গিলের ২০৮ ছাপিয়ে যেতে পারল না ব্রেসওয়েলের ১৪০
মাইকেল ব্রেসওয়েল চার বা ছয় মারেন, টেলিভিশন ক্যামেরা নিয়ে যায় শুবমান গিলের দিকে। ২০৮ রানের ইনিংস খেলেও যে গিল তখন পরাজিতদের দলে থাকার শঙ্কাই! ৩৪৯ রানের লক্ষ্যে ১৩১ রানেই ষষ্ঠ উইকেট হারিয়েছিল নিউজিল্যান্ড। ব্রেসওয়েল সেখান থেকে খেললেন ৭৮ বলে ১৪০ রানের ইনিংস, মিচেল স্যান্টনারকে নিয়ে সপ্তম উইকেটে যোগ করলেন ১০২ বলে ১৬২ রানের জুটি। তবে শেষ পর্যন্ত পার করাতে পারলেন না। হায়দরাবাদে নিউজিল্যান্ড হারল ১২ রানে।
মোহাম্মদ সিরাজ, কুলদীপ যাদব ও মোহাম্মদ শামিদের তোপে নিউজিল্যান্ড খেই হারিয়েছিল ৩০ ওভারের আগেই। কদিন আগেই শ্রীলঙ্কাকে গুঁড়িয়ে দেওয়া ভারত ছিল আরেকটি বড় জয়ের পথেই। তবে বাধা হয়ে দাঁড়ালেন সাতে নামা ব্রেসওয়েল। ৩১ বলে পূর্ণ করলেন ফিফটি, সেঞ্চুরি পেয়ে গেলেন ৫৭ বলেই। দারুণ সঙ্গ দিলেন স্যান্টনারও, তাঁর ৪৫ বলে ৫৭ রানের ইনিংসে।
৪৬তম ওভারে এসে স্যান্টনারকে ফিরিয়ে সে জুটি ভাঙেন মোহাম্মদ সিরাজ, পরের বলে ফেরেন হেনরি শিপলিও। ব্রেসওয়েল তখন অথৈ সমুদ্রে একলা নাবিকই! তবে ক্রিজে তাঁর উপস্থিতি ভারতের অস্বস্তি বাড়াচ্ছিলই শুধু। শেষ ওভারে প্রয়োজন ছিল ২০ রান, শার্দূল ঠাকুরের প্রথম বলেই ইনিংসে নিজের দশম ছক্কাটি মারলেন ব্রেসওয়েল। পরের বলে ওয়াইডে নিউজিল্যান্ডের আশা বাড়ে আরও। তবে শার্দূল ওভারের দ্বিতীয় বৈধ ডেলিভারিটি করেন ইয়র্কার, সেটি মিস করে এলবিডব্লু হন ব্রেসওয়েল। রিভিউ নিয়েছিলেন, তবে রিপ্লে দেখার পরই স্পষ্ট হয়ে যায় সব।
অথচ দিনটি হতে পারত শুধু গিলেরই। পঞ্চম ভারতীয় ও ওয়ানডেতে সর্বকনিষ্ঠ ব্যাটসম্যান হিসেবে ওয়ানডেতে ডাবল সেঞ্চুরি করেন তিনি। ওপেনিংয়ে নামা গিলের ফিফটি করতে লেগেছিল ৫২ বল, এরপর সেঞ্চুরিতে যান মাত্র ৮৭ বলেই। ৪৩তম ওভারের চতুর্থ বলে ব্রেসওয়েলকে ছক্কা মেরে ১৫০ পূর্ণ করেন তিনি। অন্য প্রান্তে ওয়াশিংটন সুন্দরের পর শার্দূল ঠাকুরও ফিরে যান, ৪৭তম ওভার পর্যন্ত আর কোনো বাউন্ডারিই পাননি গিল। ইনিংসের ৩ ওভার বাকি থাকতেও ডাবল সেঞ্চুরি থেকে ৩১ রান দূরে দাঁড়িয়ে ছিলেন।
সে ওভারে ব্লেয়ার টিকনারকে ৩ বলের মধ্যে ২ ছক্কা মেরে ডাবল সেঞ্চুরি নিয়ে আসেন নাগালের মধ্যে। ৪৯তম ওভারে ফার্গুসনকে মারা ছক্কার হ্যাটট্রিকে ডাবল সেঞ্চুরি পূর্ণ হয় ১৪৫ বলে। পরের ওভারে শিপলিকে আরেকটি ছক্কা মেরেছিলেন, যদিও আউট হন পরের বলেই। ইনিংসে গিল সব মিলিয়ে মেরেছেন ৯টি ছক্কা, সঙ্গে ছিল ১৯টি চার।
গিল ডাবল সেঞ্চুরি করলেও আজ আর কোনো ভারত ব্যাটসম্যান ফিফটিও করতে পারেননি। এর আগে ডাবল সেঞ্চুরি ইনিংসগুলোর মধ্যে এমন হয়েছিল শুধু মার্টিন গাপটিলের ক্ষেত্রে, সেবার দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৪২ রান করেছিলেন রস টেলর। আজ গিলের পর ভারতের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩৪ রান করেছেন অধিনায়ক রোহিত শর্মা। সব মিলিয়ে গিল আজ একাই করেছেন ভারতের ৫৯.৭৭ শতাংশ রান। ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের মধ্যে যেটি তৃতীয় সর্বোচ্চ। গিল অংশ ছিলেন তিনটি ফিফটি জুটির—রোহিত, সূর্যকুমার যাদব ও হার্দিক পান্ডিয়ার সঙ্গে।
এর মধ্যে পান্ডিয়ার আউটটি অবশ্য তৈরি করে বিতর্ক। টেলিভিশন আম্পায়ার বোল্ড দেন তাঁকে, তবে রিপ্লেতে বল ও স্টাম্পের বেলসের মধ্যে দূরত্বই দেখা যাচ্ছিল।