবে, প্রস্তুতি নিতে হবে। আমরা ওই ম্যাচটা জেতার জন্যই খেলব। ম্যাচটা যদি জিতি, তাহলে কি পরিস্থিতি দাঁড়ায়, সেটা তখনই দেখা যাবে।’