সূচি
দল পরিচিতি
ইংল্যান্ড: ‘ব্যান্ড অব ব্রাদার্স’-এর ‘দ্য লাস্ট ড্যান্স
যে দলটা ১৯৯৬ থেকে ২০১৫ বিশ্বকাপ পর্যন্ত সেমিফাইনালে উঠতে পারেনি একবারও, সেই দলটাকে ছাড়া ২০২৩ বিশ্বকাপ সেমিফাইনালের লাইনআপ ভাবতে পারছেন না হয়তো আপনিও। শুধু ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন বলেই নয়, ২০১৫ সালের পর থেকে ইংল্যান্ডের ওয়ানডে (সীমিত ওভারেরই) ক্রিকেট যে বদলে গেছে এতটাই। দাপুটে এই ইংল্যান্ডের খেলার প্রভাব এমন, এ সময়ে সীমিত ওভারের ক্রিকেটের ধরনকেই তারা বদলে দিয়েছে।
২০১৫ সালে গ্রুপ পর্বে চারটি টেস্ট খেলুড়ে দেশের কাছেই হেরেছিল ইংল্যান্ড, অ্যাডিলেডে বাংলাদেশের কাছে হেরে নিশ্চিত হয়েছিল বিদায়। চার বছর পরের গ্রীষ্মে, লর্ডসে প্রায় নেমে আসা গোধূলিতে, মহাকাব্যিক এক ফাইনাল শেষে তারাই জিতেছিল ‘বেয়ারেস্ট অব মার্জিনস’ বা সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম ব্যবধানে। পূর্ণতা পেয়েছিল চার বছরের এক যাত্রা। আর এবার তাদের সামনে হাতছানি ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও অস্ট্রেলিয়ার পর টানা বিশ্বকাপ জয়ের।
এবার অবশ্য বিশ্বকাপের মঞ্চে ইংল্যান্ড হাজির হবে ভিন্ন এক রূপেই। ২০১৫ থেকে ২০১৯ সালের দুই বিশ্বকাপের মাঝখানে সর্বোচ্চ ৮৮টি ওয়ানডে খেলেছিল ইংল্যান্ড। সেবারের অর্ধেকের কম ম্যাচ খেলেছে এবার। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের দলে আবার ছিলেন না বিশ্বকাপমুখী কেউ। অবশ্য ওয়ানডে ক্রিকেটের অবস্থাই এখন এমন, বিশ্বকাপে সুযোগ পাওয়া বেশির ভাগ দলের ওয়ানডে খেলার হারও গত চার বছরে বেশ নিম্নমুখী। কিন্তু ইংল্যান্ডে ওয়ানডে ক্রিকেট গত কয়েক বছরে বলতে গেলে নেমে গেছে দ্বিতীয় সারিতে। ঘরোয়া টুর্নামেন্টটি আড়ালে পড়ে গেছে দ্য হানড্রেডের কারণে। এ সময়ে পূর্ণশক্তির দল নিয়ে কয়টি আন্তর্জাতিক ওয়ানডে ম্যাচ খেলেছে ইংল্যান্ড, সেটি খুঁজে বের করা কঠিনই।
তবে একসঙ্গে না খেললেও ভারতে এই দলের খেলার ধরন কী হবে, তা নিয়ে সংশয় থাকার কথা নয়। কোচ বদলেছে, অধিনায়ক বদলেছে, আরও কজন অবসরে, কয়েকজন দৃশ্যপটে নেই; কিন্তু চার বছর আগের মতো এবারও ইংল্যান্ডের শক্তির জায়গাটা অপরিবর্তিত—লম্বা ব্যাটিং লাইনআপ, জফরা আর্চারের অনুপস্থিতিতেও বৈচিত্র্যময় বোলিং আক্রমণ, প্রভাববিস্তারী অলরাউন্ডারের উপস্থিতি। আর যেকোনো পরিস্থিতি থেকে আক্রমণাত্মক স্টাইলে বের হয়ে আসার মানসিকতা।
২০১৯ সালে নিজেদের মাটিতে খেললেও এবার খেলতে হবে ভারতে, তবে সে কন্ডিশনটাও যে একেবারে অপরিচিত, তা নয়। ২০১৫ বিশ্বকাপে আইপিএলের অভিজ্ঞতা থাকা মাত্র দুজন ছিলেন ইংল্যান্ড দলে, এবার একজন ছাড়া বাকি সবারই সে অভিজ্ঞতা আছে। ইতিহাসের অন্যতম বয়সী দলও এবার ইংল্যান্ডের। অক্টোবর-নভেম্বরে গড়ে প্রায় ৩২ বছরের বেশি বয়সী একটা একাদশ নিয়েই নামতে পারে তারা।
২০১৫ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে ইংল্যান্ডের প্রায় ৮৯ শতাংশ ম্যাচই খেলেছিলেন জো রুট, বেন স্টোকস ছিলেন প্রায় ৬৮ শতাংশ ম্যাচে। রুট এবার বিশ্বকাপে যাবেন সর্বোচ্চ প্রায় ৪৪ শতাংশ ম্যাচ খেলে। স্টোকস তো ওয়ানডে থেকে অবসর নিয়ে বাইরে ছিলেন এক বছরের বেশি সময়। বিশ্বকাপ সামনে রেখে একত্র হয়েছেন তাঁরা, গতবারের চ্যাম্পিয়ন দলের ১০ জন আছেন এবারও। লক্ষ্যটা কী, সেটি নিশ্চয়ই আলাদা করে বলে দিতে হবে না। ২০২৭ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের সীমিত ওভারের সোনালি প্রজন্মের কেউই সেভাবে থাকবেন না, সেটি বলাই যায়। এবারের বিশ্বকাপ তাই এউইন মরগানের তৈরি করা ‘ব্যান্ড অব ব্রাদার্স’-এর জন্য ‘দ্য লাস্ট ড্যান্স’!...আরও