২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

বাংলাদেশকে উড়িয়ে দিল ভারত

ভারতের কাছে ৫৯ রানে হেরেছে বাংলাদেশের মেয়েরাছবি: শামসুল হক

সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামের এক নম্বর মাঠে ম্যাচ জেতা-হারা নির্ভর করবে পাওয়ার-প্লের ওপর-ভবিষ্যদ্বাণীটা করেছিলেন থাইল্যান্ড নারী দলের কোচ হার্শাল পাঠক। আজ বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচের গল্পটাও সে রকমই ছিল।

আগে ব্যাটিংয়ে নেমে আজ ভারত তাদের পাওয়ার–প্লেতে ৫৯ রান করেছে, বাংলাদেশ ৩০। পাওয়ার–প্লের সে রান পুঁজি করে ভারত শেষ পর্যন্ত করেছে ৫ উইকেটে ১৫৯ রান। যা তাড়া করতে নেমে বাংলাদেশের ইনিংস থেমেছে ৭ উইকেটে ১০০ রানে।

আরও পড়ুন

৫৯ রানের বড় জয়ে ভারতের সেমিফাইনাল প্রায় নিশ্চিতই বলা যায়। বাংলাদেশ তাদের চতুর্থ ম্যাচ হারলেও এখনো সেমিফাইনালের দৌড়ে টিকে আছে।

সিলেটের নিচু বাউন্সের উইকেটে ভারতের স্কোর তাড়া করতে হলে একটা ভালো শুরু দরকার ছিল বাংলাদেশের। ফারজানা হক ও মুর্শিদা খাতুন সেটি করতে পারেননি।

টি–টোয়েন্টি ক্রিকেট খেলতে নেমে দুজনই ব্যাটিং করেছেন ওয়ানডে মেজাজে। দুজন ফিল্ডার ৩০ গজের বাইরে থাকার সুবিধাটা নিতে পারেননি তাঁরা। ভারতীয় স্পিন তাঁরা খেলেছেন ক্রিজ থেকে।

ভারতের কাছে হেরে সেমির পথ কঠিন হয়ে গেছে বাংলাদেশ দলের
ছবি: শামসুল হক

ফারজানা ৩০ রান করেছেন ৪০ বল খেলে। মুর্শিদার ২১ রান এসেছে ২৫ বলে। ম্যাচের ভাগ্য ভারতের দিকে হেলে পড়ে তখনই। এরপর অধিনায়ক নিগার সুলতানা ২৯ বলে ৩৬ রান করে শুধু ব্যবধানটাই কমিয়েছেন। আর বাকিরা ছিলেন আসা–যাওয়ায় ব্যস্ত।

শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ ৭ উইকেটে ১০০ রানের বেশি করতে পারেনি। ভারতের হয়ে দীপ্তি শর্মা ও শেফালি বর্মা দুটি করে উইকেট নিয়েছেন।
ভারতীয় ইনিংসের শুরুটা ছিল ভিন্ন।

পাকিস্তানের বিপক্ষে গতকালের ম্যাচে পরীক্ষা–নিরীক্ষা করতে গিয়ে নিয়মিত ব্যাটিং অর্ডার পাল্টে ছিল ভারত। বাংলাদেশের বিপক্ষে সেটা করেনি ভারত, নারী দলের পরিচিত নামগুলোই দেখা গেল টপ অর্ডারে।

শেফালি বর্মা, স্মৃতি মান্ধানা, জেমাইমা রদ্রিগেজ—টপ অর্ডারের এই তিন ব্যাটার মিলেই ভারতীয় ইনিংসের সিংহভাগ রান করলেন।

ফারজানা ৪০ বলে ৩০ রানের ইনিংস খেলেন
ছবি: শামসুল হক

ভারত তাদের নিয়মিত অধিনায়ক হারমানপ্রীত কৌরকে বিশ্রাম দেয়, অধিনায়কত্ব করেন স্মৃতি। উদ্বোধনে নেমে ব্যাটিংয়েও সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন তিনি। শেফালিকে নিয়ে ব্যাটিং পাওয়ার–প্লেতেই তোলেন ৫৯ রান।

এ সময় ভারত বাউন্ডারিই মেরেছে ৯টি। এবারের এশিয়া কাপে এটিই কোনো দলের সবচেয়ে সফল পাওয়ার–প্লে।

দুই ভারতীয় ব্যাটারের দাপট অব্যাহত থাকে ১২তম ওভার পর্যন্ত। দারুণ বোঝাপড়ায় এগোতে থাকা উদ্বোধনী জুটিতে হঠাৎই ছন্দপতন।

আর তাতেই রান আউট দারুণ খেলতে থাকা স্মৃতি মান্ধানা। ৩৮ বল খেলে ৬টি চারে ৪৭ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলে আউট হন তিনি।

বাংলাদেশ দলের দুই লেগ স্পিনার ফাহিমা খাতুন ও রুমানা আহমেদ ভারতকে চেপে ধরেন তখনই। এক প্রান্ত থেকে ফাহিমার আঁটসাঁট বোলিং, আরেক প্রান্ত থেকে রুমানার আক্রমণ—দুইয়ের মিশেলে ভারতের রানের গতি কমে আসে।

উইকেটও হারায় তারা। রুমানা তো রিচা ঘোষ আর কিরন প্রভুকে ১৭তম ওভারের শেষ দুই বলে আউট করে হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা জাগান। কিন্তু পরের ওভারের প্রথম বলে জেমাইমার রিটার্ন ক্যাচ ফেলে হ্যাটট্রিকের সুযোগ হাতছাড়া করেন রুমানা।

জেমাইমাও সুযোগ পেয়ে ইনিংসের শেষ দুই ওভারে ভারতের রানটাকে নিয়ে যান দেড় শর ওপারে। ২৪ বলে ৩৫ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে জেমাইমা ছিলেন অপরাজিত।

আরও পড়ুন

৩ ওভারে ২৭ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেওয়া রুমানা ছিলেন বাংলাদেশের সেরা বোলার। সালমা খাতুন শেষে এসে ১টি উইকেট নিয়েছেন। তবে কোনো উইকেট না পেলেও ৪ ওভারে ২১ রান দেওয়া ফাহিমা ভারতীয়দের চাপে রাখতে পেরেছেন।