পাঁজরের চোটে ব্র্যান্ডন কিং ছিটকে না গেলে এই ম্যাচে হয়তো খেলাই হতো না শাই হোপের। সেই হোপ ঘরের মাঠ বার্বাডোজে সুযোগের সদ্ব্যবহার কী দারুণভাবেই না করলেন! ওপেনিংয়ে নেমে একাই মারলেন ৮ ছক্কা। ৩ ছক্কা মেরে তাতে যোগ দিলেন নিকোলাস পুরান।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দুই স্বাগতিকের লড়াইয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের এমন ছক্কা-বৃষ্টিতেই উড়ে গেল যুক্তরাষ্ট্র। কেনসিংটন ওভালে আজ টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে ১২৮ রানে অলআউট হয় যুক্তরাষ্ট্র। ওয়েস্ট ইন্ডিজ মাত্র ১ উইকেট হারিয়ে ৫৫ বল হাতে রেখেই লক্ষ্য টপকে গেল।
এ জয়ে সেমিফাইনালে ওঠার দৌড়ে ভালোভাবেই টিকে রইল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। আর টানা দুই হারে যুক্তরাষ্ট্রের বিদায় প্রায় নিশ্চিত হয়ে গেল।
হোপ ৩৯ বলে ৮২ রানের বিস্ফোরক ইনিংস খেলেছেন। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে এটি তাঁর ক্যারিয়ারসেরা। তবে ম্যাচসেরা হয়েছেন বার্বাডোজের আরেক সন্তান রোস্টন চেজ। এই অফ স্পিন অলরাউন্ডার করেছেন ক্যারিয়ারসেরা বোলিং। ১৯ রানে ৩ উইকেট নিয়ে তিনিই যুক্তরাষ্ট্রের সংগ্রহকে বড় হতে দেননি।
সেন্ট লুসিয়ায় গত বৃহস্পতিবার ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১৮০ রান করেও বাজেভাবে হেরে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। জস বাটলারের দল রান তাড়া করে ৮ উইকেট আর ১৫ বল বাকি রেখে। ওই হারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের নেট রানরেটেও নেতিবাচক প্রভাব পড়েছিল।
যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে আজ তাই আগের ম্যাচের ক্ষতিই যেন পুষিয়ে দিতে নেমেছিল ক্যারিবীয়রা। হোপ-পুরানের ব্যাটিং–তাণ্ডব সেটা পুষিয়ে তো দিয়েছেই; সঙ্গে সুপার এইটের গ্রুপ ২-এ নেট রানরেটেও সবাইকে ছাড়িয়ে গেছে। এই গ্রুপে টানা দুই জয়ে ৪ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে দক্ষিণ আফ্রিকা। সমান ২ পয়েন্ট করে হলেও নেট রানরেটে ইংল্যান্ডকে পেছনে ফেলে দুইয়ে উঠে এসেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
রান তাড়ায় আজ জনসন চার্লসকে নিয়ে পাওয়ারপ্লেতে ৫৮ রান এনে দেন হোপ। সপ্তম ওভারের শেষ বলে চার্লস ব্যক্তিগত ১৫ রানে আউট হলেও এরপর যুক্তরাষ্ট্রের বোলারদের ওপর দিয়ে ‘মহাপ্রলয়’ বইয়ে দিয়েছেন হোপ ও পুরান। ৮ ওভার শেষে ওয়েস্ট ইন্ডিজের রান ছিল ১ উইকেট ৭৫। জয়ের জন্য দরকার ৭২ বলে ৪৯। হোপ-পুরান এখান থেকে বাকি কাজ সেরেছেন মাত্র ১৭ বলেই।
এর আগে টস হেরে আগে ব্যাটিংয়ে নামা যুক্তরাষ্ট্র শুরুতে স্টিফেন টেলরকে হারালেও আন্দ্রিস গুস ও নীতীশ কুমারের দারুণ ব্যাটিংয়ে পাওয়ারপ্লেতে তোলে ৪৮ রান। কিন্তু সপ্তম ওভারে এ জুটি ভাঙতেই মার্কিনদের ইনিংসে মড়ক লাগে। সব ব্যাটসম্যান যেন আসা-যাওয়ার মিছিলে যোগ দেন। শেষ পর্যন্ত ১২৮ রান করতে পারলেও ওয়েস্ট ইন্ডিজকে থামানোর জন্য তা মোটেও যথেষ্ট ছিল না।
ছক্কা মারা ওয়েস্ট ইন্ডিজের নেশা—তা সবার জানা। এ ম্যাচ সেটাই নতুন করে মনে করিয়ে দিল। চারের (৭টি) চেয়ে ক্যারিবিয়ানদের ছক্কার (১১টি) সংখ্যাই বেশি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
যুক্তরাষ্ট্র: ১৯.৫ ওভারে ১২৮ অলআউট
(গুস ২৯, নীতীশ ২০, মিলিন্দ ১৯, শালকভিক ১৮; চেজ ৩/১৯, রাসেল ৩/৩১, জোসেফ ২/৩১, মোতি ১/১৪)।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ১০.৫ ওভারে ১৩০/১
(হোপ ৮২*, পুরান ২৭*, চার্লস ১৫; হারমিত ১/১৮)
ফল: ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৯ উইকেটে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: রোস্টন চেজ (ওয়েস্ট ইন্ডিজ)।