লিটনের সঙ্গে গুরবাজের ‘শত্রুতা’ ফিরে এলো আবার
লিটন দাসের সঙ্গে কী শত্রুতা রহমানউল্লাহ গুরবাজের!
প্রশ্ন করতেই পারেন, মাঠে তো তাঁরা ‘শত্রুই’। কিন্তু মাঠের প্রতিদ্বন্দ্বিতাই তো সবকিছু নয়। সর্বশেষ আইপিএলের কথাই ধরা যাক, বাংলাদেশের লিটন ও আফগানিস্তানের গুরবাজ ছিলেন একই দলে। তবে কলকাতা নাইট রাইডার্সের একাদশে সুযোগ পাওয়া না পাওয়ায় লড়াইয়ে লিটনের প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন আফগান ওপেনার গুরবাজই। ২০২৩ আইপিএল থেকে মাত্র একটি ম্যাচ খেলেই যে লিটনকে বাংলাদেশে ফিরতে হয়েছিল, সেটির আসল কারণও ওই গুরবাজ।
সেই গুরবাজ আবারও লিটনের মাথাব্যথার কারণ হলেন। তামিম-নাটক আফগানিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে হঠাৎই বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়ক বানিয়ে দিয়েছে লিটনকে। আর দায়িত্ব নিয়েই লিটন প্রথম ম্যাচে গুরবাজকে সেঞ্চুরি করতে দেখলেন।
আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করেই ১০০ বলে সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন আফগান ওপেনার। সেঞ্চুরি ছোঁয়ার আগেই মেরেছেন ৬টি ছক্কা। ২০২১ সাল প্রথম আফগান ব্যাটসম্যান হিসেবে ওয়ানডে অভিষেকে সেঞ্চুরি করা গুরবাজের এটি এই সংস্করণে চতুর্থ সেঞ্চুরি। ওয়ানডেতে আফগানিস্তান ব্যাটসম্যানদের মধ্যে তাঁর চেয়ে বেশি সেঞ্চুরি আছে শুধু মোহাম্মদ শেহজাদ (৬টি) ও রহমত শাহর (৫)। তবে শেহজাদ ৮৪ ম্যাচে ও রহমত ৯৩ ম্যাচে করেছেন ওই সেঞ্চুরিগুলো। আর গুরবাজ ২০ ম্যাচেই পেয়ে গেলেন চতুর্থ সেঞ্চুরি।
ওয়ানডেতে বাংলাদেশের বিপক্ষে গুরবাজের এটি দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। আফগানিস্তানের অন্য কোনো ব্যাটসম্যানের ওয়ানডেতে বাংলাদেশের বিপক্ষে সেঞ্চুরি নেই। ২০২২ সালে ফেব্রুয়ারিতে এই চট্টগ্রামেই বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রথম সেঞ্চুরিটা করেছিলেন ২১ বছর বয়সী গুরবাজ। সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচেই ৭ রান করা গুরবাজ শেষ ম্যাচে ১১০ বল খেলে ১০৬ রানে অপরাজিত ছিলেন। গুরবাজ আজ শেষ পর্যন্ত আউট হয়েছেন ১২৫ বলে ১৪৫ রান করে। মেরেছেন ৮টি ছক্কা।
২০১৯ সালে বাংলাদেশে ত্রিদেশীয় টি-টোয়েন্টি সিরিজেই প্রথম আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে স্বাদ নিয়েছেন এই আফগান ওপেনার। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ২৪ বলে ৪৩ রান করেন অভিষেকে। মিরপুরে পরের ম্যাচে বাংলাদেশের বিপক্ষে গোল্ডেন ডাক পাওয়া ব্যাটসম্যান চট্টগ্রামে তৃতীয় ম্যাচে আফগানিস্তানের বিপক্ষে পেয়ে যান আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের প্রথম ফিফটি (৪৭ বলে ৬১)।
সেই গুরবাজ আজ ইব্রাহিম জাদরানকে সঙ্গী করে বাংলাদেশ দলকে প্রায় ভুলতে বসা এক স্বাদ দিয়েছেন। স্বাদ না বলে বিস্বাদ বলাই ভালো। ২০১৯ বিশ্বকাপের পর আজই প্রথম ওয়ানডেতে বাংলাদেশের বিপক্ষে উদ্বোধনী সেঞ্চুরি হলো। আর বাংলাদেশের মাটিতে বাংলাদেশের বিপক্ষে উদ্বোধনী জুটিতে সেঞ্চুরি এসেছে ১১ বছর পর। আজকের আগে ২০১২ সালের মার্চে এশিয়া কাপে পাকিস্তানের মোহাম্মদ হাফিজ ও নাসির জামশেদ যোগ করেছিলেন ১৩৫ রান।
বাংলাদেশের বিপক্ষে উদ্বোধনী জুটির রেকর্ডটা ২৮২ রান, ২০১৭ সালে কিম্বার্লিতে দক্ষিণ আফ্রিকার হাশিম আমলা ও কুইন্টন ডি কক গড়েছিলেন সেই কীর্তি।
গুরবাজরা সেই কীর্তি ছাপিয়ে যেতে পারেননি। তবে বাংলাদেশের বিপক্ষে বাংলাদেশে বিরুদ্ধে উদ্বোধনী জুটির রেকর্ডটা কিন্তু হয়ে গেছে। ২০১০ সালে মিরপুরে ২১৫ রান যোগ করেছিলেন শ্রীলঙ্কার সনাৎ জয়াসুরিয়া ও কুমার সাঙ্গাকারা।