মঈনের ভয় ছিল, দাড়ি রাখলে তাঁকে উগ্রবাদী ভাবা হবে
কাশ্মীরের মিরপুর থেকে ইংল্যান্ডে পাড়ি জমান মঈন আলীর দাদা। ইসলাম ধর্মবিশ্বাসে বেড়ে ওঠা এ ক্রিকেটারের দাড়ি তাঁকে আলাদাভাবে পরিচিত করেছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে।
উস্টারশায়ারের হয়ে খেলার সময় মঈন ‘দ্য বিয়ার্ড দ্যাটস ফিয়ার্ড’ নামে আলাদা পরিচিতিই পেয়েছিলেন। অথচ দাড়ি নিয়েই মঈন একসময় শঙ্কায় ছিলেন। ভেবেছিলেন, দাড়ি রাখলে তাঁকে উগ্রবাদী হিসেবে চিহ্নিত করা হবে।
ইংল্যান্ডের এ সহ-অধিনায়ক ও তারকা অলরাউন্ডার জানিয়েছেন, দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক ওপেনার হাশিম আমলাকে দেখে ক্যারিয়ারের শুরুতে তিনি দাড়ি রাখার সিদ্ধান্ত নেন। স্কাই স্পোর্টসকে ৩৬ বছর বয়সী মঈন বলেছেন, ‘মোহাম্মদ আলী আমার জন্য বিশাল অনুপ্রেরণা ছিলেন। কারণ, যেভাবে তিনি বেড়ে উঠেছিলেন এবং একজন মুসলিম ছিলেন। দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেটার হাশিম আমলারও বড় দাড়ি ছিল। তিনি রাখতে পারলে, আমি কেন পারব না? আমি এটাই (দাড়ি রাখা) করতে চেয়েছিলাম, তবে একটু ভয়ও ছিল। তখন বয়সে তরুণ ছিলাম। আমি চাইনি লোকে, এমনকি আমার পরিবারও আমাকে উগ্রবাদী ভেবে নিক। সে সময় লোকে বলাবলি করত—মুসলিম মানেই উগ্রবাদী।’
বিশ্বকাপে বাংলাদেশের বিপক্ষে ইংল্যান্ডের সর্বশেষ ম্যাচে খেলেননি মঈন আলী। ২০১৪ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তাঁর অভিষেক। জন্মসূত্রে মঈন পাকিস্তানি ও ইংরেজ বংশোদ্ভূত। তাঁর দাদি বেটি বক্স একজন শ্বেতাঙ্গ ব্রিটিশ। মঈন জানিয়েছেন, বেটি কক্সের কারণেই তাঁকে মিশ্র বর্ণের হিসেবে মনে করা হয়, ‘ইংল্যান্ডের প্রতি আলাদা টান অনুভব করি। মায়ের কারণে পাকিস্তানের প্রতিও একই অনুভূতি হয়। সেখানে ফিরতে ভালো লাগে।’
তাহলে মঈন কতটা ইংলিশ হয়ে উঠতে পেরেছেন? যেহেতু ৯ বছর ধরে একটি খেলায় দেশটির প্রতিনিধিত্ব করছেন এবং নিজেকে তারকা হিসেবেও প্রতিষ্ঠিত করেছেন। মঈনের উত্তর, ‘ভালো প্রশ্ন। আমি সব সময়ই ইংল্যান্ডের হয়ে খেলতে চেয়েছি।’
কখনো পাকিস্তানের হয়ে খেলার ইচ্ছা হয়নি—এ প্রশ্নও করা হয়েছিল মঈনকে। উত্তরে বলেছেন, ‘ছোটবেলায় পাকিস্তানকে যে সমর্থন করেছি, সেটা বলব না। তবে পাকিস্তান দলের ওপর চোখ রাখতে হতো, কারণ পরিবার তা করত। কিন্তু আমি ভেতর থেকেই বুঝতাম, ইংল্যান্ডের সমর্থন করি এবং দলটা ভালো করুক, সেটাই সব সময় চেয়েছি। সেটা ইংল্যান্ডের হয়ে খেলতে চাওয়ার ইচ্ছার কারণে কি না, তা জানি না।’
দিল্লিতে রোববার আফগানিস্তানের মুখোমুখি হবে ইংল্যান্ড।