নিজেকে দেওয়া ৫ সেকেন্ডে আবেশের শেষ ওভারের ‘চমক’
শেষ ওভারে রাজস্থান রয়্যালস অধিনায়ক সঞ্জু স্যামসনের হাতে ছিল পাঁচজন বোলার—তিন পেসার ট্রেন্ট বোল্ট, নান্দ্রে বার্গার, আবেশ খানের সঙ্গে দুই স্পিনার রবিচন্দ্রন অশ্বিন ও যুজবেন্দ্র চাহাল। প্রত্যেকেরই বাকি ছিল ১টি করে ওভার। দিল্লি ক্যাপিটালসের জয়ের জন্য দরকার ছিল ১৭ রান। জয়পুরের ম্যাচটিতে স্যামসন ভরসা রাখলেন আবেশের ওপরই, লক্ষ্ণৌ সুপারজায়ান্টসের বিপক্ষে আগের ম্যাচেও যেমন রেখেছিলেন।
আবেশ হতাশ করেননি তাঁর অধিনায়ককে। শেষ ওভারের আগে দুই অপরাজিত ব্যাটসম্যানের স্কোর ছিল এমন—ত্রিস্তান স্টাবস ২১ বলে ৪২, অক্ষর প্যাটেল ৯ বলে ১৩ রান। আবেশের করা শেষ ওভারে দুজন তুলতে পারেন মাত্র ৪ রান। আবেশ ৬টি বলই করেছেন ফুল লেংথে। মারলে সেখান থেকেই তুলে মারতে হবে—যেন এমন বার্তাই দিয়েছেন ব্যাটসম্যানদের।
স্টাবস বা অক্ষর আবেশকে মারতে পারেননি। আগের ম্যাচে লক্ষ্ণৌয়ের নিকোলাস পুরান বা ক্রুনাল পান্ডিয়াও যেমন মারতে পারেননি। রাজস্থানের জেতা দুটি ম্যাচেই শেষ ওভার করেছেন আবেশ, একটিতেও বাউন্ডারি দেননি কোনো। অবশ্য ২ ম্যাচেই আবেশের হাতে ছিল বেশ কিছু রান, প্রথম ম্যাচে তো সম্বল ছিল ২৬। তবে শেষ ওভারে তিনি যে স্যামসনের ভরসা হয়ে উঠেছেন, তা বলাই যায়।
গতকাল ৬টি বলই ফুল লেংথে করার পর আবেশ তাঁর পরিকল্পনা নিয়ে বলেছেন, ‘আমার পরিকল্পনা সব সময়ই পরিষ্কার ছিল। একদিকে বাউন্ডারি বড় ছিল, ফলে ওয়াইড ইয়র্কার করতে চেয়েছি।’
সে পরিকল্পনা কীভাবে বাস্তবায়ন করেছেন, ভারতের হয়ে ২৮টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলা এ পেসার বলেছেন সেটিও, ‘নিজেকে ৫ সেকেন্ড করে সময় দিচ্ছিলাম। শুধু পরিকল্পনা বাস্তবায়নের কথাই ভেবেছি। আমার নজর পরিকল্পনা বাস্তবায়নের দিকেই ছিল। নিজের ইয়র্কারের ওপর ভরসা রেখেছি সব সময়।’
দুই ম্যাচেই রাজস্থানের প্রতিপক্ষ ডেথ ওভারে (১৭-২০) ব্যাটিং শুরু করেছিল অন্তত ৫টি উইকেট হাতে রেখে। তবে রাজস্থানের বোলারদের সঙ্গে পেরে ওঠেনি তারা। আবেশ প্রশংসা করেছেন নিজের বোলিং সতীর্থদেরও, ‘এখানে উপভোগ করছি। কারণ, আমাদের সন্দিপ, বোল্ট, বার্গার আছে। যাদের ভিন্ন ভিন্ন স্কিল আছে।’
অধিনায়ক যে তাঁর ওপর পুরো ভরসা করছেন, আবেশ মনে করিয়ে দিয়েছেন সেটিও, ‘স্যামসন আমাকে পুরো স্বাধীনতা দিয়েছে। আমি ঠিকঠাক করতে না পারলেই শুধু সে আগবাড়িয়ে কিছু করে। আমি সব সময় নিজের উন্নতির চেষ্টা করছি। টি-টোয়েন্টিতে নিজেকে বারবার নতুন করে আবিষ্কারের চেষ্টা করি। আমি দলে সুযোগ পাওয়া নিয়ে ভাবি না, শুধু যেভাবে বোলিং করতে চাই, সেটির অনুশীলন করি।’
আর আবেশদের ওপর ভরসা রাখা নিয়ে স্যামসনের ব্যাখ্যা, ‘আমি এবং সাঙ্গা (কুমার সাঙ্গাকারা) ১৫ ও ১৭তম ওভারের মধ্যে অনেক আলোচনা করেছি—কে ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার হতে পারে। কে কোন মানসিকতায় আছে, সেটি ঠিক করাটাই মূল ছিল। আপনাকে সেসব দেখেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। স্যান্ডিকে (সন্দিপ) দেখে নির্ভার মনে হয়েছে। আবেশকেও ভালো মনে হচ্ছিল। সেভাবেই এগিয়েছি তাই।’
টানা দুই জয়ে এখন পয়েন্ট তালিকায় শীর্ষে থাকা চেন্নাই সুপার কিংসের পরই আছে রাজস্থান। আগামী ১ এপ্রিল ওয়াংখেড়েতে তাদের পরের ম্যাচে মুম্বাই ইন্ডিয়ানসের বিপক্ষে।